আমি এক যুদ্ধ শিশু,
জন্ম আমার সেই তখন, ছিল না যখন যীশু,
জিউস, কিংবা অন্য কোনও অবতার,
তখন আমি রংধনুর মত এক নিস্পাপ শিশু, মানবতার!
আমার মন তখন সাদা কাগজ একখানা,
যেন এক বীজ, যেন শিশুর হাতের নতুন স্লেটখানা,
আমি যুদ্ধ দেখিনি,
রক্তের বন্যায় আমি সাঁতার কাটিনি।
আমি তখন নিশ্চিন্তে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম আমার মায়ের পেটে,
মা তখন গোলাবারুদের গন্ধ নিয়ে যাচ্ছিলেন উদ্বাস্তুর মত হেঁটে,
দিন আর রাত ছিল চুম্বনরত প্রেমিক প্রেমিকার মত মিলেমিশে একাকার,
আবর্জনার মত লাশের পচা গন্ধ, কান্না আর গগনবিদারী হাহাকার!
মা আমায় নিয়ে ভেবে ভেবে পাগলের মত অস্থির যখন,
আমি নির্বিকার, ফুলের মত নিষ্কলঙ্ক, শান্তিতে মায়ের গর্ভে তখন,
মাঝে মাঝে আমি লাথি মেরে নজরুলের মত বিদ্রোহী হলাম বারবার,
আমার বিদ্রোহের ধ্বনিতে হয়নি কোনও অন্যায়, অবিচারের প্রাসাদ চুরমার!
সদ্য উড়তে শেখা পাখীর মত আমি আলোয় স্নান করতে ছিলাম অস্থির,
অন্যদিকে আমার মা বলছিলেন বারবার, “হে মালিক পৃথিবীর!
আষাঢ়ে মেঘের মত কালো অন্ধকার কেটে গেলে, নরকের আগুন স্তিমিত হলে,
আসে যেন সে নব প্রভাত হয়ে, নব জীবনের মশাল জ্বেলে!”