'গল্পিতা' কোনও সুন্দরী ললনার নাম নয়,
গল্পিতা হচ্ছে আমার সৃষ্টিশীলতার অপর নাম,
যেথায় দুটি গ্যালাক্সির মতন মিলেমিশে এক হয়,
গদ্য এবং কবিতা [গল্প + কবিতা], গল্পিতা কুড়ায় তার সুনাম!
পাঠকগণ হয়তো প্রশ্ন তুলতে পারেন,
তাইতো লেখক হিসেবে দায়িত্ব করছি পালন,
গল্পিতা সৃষ্টির পেছনের কারণ জানেন?
জানাবো কাব্যিক এবং গাদ্যিক ভাষায় বিলক্ষণ!
প্রথম কবিতা লিখতে বসি যখন,
তখনই মনের দরজায় একটি ধারণা আসে,
যেন ফুলের উপর নান্দনিক প্রজাপতি করছে চুম্বন,
মন হাসে দশপদী ও বিশপদী কবিতার ধারা সৃষ্টির উল্লাসে!
ভেবেছি কবিতায় নিজস্ব ধারার নির্মাণ হয়েছে যখন,
ছোটগল্পেও কেন নয়? যেমন ভাবনা তেমন কাজ,
ছোটগল্পের স্বীকৃত ধারার পাশাপাশি করেছি সৃজন,
গল্পিতা নামক নতুন এবং চমৎকার একটি ধারা আজ!
আমি জানি ছিদ্রান্বেষীরা হয়তো খুঁত বের করবে,
কিন্তু আমার মন ফড়িঙের মত নাচে,
সেইসব অগুনতি পাঠকের কথা ভেবে,
যাদের মন আকাশের মত, তাদের হৃদয়ে রব না হয় বেঁচে!
গল্পিতা হচ্ছে সেই গল্প,
যার শুরুটা হবে পঙক্তি দিয়ে,
ব্যাপ্তি নয় বেশী, নয় অল্প,
কবিতার স্রোত মিশবে গদ্যে গিয়ে!
লেখকের অনেক দায়িত্বের মধ্যে একটি গুরুদায়িত্ব হচ্ছে লেখা; কিন্তু আমি মনে করি লেখার পাশাপাশি লেখককে নতুন কিছুর সৃষ্টিও করতে হবে। তা না হলে তার সৃষ্টিশীলতায় কিছুটা ঘাটতি থেকে যাবে। সেই নতুনত্ব আসতে পারে নতুন শব্দ তৈরির, বর্ণনার স্বকীয়তার, কিংবা সম্পূর্ণ নতুন কোনও ধারার মাধ্যমে।
লেখকের জীবিতাবস্থায় কিংবা মৃত্যুর পর, একজন পাঠক যদি তার লেখা একটি বই পড়ে মন্তব্য করেন যে এমন বই এর আগে কখনও পড়িনি, সেখানেই লেখকের সার্থকতা। মানুষ প্রাকৃতিকভাবেই নতুনত্বের পূজারী। সাহিত্যে সেইসব লেখকেরাই নব যুগের সূচনা করেন যারা তাদের লেখায় কোথাও না কোথাও নিজস্বতার স্বাক্ষর রাখেন।
সাহিত্য নামক সমুদ্রের মাঝখানে আমার ‘গল্পিতা’ একটি ছোট্ট নৌকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে ঠিকই তবে আমি মনেপ্রাণে চাইব যেন আমার এই প্রচেষ্টা সকলের ভালোবাসা কুড়ায়। আমার আনন্দের কোনও সীমা থাকবে না যদি অন্য কোনও লেখক আমার গল্পিতার আদলে গল্প লিখেন।
পাঠকগণ নিশ্চয়ই উপরোক্ত পদ্য হতে গল্পিতা সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা পেয়ে গেছেন। এখন শুধুই অকুতোভয় যোদ্ধার মত সামনে এগিয়ে চলা। আমার এ যুদ্ধের হাতিয়ার অবশ্য কোনও বন্দুক বা বোমা নয়, কলম!
তারপর তিনি আমাকে বুদ্ধিজীবীর মতন প্রশ্ন করেন,
এই পর্যন্ত এসে লেখক গল্পিতা সৃষ্টির আদ্যোপান্ত এবং লেখালেখি সম্পর্কে তার স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করে ছোট্ট গল্পিতাটির ইতি টানলেন...
তারপর তিনি আমাকে বুদ্ধিজীবীর মতন প্রশ্ন করেন,
- আপনি কি আমার কথা কিছু বুঝতে পেরেছেন?
- জি, অবশ্যই বুঝতে পেরেছি।
- তা কি বুঝেছেন অনুগ্রহ করে এক বাক্যে বলেনতো শুনি!
- বুঝলাম যে আপনি একজন ‘জিনিয়াস’!
তাঁকে ‘জিনিয়াস’ বলে সম্বোধন করেছি বলে লেখক আমার দিকে তাকিয়ে ভিঞ্চির মোনালিসার মতন একপ্রকার রহস্যময় মুচকি হাসি দিলেন! আমি শিশুর মত অবাক দৃষ্টিতে এই মহান লেখকের পানে মন্ত্রমুগ্ধের মতন চেয়ে রই!