আমার না উড়তে ভাল লাগে! উড়া মানে ঠিক পাখির মত উড়া তা নয়। অ্যারোপ্লেনে ভ্রমন বলতে পারেন। আমি সেই উড়ার কথাই বলছি। জীবনে প্রথমবার উড়েছিলাম ১৯৮৮ সালের ৬ই জানুয়ারী তে আম্মুর সাথে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে। তখন তো এসব কিছু বুঝতাম না। সেই দিনটাও ৬ই জানুয়ারী ছিল। আবার ২০১২ সালের ৬ই জানুয়ারীতেই আমার নানু মারা গেলেন। কি অদ্ভুত একটা Co-incidence তাই না? কত কিছুই তো হয় জীবনে। সৌদি থেকে ফেরত আসলাম পরের বছরই ১৭ই নভেম্বর। দ্বিতীয় প্লেন-সফর। সেটাও মনে নেই। এতো বেশী চকলেট খেয়েছিলাম যা এয়ারপোর্টে যাবার আগে বমি করে একাকার। বিজয় আঙ্কেল বলে একজন আঙ্কেল ছিলেন। আমরা বলতাম বিজু-আঙ্কেল। আমাকে অনেক আদর করতেন। যখনই বাসায় আসতেন এক গাদা, পলিথিন ব্যাগ ভরে আমার জন্য চকলেট আনতেন। বাংলাদেশে আসার আগেও যথারীতি আনলেন। খেতে খেতে আমার অবস্থা খারাপ! আমাদের সাথে আমার খালাতো বোনও বাংলাদেশে এসেছিল। ও দেশে আসতো ঐ সময়ে ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার জন্য। সেবার এলো আমাদের সাথে। আমার চেয়ে চার বছরের বড়।
খালাতো বোন আমাকে এয়ারপোর্টে কিছু অদ্ভুত জিনিস দেখালো। মাস ছয়েক আগে ও মনে হয় বাংলাদেশে গিয়েছিল। হ্যাঁ গিয়েছিলই। এবার মনে মনে পড়েছে। কারণ ওরা যখন বাংলাদেশে এল, তখন কেঁদে কেটে মাখিয়ে ফেলেছিলাম। কারণ আমি কেন ওদের সাথে বেড়াতে যেতে পারছি না সেজন্য। যা হোক, সেই ছয় মাস আগের সফরে আমার সেই কাজিন আপা, টবে রাখা কয়েকটা গাছের পাতায় নখ দিয়ে দাগ দিয়ে রেখেছিল। আমাকে বললো, আসো তো দেখি সেই গাছগুলাই তো। নখের দাগগুলা আছে কিনা! আমরা খুজলাম এবং পেয়েও গেলাম ওর নখের আঁচড় দেয়া কতগুলো পাতা। নখের দাগের জায়গাটা কালো কালো হয়ে আছে। ও ওর আগের সেই পুরনো স্মৃতি মনে করে করে গল্প করতে লাগলো। আমি কিছু বুঝলাম কিছু বুঝলাম না। কিন্তু নখের দাগওয়ালা সেই পাতাগুলার কথা ভুলতে পারিনি। তাইতো ওরা আজ প্রায় ৩১ বছর পরে আমার স্মৃতি থেকে উঠে আসলো। প্লেনে উড়া নিয়ে আরো কিছু স্মৃতি আছে। সেগুলো না হয় পরের মাসে বলি!