সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম অনেকের কাছে এত বেশী গুরুত্বপূর্ণ যে তার কাছে আসল সামাজিকতা নিতান্তই তুচ্ছ নগন্য আর গৌণ। অনেকের কাছে এইসব সামাজিন যোগাযোগ মাধ্যম, যার মধ্যে facebook উল্লেখযোগ্য এতটাই বেশী গুরুত্ব রাখে যার কাছে সমাজ, ধর্ম বা রাস্ট্রের অনেক কিছুই খেলো হয়ে যায়। এখানে কেউ কেউ অন্যের সন্মান ভুলুন্ঠিত করতে দ্বিধাবোধ করে না আবার কেউ কেউ পায়ের জুতা মাথায় তুলতেও দ্বিধাবোধ করে না। এইসব মেকী জিনিসের মোহে পড়ে আমরা মনে হয় অনেক সময় অনেক আসল জিনিস থেকে পিছিয়ে পড়ছি। যে সব জিনিস আমাদের থেকে দূরীভূত হয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে নৈতিকতা অন্যতম। এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে আমিও বিস্তর লেখালিখি করি। আমার কথা হল, যদি আমি এমন কিছু না লিখি যা সমাজ, দেশ এবং ধর্মদ্রোহিতা হয়, তবে সেই নির্দোষ লেখা প্রকাশ করতে আমার কোন দ্বিধা নেই। সত্যি কথা অকপটে বলতে পারার যে সাহসিকতা লাগে সেটা আমাদের অনেকের ভেতরেই যোগ্যমাত্রায় অনুপস্থিত। আমি লিখি। যা আমি দেখি বা বুঝি সেটাই লিখি। এই লেখালিখির জন্য আমাকেই আমার পিতার সংসারে থাকাকালীন বলা হয়েছিল, ‘এসব লেখা লিখি বন্ধ করো। লিখলে ফেসবুকে দিও না। অন্যদের খারাপ লাগে’। কিছু কিছু সত্য কথা বললে অন্যদের খারাপ লাগবে এটাই স্বাভাবিক। আমাকে এজন্য আমার পিতার সংসার থেকেই লেখা বন্ধ করা, ওমুক লেখা মুছে ফেলা এসবের জন্য বলা হয়েছিল। আমি শুনিনি। বরং আমি আমার পিতাকে বলেছিলাম, ‘অসির চেয়ে মসি ধারালো, কথাটা তোমার কাছ থেকেই শুনেছিলাম’।
মানুষের নানামুখী আচার আচরণ আর রূপ দেখতে দেখতে আমরাও আমাদের পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছি, এবং হচ্ছিও প্রতিনিয়ত। পিতার গন্ডি থেকে বের হয়ে এসে এখন আমি একটা নিজের ঠিকানা খুঁজতে প্রয়াসী হচ্ছি। না হয়েও যে উপায় নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আর মানুষের যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন তার নিজের রাস্তা নিজেকেই করে নিতে হয়। বিচারের বাণী যেখানে নিভৃতে কাঁদে সেখানে কার কাছে বিচার দেব? আজকে আমার কথা এই পর্যন্তই। আজকে আমি আমার এই লেখার সাথে আমার স্ত্রীর একটা লেখাকে উল্লেখ করছি। নিচের লেখাটুকু সম্পূর্ণই তার লেখা। আমি শুধু হুবহু অনুলিপি তুলে দিচ্ছি। কারণ কথাগুলা আমার কথার সাথেও মিলে গেছে।
......
#খোলা_ডায়রী
-
নাঈমা আক্তার
সেই ২০০৭ সাল থেকে facebook নামক ভার্চুয়াল জগতের সাথে আছি। এর মাঝে আমি যেমন অনেককেই Add-Delete-Block করেছি তেমনি আমাকেও অনেকেই Add-Delete-Block করেছে। ভার্চুয়াল এই জগতে Add-Delete-Block করা যতটা সহজ বাস্তব জীবনে ঠিক ততটাই কঠিন। এই ভার্চুয়াল জগতের উপর ভিত্তি করেই অনেকেই অনেকের উপরে ভীষণ Judgmental হয়ে যায়। ২০০৯ সালের জুন মাসে আমার বিয়ের ঠিক এক কি দুই মাস পরেই আমার জনৈক এক আত্মীয়ের মাধ্যমে জানতে পারলাম, আমার So called Relative দের একজন, যে কিনা আমাকেও যেমন ছোটবেলা থেকে চিনে তেমনি আমার স্বামীকে চেনে বিয়ের পর থেকে, সে আমাদের ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেখে আমার আর আমার স্বামীর সম্পর্কের ব্যাপারে Judgmental হয়েছিল। এটা জানার সাথে সাথেই I just blocked him from facebook and the reason was, he was spreading negative vibes among the relatives regarding the conjugal life of a newly married couple. কিন্তু এখন আমি বুঝেছি, উনি আমাদের বিয়েটাকেই ভাল চোখে দেখেননি বরং অনেকটাই নেগেটিভ ভাবে নিয়েছিল। facebook একটা মিডিয়া, যার মাধ্যমে আমাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক সে খারাপভাবে উপস্থাপনা করার সুযোগ পেয়েছিল। এভাবে আমি আরো বার কয়েক, শুধুমাত্র ফেসবুকের লেখার উপর ভিত্তি করে, কতিপয় লোকের Judgment এর শিকার হয়েছি। এমনকি recently, ফেসবুকের লেখার উপর ভিত্তি করে, এটাকে অপব্যবহার করে আমাকে harass করা এমনকি নানাভাবে abuse ও করা হয়েছে। যদিও নির্দিষ্ট কাউকে উল্লেখ করে আমি ফেসবুকে কাউকে প্রত্যক্ষ কটাক্ষ বা harass করিনি।
আমি এখন খুব ভালভাবেই বুঝে গিয়েছি, যারা আসলেই তাদের ব্যক্তি জীবনে আমাকে অপছন্দ করে বা ঘৃণা করে, হংসা করে বা কোন কারণে আমাকে নিয়ে অযথা হীনমন্যতায় ভোগে, কেবল মাত্র তারাই ফেসবুকের মত ভার্চুয়াল জগতটাকে অপব্যবহার করে আমার বাস্তব সামাজিক জীবনটাকে নষ্ট করার জন্য। এটা করতে গিয়ে এহেন কাজ নেই যেটা তারা করেনি। Now I’m done and enough is enough! পারিবারিক এবং সামাজিক ভাবে নিজের অস্তিত্ত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য প্রত্যেক মানুষকেই অনেক সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু না কিছু করতে হয়। তাই আমিও আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেক কিছু করেছি এবং ভবিষ্যতে করতে হলে করবোও। But how about my soul? যাই করি না কেন, ভবিষ্যতে আমি এমন কোন কিছুই করবো না যা করলে আমার অন্তরাত্মা (রুহ) কষ্ট পাবে। আমি যদি ভাল থাকতে পারি তাহলে আমার নিষ্পাপ নাবালক বাচ্চাদুটাও ভালও থাকবে ইনশাআল্লাহ। So no more activities against my soul and no more so called ‘আত্মার উপরে কষ্ট নেয়া সামাজিকতা’।