দুপুরে খেতে বসে টেবিলে কচু পাতা ভর্তা নিয়ে আলাপ হচ্ছিলো। বেশ সুস্বাদু। আমাদের গ্রামের ভাষায় কচুটার নাম ‘দুধমান’ কচু। শুনলাম এই কচু নাকি কোন যত্ন ছাড়াই বেড়ে ওঠে। গোড়া মাটিতে থাকলেই হল। এই গাছ আমাদের গ্রামের প্রায় ঘরে ঘরেই দেখা যায়। গ্রামের থেকে যখন আনা হয় তখন আমরা অনেক মজা করে ভর্তা করে খাই। ঠিক তখনই আমার মাথায় আগাছার কথা এল। খেলাম একটা ভাল জিনিস অথচ মাথায় ঘুরতেছিল আগাছার কথা। আগাছা যেমন কোন যত্ন ছাড়াই হয়ে যায়, বেড়ে ওঠে, পা মাড়িয়ে দিলেও কিছু হয় না, এই কচু মনে হয় তেমনই। কচু হয়ে জন্মাবার কারণে অন্তত এটা খেতে পেরেছি। আগাছা হলে তো উপড়ে তুলে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় থাকতো না। মাঠে ঘাটে হাঁটার সময় কত কত আগাছা পায়ে মাড়িয়ে চলে যাই। কেউ তো ফিরেও দেখে না।
আগাছার কিন্তু সুন্দর সুন্দর ফুলও হয়। দেখতে সাময়িক ভালও লাগতে পারে। বাতাসে দোলে এদিক ওদিক। কিন্তু তারপরেও সেটা ঘাসফুলই থাকে। অনেক টাকা দিয়ে কেনা গোলাপের সাথে সেটার তুলনা কোন বিবেকবান মানুষ দেয় না। দেয়ার কোন দরকার হয় না। ঘরে সাজিয়ে রাখার জন্য দামি গোলাপ ব্যবহৃত হয়। অযত্নে অবহেলায় আর অন্ধকারে বেড়ে ওঠা ঘাসফুল নয়। যার যার অবস্থান সুচিহ্নিত। কখনও কখনো ফুলের তোড়ার বাড়তি সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য গোলাপের আসপাশে কিছু ঘাসফুলের ব্যবহার দেখেছি। কিন্তু সেই ফুলের তোড়া দেখে মানুষ গোলাপের সৌন্দর্যেই বিমোহিত হয়। গোলাপের পাপড়ি অনেকের বইয়ের পাতায় শোভা পায় দিনের পর দিন। আর ঘাসফুল কোথায় ছুড়ে ফেলে দেয় মানুষ, সেদিকে কেউ ফিরে দেখার প্রয়োজনও মনে করে না।