গতকাল লেখার সময় পাই নাই। আজ রাতে লিখতে বসলাম। গতকাল ঘুম থেকে উঠে নামাজ শেষ করে এসেই কোচিং এর উদ্দেশ্যে চলে যেতে হল। সকালে দুইটা ক্লাস আর বিকালে দুইটা ক্লাস। কোচিং থেকে আসার পরে আলু ভর্তা, পিয়াজের ভর্তা শুকনা মরিচ দিয়ে খিচুড়ি খেলাম। এরপর নাইমাকে নিয়ে টেইলরের দোকানে যেতে হল। ওখানে থেকে সরাসরি শ্বশুর বাড়ী গেলাম। গিয়ে দেখি দুপুরের খাবে এলাহী কারবার! সবগুলা আমার প্রিয় খাবার! কোনটা রেখে কোনটা খাই? বলেই ফেললাম, আজকে না আসলে আমার খুব লস হয়ে যেত। দুপুরের খাবারের তালিকায় ছিল- সামুদ্রিক মাছের ভর্তা, ধনে পাতা ভর্তা, শিম-আলু ভাজি, মাছের পেটা ভুনা, গরুর ভুড়ি ভুনা, লাউ চিংড়ি তরকারী, মুরগির তরকারী, গরুর কলিজা ভুনা! উফ! এত খাবার কি করে খায়! একটু একটু করে খেলাম। নাইমার ক্ষেত্রে একটা মজার জিনিশ খেয়াল করেছি। আমাদের বাসায় খেতে বসলে, এটা খাবা না, ওটা খাবা না- এমন করতেই থাকে! খাওয়াই মুশকিল হয়ে যায়। কিন্তু ওদের বাসায় গেলে কেমন অন্যরকম আচরণ করে। গতকাল নিজে থেকেই কিছু ভাত উঠায়ে দিল আমার প্লেটে। কিন্তু ও আমার খাওয়া দাওয়া নিয়ে খুব চিন্তিত থাকে সবসময়। আমার খাওয়া দাওয়া আসলেই কমানো দরকার। বাসায় আসার পরে শবগুজারীর সামান নিয়ে বের হয়ে গেলাম ২য় দফা কোচিং এর উদ্দেশ্যে। কোচিং এর পরে সরাসরি মার্কাজ মাসজিদে চলে যাই। বিকালে বয়ান আর শোনা হয়ে উঠলো না। যেতে যেতে বয়ান শেষ। বয়ান করলেন আব্দুল খালেক ভাই। এরপর মাগ্রিবের পরে বয়েন করলেন মাওলানা মাহবুব সাহেব। খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন। এই উম্মতের সবাইকে আল্লহ পাক ৩ টা জিনিস করা তৌফিক দিয়েছেন। যে কেউ এই তিন জিনিসের উপরে ইচ্ছামত বাড়িয়ে আমল করতে পারে। আর তা হল- নিয়্যত, ফিকির আর দোয়া। এশারনামাজের পর হায়াতুস সাহাবা পড়া হল। দীনের খাতিরে নবীজী আর উনার সাহাবা (রাঃ) গণ যেভাবে ক্ষুধা’র কষ্ট সহ্য করেছেন সেটার কিছু বর্ণনা ছিল। এরপর উপরে গিয়ে মুহিতদের সাথে দেখা পেলাম। তফায়েল। ফার্মিজ, ডাঃ রহমতুল্লাহ সিদ্দিকী ভাই ও ছিলেন। উনাদের সাথে রাতের খাবার খেয়ে সবাই চা খাওয়ার জন্য নিচে গেলাম। রাতে শুতে শুতে প্রায় ১২ টা বেজে গেল। নাইমার সাথে ফোনে দীর্ঘক্ষণ আলাপ হল। এর মধ্যে একবার ও রাগ করে ফোন রেখেও দিল!
রাতে আরিফ বললো যে, কাল সকালে ওদের বাসায় ওর আব্বা-আম্মা এর রুহের মাগফিরাত কামনা করে কোরান ক্ষতনের আয়োজন করেছে। দোয়া হবে। আমাকে যেতে বলল। সকালে বয়ানের কিছুক্ষণ পরে মুহিত আর আরিফ চলে গেল। ৭:৩০ দিকে হাফেজগণ চলে আসবেন। আমি বয়ান শেষ করে সরাসরি চলে গেলাম মুহিতদের বাসায়। গিয়ে দেখি হাফেজগণ কোরান খতম করছেন। মুহিত সালাদের জন্য শশা টমেটো কাটছিল। কাটতে গিয়ে আঙ্গুল এর চামড়াও কেটে ফেলল খানিকটা। সকালের নাস্তা করা হল ওদের বাসাতেই। এরপরে আবসায় চলে এসে দেখি শরীর আর চলেছে না। কাশিটা এখনও যায় নাই। কাশির সিরাপ খাওয়ার পরে এত ঘুম আসে যে, জেগে থাকা ভিষণ কষ্ট হয়ে যায়। কাউকে বলেও বুঝাতে পারি না। এরপর জুম্মার নামাজ পড়তে গেলাম। উমুমী ফাস্থের জন্য মাশওয়ারা হল। আসরের পরে আমার গাস্থের আমলে আমার উপরে এস্তেগবাল এর জিম্মাদারি ছিল। পরে জামাত ফেতর আসার পরে সেনপাড়া মাসজিদে চলে যাই। বিশেষ কোন কারণ ছিল না। মনে হচ্ছিল বয়ান ওদের কাছে গিয়ে শুনি। দেখি ওরা কি করে। কিন্তু গিয়েই ফেঁসে গেলাম। বয়ানের দায়িত্ব দেয়া হল আমার উপরে। SSC ছাত্ররা জমা হয়েছিল কয়েকজন। ওদের জন্য দোয়া হল। বয়ানের পরে ওদের জন্য তাশকিল হল। এরপর আমি নাইমাকে আনার জন্য বাইশটেকী যাই।
বাইশটেকী যাবার পরে দেখি নাইমা নাই। ফোন দিয়ে শুনলাম মরিয়ম ফুফু’র বাসায়। কিছুক্ষনের মধ্যে ফুয়াদ সহ নাইমা এসে হাজির। ফুয়াদ আর তাকিয়াকে physics পড়ালাম। আজকেই প্রথম দিন। আবার আগামী রবিবার পড়ানোর কথা আছে। এরপরে নাইমার কাছে বহুবার গল্পে শোনা চাপটি আর মুরগির লটপটি দিয়ে কুমড়া ভুনা খেলাম। নাইমার খুব প্রিয় খাবার। এরপর আমার শাশুড়ীর কাছ থেকে কিছু ওশুধ নিয়ে, নাইমা সহ বাসায় চলে আসলাম। একসাথে এশার নামাজ পড়লাম। আমার খাওয়া নিয়ে নাইমা অনেক অভিযোগ করলো। সত্যি আমার খাওয়া কমাতে হবে। নিজের ভালোর জন্যই কমাতে হবে। কাল কি কি করতে হবে এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। দেখা যাক।কাল আসুক আগে।