মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লহ পাক সর্বপ্রথম মানুষ হযরত আদম (আঃ) আর উনার ইস্ত্রী হজরত হাওয়া (রাঃ) কে দুনিয়াতে পাঠিয়ে মানুষের গোড়পত্তন শুরু করেন। এরপর উনাদের বংশধারা ক্রমান্বয়ে বিস্তার লাভ করতে থাকে। আদম (আঃ) এর নবম ধারার বংশধর হলেন হযরত নুহ (আঃ)। উনার ঊর্ধ্বক্রমিক বংশধারাক্রম হল-
নুহ [বিন] লামিক [বিন] মাতুশালেহ [বিন] ইদরিস [বিন] ইয়ারিদ [বিন] মালহালইল [বিন] কিনান [বিন] আনুশ [বিন] শিছ [বিন] আদম (আঃ)।
নুহ (আঃ) এর আমলে আল্লহ পাক মহাপ্লাবন দিয়ে পুরা পৃথিবী সয়লাব করে দিয়ে সমস্ত নফরমান কে ধ্বংস করে দিয়ে শুধুমাত্র বিশ্বাসীদের কে দুনিয়াতে জীবিত রাখেন। কতজন বিশ্বাসী তখন ছিলেন এ ব্যাপারে মতভেদ আছে। তবে মোটামুটি আশি জোড়া নরনারীকে আল্লহ পাক বাঁচিয়ে রাখেন। এদের মধ্যে নুহ (আঃ) এর তিন বিশ্বাসী সন্তান হাম, সাম এবং ইয়াফেস এবং তাদের স্বীয় স্ত্রীগণ ও ছিলেন। মহান আল্লহ পাক তাঁর ইচ্ছানুযায়ী, নুহ (আঃ) এর এই তিন সন্তানের বংশধর থেকে পরবর্তীতে সমগ্র দুনিয়াতে মানবজাতির ধারাকে আব্বার বিস্তার করে দেন। এ প্রসঙ্গে সূরা সফফাত এর ৭৭ নং আয়াতে আল্লহ পাক বলেন,
অর্থাৎ, ‘আর আমি শুধু তার (নুহ (রাঃ) এর) বংশধরকেই বাকী রেখেছিলাম’।
সেই মহাপ্লাবনের পর থেকে এখন পর্যন্তই শুধু নয় বরং কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষের আগমন পৃথিবীতে ঘটবে, তারা সবাই হযরত নুহ (আঃ) এর বংশর হবে। এজন্য নুহ (আঃ) কে ‘আদমে সানী’ বা দ্বিতীয় আদম বলা হয়। কাজেই এখন দুনিয়াতে আমরা যত মানুষ আছি, যে জাতির, যে বর্ণের বা যে দেশেরই হই না কেন, আমরা সবাই নুহ (আঃ) এর বংশধর। আমরা সবাই পরস্পরের আত্মীয়। বংশবিস্তারের মাধ্যমে আল্লহ পাক আমাদের সমগ্র পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন। উপরোল্লেখিত নুহ (আঃ) এর বংশধারায় চারজন মহান ব্যক্তি এমন রয়েছেন যারা প্রত্যেকেই আল্লহ পাকের নির্বাচিত সন্মানিত নবী এবং রসূল ছিলেন। এরা হলে যথাক্রমে, আদম (আঃ), শীছ (আঃ), ইদরিস (আঃ) এবং নুহ (আঃ)। এই আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, আমাদের সবার বংশধারা ঊর্ধ্বে গিয়ে প্রথমে নুহ (আঃ) এ গিয়ে মিলিত হবে। এরপরে নুহ (আঃ) থেকে আদম (আঃ) পর্যন্ত আমাদের সমগ্র পৃথিবীবাসীর বংশধারা নিঃসন্দেহে এক। সবচাইতে গৌরবের বিষয় হল, আমরা কমপক্ষে চারজন মহান রসূলের বংশধর। আমদের উচিত দুনিয়া এবং আখিরাতে আমাদের এই মর্যাদার আসনকে অক্ষুণ্ন রাখা।