বাসার গেটে এসে থামলো
নীল রঙের একটা গাড়ী,
দেরী হয়নি মোটেও
আসতে তার বাড়ী!
একজন মানুষ নেলে এল
হাতে ব্যাগের বোঝা,
মাঝবয়সী মানুষ উনি,
দেখতে সরল সোজা!
ধীর পায়ে হেটে চলেন
সামনে বন্ধ দুয়ার-
নিঃশব্দে এগিয়ে যান,
লোক আসবে খোলার।
মৃদু চাপে উনি যখন
বাজিয়ে দিলেন ঘন্টা,
রহস্যময় এক ঘটনা
যা চঞ্চল করবে মনটা!
বয়স্কা এক মহিলে বলেন,
‘কে আছে ওখানে?’
লোকটা তখন বলে ওঠে,
‘মা! আমিই দাঁড়িয়ে এখানে’।
আনন্দের আতিশয্যে মা তখন
হয়ে যান বোকা,
খুশি হয়ে বলে ওঠেন,
‘আয় রে আমার খোকা!
অশ্রুসজল নয়নে মা বলে,
‘এতদিন পর এলি খোকা?
এতদিন কোথায় ছিলি তুই?
দিয়ে আমায় ধোঁকা?’
মাকে জড়িয়ে ধরে লোকটি,
কপালে দেয় চুম!
‘তোমাকে ছেড়ে মা আমার
চোখে ছিলনা ঘুম’।
‘বাবা, রিশ্রাম নে’।
মা ওঠেন বলে,
ঠিক যেন ছোট্ট পাখি
সাঝেঁ নীড়ে ফেরে।
গোসল সেরে উনি
হয়ে ওঠেন সতেজ,
সারা বাড়ীজুড়ে যেন
ফুলের সুরভী আমেজ!
এরপর উনি যখন
সেরে ওঠেন প্রার্থনা,
মা তখন নিয়ে আসেন
খাবার ভর্তি খাঞ্ছা।
মা তো বানিয়েছেন
অনেক রকম খাদ্য,
অতুলনীয় সেগুলো যে
সবকিছুই অনবদ্য!
মা বলেন, ‘২০ বছর আগের
চিঠি একটা আছে পুরান,
তুই হয়ত বুঝবি,
জানবি কার নাম’।
‘বহু বছর হয়ে গেল
যখন আমি গেলাম,
অনেক বছর পার করে
ঠিকি ফিরে এলাম’।
‘ঠিক’, মা বললেন
দিয়ে একটু হাসি।
‘চিঠি টা দাও তো,
খুলে তবে দেখি!’
হলুদ খামে মোড়া চিঠি
লেখাগুলো ঝাপ্সা-
মনে পড়ছে না কিছু
ক্লান্তিতে সব আবসা!
বালিসে হেলান দিয়ে ওটা
চেষ্টা করেন দেখা-
লেখা দেখে মনে হয় যেন
কোন কাঁচা হাতের লেখা!
ভাল করে দেখার পরেও
ঠাহর হল না কিছুই,
স্মৃতির পাতা হাতড়ে গিয়ে
হতাশ হলেন শুধুই!
এক ঝটকা আলোর মত
কি যেন এল মনে,
দুঃখে ছেয়ে গেল মুখ
চিঠির পানে চেয়ে।
কেউ তো জানে না
কি ছিল লেখা,
জানে শুধুই সে-
যে পেয়েছে দেখা।
এরপর যে কি হল
তা নেই কারো জানা,
কবিতায় যে সব কথা
বলতে আছে মানা।