ছোটবেলায় রাস্তায় যখন চলতাম গাড়িতে, তখন মরীচিকা দেখার একটা উন্মাদনা কাজ করতো। কিছুদিন আগে খেয়াল করলাম, এই মধ্যবয়সে উপনীত হয়েও সেই মরীচিকা দেখার উন্মাদনা এখনও আছে। গাড়িতে বসে সামনে তাকিয়ে দেখি মরীচিকা দেখা যায় কিনা! যদি দেখা যায় তবে তন্ময় হয়ে সেটা দেখতে থাকি। যতক্ষণ চোখে ভাসে ততক্ষণ অন্য কিছু আর দেখি না। অথচ জানালার দুই পাশেই কত সৌন্দর্য পেছনে ফেলে দ্রুতগামী গাড়িতে বসে আমরা রাস্তা দিয়ে এগিয়ে চলি। মরীচিকা যতক্ষণ দেখি, ততক্ষণ যেন আর কিছুই দেখি না। শৈশবে মনে হতো রাস্তা ভেসে যাচ্ছে টলটলা পানিতে! এখন তো বুঝি, এই মরীচিকা শুধু ভ্রম ছাড়া আর কিছু তো নয়! তবুও ভাল লাগে! তবুও দেখি এই চোখে ঘোর লাগানো মরীচিকা। ঠিক যেন আমাদের জীবনটা! কত পরিকল্পনা, কত আশা, কত স্বপ্ন! সেগুলোকে পাবার জন্য বৈধ, অবৈধ কতই না পন্থা আমরা আবিষ্কার করি। যখন সময় ফুরিয়ে আসে, তখন পেছনে ফেলে আসা জীবন, আর স্বপ্ন দিয়ে বুজে রাখা আশার জাল মরীচিকা ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। পেছনে ফেলে আসা অতীত আর সামনে মৃত্যুর ভয়াল অন্ধকার। এই দুয়ের মাঝে আমাদের জীবন অথচ অহঙ্কারের শেষ নেই আমাদের।