‘দারু পিকে’ (মদ খেয়ে) গান এবং স্বাধীনতা দিবস(!)

ক্যাপশনটা লিখতে গিয়ে আমার অনেক্ষণ ভাবতে হয়েছে কি লিখলাম বা লেখাটা কেমন হলো। এরপর মনে হলো থাক লিখে ফেলি। ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখে না লিখেও পারলাম না। ঘটনাক্রমে ইউটিউবে পেয়ে গেলাম ভিডিওটি। যেখানে তিনজন অল্পবয়সী তরুণ ছেলে (টিনেজ ও হতে পারে), স্টেজের উপরে নাচছে। বাংলাদেশী ছেলে তিনজনই (দেখে তো তাই মনে হলো)! ওরা দারুণ উচ্ছ্বলতার সাথে একসাথে স্টেজে নাচছে ভোজপুরী একটা জনপ্রিয়(!) গানের সাথে। গানের নাম হলো, ‘দারু পিকে’। গানটি গেয়েছে ভোজপুরী গায়ক অজিত আনন্দ। এই গানটি মনে হচ্ছে বাংলাদেশী তরুণদের মধ্যেও বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। তা না হলে ওরা এমন উদ্দাম নাচ নাচবেই বা কেন? তা পোলাপান একটু নাচাকুদা করুণ, আনন্দ করুক, এতে আমি খুব একটা দোষ দিচ্ছি না। তিনটি ছেলেই পাঁচ মিনিট একনাগাড়ে যে উদ্দামতার সাথে নৃত্য করেছে, তাতে ওদের এনার্জির প্রশংসা না করলেই নয়। আমার তো ভয় হলো, ওরা যে নাচ দিয়েছে, তাঁর এক তৃতীয়াংশও যদি আমি গোপনেও দেয়ার চেষ্টা করি, নির্ঘাত হার্ট অ্যাটাক করে বস্তে পারি!  

 

আমার চোখ কপালে উঠে গেল ছেলেগুলার পেছলে যে ব্যানার আছে সেটার লেখা পড়ে। যে কারো চোখে পড়বেই। ডাঃ নাসির উদ্দিন তালুকদার মহাবিদ্যালয়, নলডাঙ্গা নাটোর, এর একটি স্কুলের “২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস” উপলক্ষে আলোচনা এবং পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে এই ভোজপুরী গান উচ্চশব্দে বাজিয়ে তিন তরুন নেচেছে।

 

 

আমার কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে ভোজপুরী গান বাজিয়ে কেন নাচতে হবে? আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিতে কি গানের এবং সেই সেই অনুযায়ী নাচের কোন অভাব ছিল? এই গানের ভাষা এবং গানে যে ‘মদ খেয়ে’ সম্পৃক্ত করে যা যা বলা হয়েছে, তা কোনভাবেই আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির সাথে যায় না। আমার কথা হলো কেন রে ভাই? আমাদের দেশের এত গুরুত্বপূর্ণ দিবসের এমন হেনস্তা করা হলো কেন? শিক্ষক হিসেবে তো নিজেরই লজ্জা লাগছে। কি শিক্ষা দিচ্ছি আমরা আমাদের তরুণ সমাজকে? এই কাজের মাধ্যমে কি আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে এবং আমাদের দেশকে সন্মান জানাতে পারলাম? প্রশ্নটা রইলো আপনাদের কাছে।  

Author's Notes/Comments: 

২৮ জুলাই ২০২১

View shawon1982's Full Portfolio