গতকাল একজনের মুখে তার ছেলের ১৪ বছর বয়সে প্রেম করে ভাগিয়ে এনে বিয়ের কথা শুনলাম! ছেলের বর্তমান বয়স ১৬ বছর অর্থাৎ ইতিমধ্যেই সে দুই বছর ঘর সংসার করেও ফেলেছে! ধর্মীয় তর্ক যুক্তিতে যেতে চাচ্ছি না। ধর্ম কে কিভাবে মানছে সেটা তার তার ব্যাপার! ছেলের বাবার সাথে আমার ঘটনাক্রমে গতকাল আলাপ হল! উনার পারিবারিক খোঁজ খবর নিচ্ছিলাম। কয় বাচ্চা, বয়স কত, কে কিসে পড়ে এসব। তখন জানলাম উনার তিন ছেলে। বড় ছেলেটি কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। সে লেখাপড়া করতে পারেনি। হিসাব নিকাশ বলতে গেলে কিছুই বোঝে না। সে একটা প্যাকেজিং ফ্যাক্টরীতে চাকরী করে। তাকে বেতনের কত টাকা দেয়া হল সেটাও সে ঠিকমত বলতে পারে না।
মেঝো ছেলের কথা বলতে গিয়ে তার বাবা মুচকি মুচকি হেসে আমাকে বললো, ‘ভাই মাইজ্যা পোলা তো কাম একখান কইরা ফালাইসে! ওয় বিয়া কইরা ফালাইসে’। শুনে আমার কান ঝা ঝা করতে লাগলো। কারণ একটু আগেই শুনে নিয়েছি উনার মেঝো ছেলের বয়স বর্তমানে ১৬ অর্থাৎ ১৪ বছর যখন ছিল তখনই বিয়ে করে ফেলছে। কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে ‘কোমা’য় চলে যাওয়া থেকে বিরত রাখলাম! ঠিক শুনলাম কিনা বুঝতে পারলাম না। মাথায় একটাই কথা ১৪ বছরের ছেলে বিয়ের বোঝে কি? তাও সেই ছেলে নাকি প্রেম করে ভাগায়ে বিয়ে করেছে! বিয়ের পরে ১৫ দিন উধাও ছিল। এরপর বৌ নিয়ে হাজির। জিজ্ঞাসা করলাম, মেয়ের বয়স কত? উনি বললেন, ওর মতই বয়স। আন্দাজ করে নিলাম, মেয়ের বয়স হয়ত ১৩ এর মত হতে পারে বিয়ের সময়। আমরা যখন ক্লাস নাইন টেনে থাকতাম, তখন বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে একটা পয়েন্টে লেখা ছিল ‘খাদ্যাভ্যাস’। আমাদের দেশের মানুষ ‘কার্বোহাইড্রেট’ জাতীয় খাবার বেশী খায় বিধায় শরীরে ‘যৌবন’ তাড়াতাড়ি চলে আসে। এজন্য এই খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারটা চলে আসে। গতকাল তো মনে হয় এর একটা বাস্তব প্রমান হাতেনাতে পেলাম।
আমি বললাম, ভাই ঝামেলা হয় নাই? মেয়ে, ছেলে সবই তো রাস্ট্রীয় আইনে নাবালক। উনি বললেন, অনেক ঝামেলা হইসে ভাই। মেয়ের বাপ মা মেয়ে নিতে আইসিলো। আমরাও দিয়া দিসি। নিয়ে যান আপনাদের মেয়ে। আমরা তো আটকারে রাখিনি। মেয়েকে তার বাপ মা নিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ পরে মেয়ে আমার চলে এসেছে তার ‘স্বামী’র কাছে। কিছুদিন একসাথে লেখাপড়াও করেছে। সম্ভবত ক্লাস ৯ পর্যন্ত পড়ে এই প্রেমী-যুগল লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে। এখন ছেলেটা কোন এক ফ্যাক্টরীতে কাজ করছে। মেয়েটা এখন গৃহবধু হয়ে শ্বশুরের সংসারে আছে।
পরে ঘরে এসে আমরা কিঞ্চিত হাসি ঠাট্টা করলাম এটা নিয়ে! শেষে বলতে বাধ্য হলাম, পোলা তো দেখি এক্কেরে আসল পুরুষ! মাঝে মাঝে তো দেখি ভার্সিটি পড়ুয়া ছোট ভাইরা অনেকেই হতাশায় ভুগছে। আয় হায়! এই লেখা পড়ে কি ওরা আরও হতাশায় চলে যাবে? না না ভাই! হতাশ হয়ো না। তোমাদের সুন্দর দিন সামনে আসবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ সবার ভাল করুণ।