আর মাত্র দুটা দিনের অপেক্ষায় আছি! স্রষ্টার অনুকম্পায় যদি বেঁচে থাকি তাহলে নতুন করে আবার কবিতা পড়ার প্রহরের সূচনা করবো। নতুন করে লিখবো কোন গল্প। মাথার মধ্যে সূক্ষ্ণ একটু দোলাচল দিয়েই আবার কথায় যেন হারিয়ে যায় ওরা। নতুন কিছু ভাবনা মাথায় খেলে যাচ্ছে। নতুন কিছু করার প্রয়াস মাথায় আসছে। শুধু একটু সময়ের অপেক্ষা। হয়ত দুটো তিনটে দিন! মানুষ চাইলেই তো অনেক কিছুই করতে পারে। পোশাক বদল করলে যদি চেনা মানুষকেও অন্যরকম লাগতে পারে, তাহলে ভাবনার বহিঃপ্রকাশ বদল করলে কেমন হয়? সেটাই দেখা বিষয়। অনেক সময় পার হয়ে গেছে। জীবনের রান-ওয়েতে মন্থর গতিতে অনেক ঘোরাঘুরি হলো! কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে নেবো! সাথে বড় করে দুই চারটা শ্বাস নিয়ে পরীক্ষা করে দেখবো, কতক্ষণ আর কতটুকু আশা মনে ধরে রাখতে পারি। এরপর আমি নতুন কোন লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াস নেবো!
অন্যের কাছে যতই আমি ভাল, খারাপ বা পরিবর্তিত হই না কেন, আমি তো জানি আমার নিজের কাছে আমি কেমনটা ছিলাম, আর এখনই বা কেমন আছি? যতক্ষণ নিজেকেই চিনতে না পারলাম ততক্ষণ মানুষকে কিভাবে চিনবো? নিজের সব সময় দায়িত্বের পেছনে ব্যয় করলে তো একসময় নিজেকে হারিয়ে ফেলতে হবে। অনুপাতে যতই কম হোক না কেন, নিজের জন্য কিছুটা সময় তো বের করা চাই। আমার জীবনে যে উত্থান পতন, এর কোনটাকেই আমি ব্যর্থতা হিসেবে ধরবো না। আমি ধরে নেব সবটাই আমার জীবন চলার পথের অভিজ্ঞতা। আমাকে এই অবিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। হয়ত বাইরে থেকে আমাকে কেউ এসে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে না। নিজের জন্য নিজেকেই অনুপ্রেরণাদায়ক বানাতে হবে। কারও আশায় বসে থাকা চলবে না। নিজের কাজ নিজেকেই করে ফেলতে হবে। এবং সেটা যত কম সময়েই হোক না কেন! আর দায়িত্ব? সেটা তো রইলোই!
যখন নিজের স্বরূপ নিজেই বুঝতে পারবো, তখন ওটাও ভাল করে বুঝে নেব আমার কি করার ছিল আর কি করতে হবে! অযথা অন্যের কথায় মাঝে নিজের দোষ খুঁজে বেড়াবো না। আমার নিজেকে স্রষ্টা যে বিবেক দিয়েছেন, সেটার তুল্যদন্ডে নিজেকে উঠিয়ে নিজের খতিয়ান নিজেই নেব। অন্যের কথায় প্রভাবিত হবার আগে, আমি নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে দেখবো, আমি কোন পথে চলেছি? আমার সব চাওয়া পাওয়ায় পার্থিব ভোগ্যবস্তু থাকে না। হয়ত কখনও একটু ভরসা চাই। মনে একটু সাহস চাই। কোন পথে যদি সেটুকুও না পাই, যাবো না আর সেই পথে। ভালোর বহিঃপ্রকাশে যদি সমাজের কাঠগড়ায় মুহুর্মুহু দাঁড়াতেই হয়, তাহলে সেই ভাল আমার নিজের কাছেই থাক। আমার অন্তঃপুরে আমার নিজের মত করে প্রকাশিত হোক। আমি চেষ্টা করবো আমার অন্তঃপুরে বিকশিত করতে একটি একটি করে সেই সব ধারণা, সেই সব চিন্তার আচ্ছাদন, যা এতদিন অবদমিত ছিল লোকনিন্দার ভয়ে। এতদিন ভয় পেলেও এখন অবলীলায় নিজেকে বলতে পারি, ‘ভয় কি’!