সবাইকে অধিবর্ষ দিবস (Lip Year Day) এর শুভেচ্ছা জানাই। আমি জানি এটা কোন উপলক্ষ না! 'চুমু দেয়া', 'জড়িয়ে ধরা', 'ভাল্লুকের পুতুল দেয়া' এসব যদি দিবসের মর্যাদা পেতে পারে তাহলে আমি অধমের কাছে এই অধির্ষই না হয় থাকুক একটা উপলক্ষ হয়ে। যদিও আমার জন্য এটা কোন বিশেষ দিন না।
আগে অধির্ষের এই দিনটাকে মোটামুটি ‘ঈদের দিন’ টাইপ কিছু লাগতো! চার বছরে একবার আসে! কি করা যায় সারাদিন? আজ কেন ছুটি দেয় না? এই দিন যে জন্মায় তার জন্মদিন কিভাবে হবে, এই চিন্তার কোন কূল কিনারা পেতাম না। আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল এমন কাউকে দেখি যার জন্ম লিপ-ইয়ার ডে তে অর্থাৎ ২৯শে ফেব্রুয়ারীতে। কথা প্রসঙ্গে বেরিয়ে এলো আমার স্ত্রীর একদম ছোট বেলার বন্ধু মেজর উম্মে হাবীবা লিনা’র একমাত্র (এখন পর্যন্ত) মেয়ে আয়শা সামারা মানমির আজকেই জন্মদিন। এই বছর ওর বয়স চার হল। আমাদের হাসিমুখের এবং কিছুটা গম্ভীর সামারা মামনি দীর্ঘজীবী হোক। খ্যাতি যশ সন্মানে বাবা মাকে ছাড়িয়ে অনেক উপরে উঠুক সেই দোয়া করি।
আজকের দিনটা আমার জন্য কোনভাবেই ভাল যাচ্ছে না। গত কয়দিন ধরে শরীর ভাল লাগছে না। বুক ধড়ফড় করছে। রাতে ভাল ঘুম হচ্ছে না। ওষুধ খাচ্ছি ঠিকমত। প্রেসারও ঠিক আছে। তবুও এই অবস্থা। পরপর কয়রাত ভাল ঘুম হচ্ছে না। রাতে আজেবাজে স্বপ্ন দেখছি। মাত্র একটু আগেই একটা কষ্টের স্বপ্ন দেখে ঘুম থেকে উঠে অফিসে আসলাম। আসার আগে স্ত্রীর মুখ থেকে আরো একটা দুঃসংবাদ শুনে মন খারাপ করেই অফিসে আসলাম। আজকেই আমাদের বাসা পরিবর্তন করতে হবে। আজকেই এত কিছু। মন ভাল না কিছুতেই।
বাসা থেকে বের হব তখন স্ত্রী জানালো আমার বোনের শ্বশুর ভীষণ অসুস্থ এবং নাক থেকে ক্রমাগত রক্তপাতের জন্য ভোর ৪ টায় জরুরী ভিত্তিতে ইউনাইটেড হসপিটাল এ ভর্তি করতে হয়েছে। ফোন করে জানলাম ডাক্তাররা এখনও কিছু জানায়নি কিন্তু উনাকে ভর্তি করে নেয়া হয়েছে এবং রক্তপাত বন্ধ করতে অনেক সময় লেগে গিয়েছে। রক্ত দেয়া লাগতে পেরে ভেবে ব্লাড ডোনার জোগাড় করে রাখতে বলেছে।
ঘুমের মধ্যে অনেক প্রিয় মানুষ একজনকে স্বপ্নে দেখলাম। স্বপ্নে দেখছি অনেক রাত। প্রায় তিনটার মত! ওদের প্রতিষ্ঠানে গেলাম। দেখলাম একটা বড় হলরুমের সামনে মেটাল চেকপোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছে মানুষটা। আমি কাছে যেতেই পার হয়ে গেল। ঘাড় ফিরিয়ে দেখলো আমি তার খোঁজে এসেছি। আমাকে কিছু না বলে মুখ ঘুরিয়ে হলরুমে চলে গেল। আমি মরিয়া হয়ে ডাকলাম। সে শুনলো না। আমার চেকিং শেষ হতে হতে সে হলরুমে চলে গেল। আমি দৌড়ে গেলাম সেই হলরুমে। গিয়ে দেখি শত শত ছেলে সেখানে ফ্লোরে শুয়ে আছে। বেশীরভাগই চাদর মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছে। আমি যার খোঁজে এসেছি, সে এখানের শত শত মানুষের মাঝে কোথাও শুয়ে আছে। আমাকে ধরা দেবে না। আমার সাথে কথা বলবে না। আমি কিছুক্ষণ হাটাহাটি করলাম। পেলাম না। শত অপরিচিত মানুষ, সবাই গভীর ঘুমে, অন্ধকার ঘর! কোথায় খুঁজবো তাকে? যাকে ভেবেছিলাম, মনের মধ্যেই খুঁজলে পাওয়া যায়, সে যদি নিজে থেকে ধরা না দেয়, তাকে কি আর খুঁজে পাওয়া যায়?