ঘুরতে ইচ্ছে করে খুব। ইদানিং প্রায় মনে হয় নিরুদ্দেশ হয়ে যাই। কিন্তু উদ্দেশ্যহীন যাত্রা কি আমাদের এই যান্ত্রিক জীবনে শোভা পাবে? কত দায়িত্ব থাকে, কত কাজের ফিরিস্তি জমে থাকে প্রতিনিয়ত। তবুও মন ছুটে চলে। মন তো আর শরীরের অধীন নয়। মনের তো কোন বাঁধা থাকে না। কাজেই মনের বাসনাগুলো একের পর এক জমা হতেই থাকে। জমতে জমতে একসময় মনের ভেতরেই কেমন যেন হাহাকারের মত শুনতে পাই নিজেই। কিছুই তো হল না। কিছুক্ষণ হতাশ লাগে। এরপর আবার নিজেকে নতুন করে গোছাতে চেষ্টা করি। এখন অবশ্য সবকিছুই গুছিয়ে নিতে হচ্ছে। বাসা থেকে শুরু করে জীবন যাপন সবকিছুই। সময়ের চাহিদা যে। সসময়ের সাথে তাল না মিলাতে পারলে ত মুশকিল হয়ে যাবে। এই সময়ের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে আর যাই হোক না কেন, আমার ঘুরতে বের হবার যে বাসনা সেটা কিন্তু অপূর্ণই থেকে যায়।
যখন ছাত্র ছিলাম, তখনও আমার অনেক বাসনাকেই গলা টিপে মেরে ফেলতে হয়েছে। সেগুলোর অনেক কারণ আছে, তার মধ্যে প্রধাণ কারণ ছিল, লেখাপড়ায় যে পিছপা হওয়া চলেবেনা! মনের মধ্যে একেবারে খোদাই করে গেঁথে দিতে পেরেছিল মনে হয় আমাদের অভিভাবকরা। কাজেই তখন ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না। অর্থনৈতিক স্বাধীনতাই বা ছিল কোথায় তখন? চাইলেই তো ঘোরা যাবে না। তখন ভাবতাম, যখন কর্মজীবনে প্রবেশ করবো, তখন খুব ঘুরে বেড়াবো! কর্মযজ্ঞে প্রবেশ করে প্রতিনিয়ত আমার সেই ভুল ভাংছে। দিন যায়, বয়স বেড়ে চলে চলে, দায়িত্ব বেড়ে চলে! সব কিছুই বেড়ে চলে। ছাত্র জীবনে যে সব ইচ্ছেগুলোকে গলা টিপে মেরে ফেলতে হত, এখন কর্মযজ্ঞে ঢোকার পর সেগুলোকে আরো বেশী করে মেরে ফেলতে হচ্ছ। উপায় নেই। তবুও মন মানে না। ঘুরতে ইচ্ছে করে। আমার ভীষণ ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করে।