২৫ ডিসেম্বর ২০১৯

facebook সহ অন্যান্য সোশাল মিডিয়াকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ তারা অনেক কারণেই পেতে পারেন নিঃসন্দেহে। আমার মত অধম অন্ত্যজের লেখা প্রকাশিত হচ্ছে শুধু একারণেই নয়। ফেসবুকের কল্যানে নানা ধরণের মানুষের সাথে আর তাদের বহুমাত্রিক রুচিবোধের সাথে পরিচয় ঘটছে প্রতিনিয়ত। এটা কিন্তু এক বিরাট পাওয়া। যখন সোশাল মিডিয়াগুলো ছিল না, তখনও মানুষের সাথে মানুষের Interaction হত। সেটার ধরণ আর এখনকার ধরণ অনেকটাই পালটে গেছে। বলতে হবে চোখে পড়ার মতই পালটে গেছে। অনেক অনেক কাল আগে মানুষ গুহার ভেতর ছবি এঁকে মনের ভাব প্রকাশ করতো, এটা আমরা অনেকেই জানি। ঠিক তেমনি ভাবে এখনকার আমরা Emoticon এর সুবাদে আবার সেই ইতিহাসে প্রত্যাবর্তন করতে সক্ষম হয়েছি। আমরাও নানা রকম ছবি দিয়ে দিব্যি মনের ভাব প্রকাশ করে চলেছি। ‘হা হা’ নামক এক হাসির Emoticon এর কারণে অনেকের সাথে যেমন সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তেমনি Heart রিঅ্যাক্ট এর কারণে অযাচিত ভাবে অনেকের মন বিগলিত হয়ে যাচ্ছে।

 

এই হার্টের আবার বহুমুখী ব্যবহার আছে। ভালবাসার বা পরিচিত অথবা গায়ে পড়া স্বভাবের কিছু মানুষকে এড়িয়ে যাবার একটা সূক্ষ্ম পদ্ধতি হল এই হার্ট এর ‘ইমো’টা। যাকে এড়িয়ে যেতে ইচ্ছে করছে, তাঁর কোন পোষ্ট দেখাও লাগবে না, শুধু একটা হার্ট ঠুকে দাও, ব্যস কেল্লা ফতে! পোস্টদাতা মনে করছে, আহারে, আমার পোষ্টটা দেখে না জানি কত ভালবাসা জানিয়ে গেল। আসলে গেছে এড়িয়ে। আর যিনি হার্ট দিয়েছেন তাদের মনোভাব হল অনেকটা এরকম, ‘কি বালছাল যে পোষ্ট দিস তুই! আজাইরা! দূরে গিয়া মর’। আমার কাছে, সত্যি করে বলি ভাই, কেউ মনে কষ্ট নিয়েন না, এইসব ইমো দেয়া রিঅ্যাক্ট এর কোন দাম নেই। আমি সত্যি সেগুলোকেই মূল্যায়ন করি, যারা কষ্ট করে আমার লেখা পড়লেন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করলেন। কে আমার পোস্টে কয়টা লাইক দিল, হার্ট দিলো, এতে আমার কিছুই যায় আসে না। কারণ যারা এগুলো দিয়েছে তাদের অধিকাংশই আমার লেখা বা পোস্ট ভাল করে দেখেই নাই। নিছক অভ্যাসের বসে তারা এসব রিঅ্যাক্ট দিয়ে গেছেন। কিছুদিন আগে এক মহাত্মনের মন্তব্য দেখেছিলাম। তিনি একজন লেখককে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘উনি যে কি লেখেন তা কয়টা লাইক পায় তা দেখেই বোঝা যায়’। মহাত্মনের উদ্দেশ্যে বলতে হয়, যে যুগে সোশাল মিডিয়া ছিল না, সে যুগেও লেখরা যেমন ছিল, তেমনি আপনার মত কিছু আবর্জনাও ছিল। আপনাদের মত বিজ্ঞ আবর্জনাদের কারণে লেখকদের লেখালিখির কোন গতি পরিবর্তন হয় না। যারা কিছুমাত্র জ্ঞান না রেখেও আসেন সাহিত্য বোদ্ধা সেজে নোংরা নোংরা মন্তব্য ছুড়ে দিতে। কারণ এই কাজেই যে তারা পারঙ্গম! বাঁকা বাঁকা কিছু কথা মুখ বিকৃত করে বলতে পারলেই তারা মনে করে, ‘ভারী একখান বাঁশ দিয়ে দিলুম’!

 

আমার এই লেখা একান্তই আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে লিখেছি। কাউকে আঘাত করার জন্য নয়। একাধারে জনপ্রিয় এবং বিতর্কিত লেখক তসলিমা নাসরিনের একটা উক্তি আমার বাবা আমাকে একবার দেখিয়েছিলেন। কোন বইতে পড়েছিলাম সেটা এবং উক্তিটা হুবহু মনে হয়ত নেই কিন্তু ভাবধারাটা মনে আছে। সেটাই নিজের মত করে বলছি। ~আমার শুভাকাঙ্খী অনেকেই আছেন, নিন্দুকও কম নন। সকলের জন্যই আমার শুভেচ্ছা।~

View shawon1982's Full Portfolio