১৪ মাস পার হয়ে গেছে। অনেকবার প্রতিজ্ঞা করেও রাখতে পারিনি। আমি মানুষের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে চেষ্টা করি। হয়ত সব পারি না। চেষ্টা করি রাখতে। কিন্তু আমিও একজন সীমাবদ্ধ মানুষ। ভুলত্রুটির উর্ধ্বে তো নই। কত ভুল হয়ে যায়। কত প্রতিশ্রুতি ভুলেও যাই। আমি নিজের কাছে করা প্রতিশ্রুতিগুলো সবচেয়ে বেশী ভুলে গেছি। সবচেয়ে বেশী অবজ্ঞা করেছি নিজেকে দেয়া কথাগুলোকে। পারিনি অথবা অবহেলায় করিনি। নিজের কাছেই আমি নিজে দোষী। আমার ইচ্ছে ছিল এক সহস্র কবিতা লিখবো, যেগুলোর কোন শিরোণাম থাকবে না। অথচ এই এক সহস্র কবিতা হবে আমার মনের সমষ্টি। একি এক হাজার কবিতা যোগ করলেই কেউ আমাকে পেয়ে যাবে। কিন্তু আমি জানি, আমাকে কেউ খুঁজবে না। আফসোস নেই। দুঃখ শুধু এখানেই যে আমি নিজের সাথে নিজেই প্রতারণা করেছি। চৌদ্দ মাস পরে আমি আমার সেই সঙ্কলনের বারোতম কবিতাটা লিখলাম। চৌদ্দমাস অনেক দীর্ঘ সময়। একজন মানুষকে ভুলে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট কারো কারো জন্য। হয়ত আমার নিজের কাছে নিজের জন্যও।
কখনও কখনও নিজের কথাগুলো কাউকে বলতে ইচ্ছে করে। আশেপাশে একজন প্রিয় মানুষের সন্ধানে হাহাকার করতে হয়। কাকে বলি, কাকে বলি, করতে করতে আর খুঁজে পাওয়া যায় না কাউকে। সবাই ব্যস্ত। সবাই সবার। কেউ কারো নয়। ব্যস্ততার মধ্যে আমরা ভুলে যাই, পারিপার্শ্বিকতা ছাড়াও আমাদের জীবনের একটা চৌহদ্দি আছে। অন্য সবার কথা ভাবতে ভাবতে একসময় আমরা আমাদের ভুলে যাই। ভুলেই যাই ‘আমার’ কোন একটা অস্তিত্ব আছে, ছিল। আমার সেই সহস্র কবিতা হয়ত নিজেকে খুঁজে পাবারই একটা ব্যর্থ প্রয়াস। হোক ব্যর্থ, তবুও তো একন্তই কিছুটা নিজের।