কে বলেছে দুনিয়াতে
খারাপ বাপ নাই?
এই শোন খারাপ বাপের
গল্প বলে যাই।
ভুল সিদ্ধান্ত আর মিথ্যে আশায়
চলে এসেছিলাম দেশে
এর পরিণতি আমার জন্য
খারাপ হল শেষে
উঠতে বসতে নানা কথা
শুনায় দিত বাপ
উনার কাছে আমি যেন
ছিলাম কালসাপ।
কথায় কথায় বুঝায়ে দিত
আমার চাকরি নাই
তখন মনে হত যেন
মাটিতে মিশে যাই
আমার হয়ে আমার বৌকে
শুনাতো হাজার কথা
কি আসে যায় তাতে
মনে লাগুক যত ব্যথা!
মেহমানের সামনেও খোঁটা দিতে
হয় নি পিছ পা
ভুলতে চাইলেও সেসব কথা
ভুলতে পারি না।
দফায় দফায় মিটিং করে
করতো কোণঠাসা
কথায় কথায় বলে দিত
ওটা উনার বাসা!
শরীরে অনেক অ্যাালার্জি নিয়ে
যখন আসতো না ঘুম
এ সি দিয়ে ঠান্ডা করতাম
আমার অভিসপ্ত রুম
এরপর একদিন লোকের সামনে
দিল কথা শুনায়ে
বৌ নিয়ে এ সি রুমে
শুই পাছা ভাসায়ে!
ইলেক্ট্রিক বিল বেড়ে গেলেই
আর নাই রক্ষা
ম্যারাথন খোটা শোনার
চলত পরীক্ষা।
বাচ্চা যখন বৌয়ের পেটে
তখন আট মাস
তাকে একদিন টেবিলে বসায়ে
বললো একরাশ-
আমি ছিলাম আমার ঘরে
মুখ লুকায়ে লজ্জায়-
ঠিক তখন থালা ভাঙ্গার
শব্দ সোনা যায়।
দৌড়ে গেলাম খাবার ঘরে
ছড়ানো কাঁচের টুকরা
হঠাৎ করে ঠিক করে
কিছু বুঝলাম না আমরা
যখন প্রশ্ন করে বসলাম
ভাংছো কেন থালা?
তেড়ে উঠে মারতে আসলো
যেন আমি বোবা কালা!
সংসারের ভাঙ্গন উনি নাকি
বোঝাচ্ছিলেন তাকে-
কথা শোনানোর জন্য পেলেন
গর্ভবতী তাকে!
আজও যখন মনে পড়ে
থালা ভাঙ্গার কথা-
নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়
বুকে করে ব্যথা।
এখনো ইচ্ছে করে
যদি সেটা পারতাম
ঘরের সব কাঁচের বাসন
একটা একটা ভাংতাম।
পিঠের পিছে ছোরা মারা
উনার প্রিয় স্বভাব-
আমাদের কিসসা শোনানোর জন্য
উনার লোকের নাই অভাব।
ঘরের কথা পরের কাছে
বেশ আয়েশ করে বলেন
মুখের কথা দিয়েই উনি
খাল উঠায়ে ছাড়েন।
একাধিকবার আমাকে উনি
বলেছেন অচল মুদ্রা-
আমি ছিলাম পাশের ঘরেই
আড়াল করে পর্দা।
সহ্য করতে না পেরে
বৌ ছাড়লো ঘর-
টাকা নাই বলে আমরা
নিমেষে হলাম পর।
যেমন করেই হোক উনি
অন্যদের করবেন দমন
বলতে বাধবে না আমার
তার কলুষিত মন।
আমাদের বন্ধ ঘরেও উনি
গোপনে পেতেছেন কান-
যাতে করে নতুন করে
করবেন সমাধান।
নতুন কিছু কথা শোনানোর
খোরাক পেয়ে গেলেন
সূরা আসর পড়ে উনি
কথা শুনিয়ে দিলেন!
হয় নয় কথায় তিনি
ছাড়তে বলেন ঘর
বাইরের মানুষ আপন উনার
ঘরের মানুষ পর।
আমাদের সব কথার কথাও
কৈফিয়ত চাইতে থাকেন
উনার কথা মনে করালে
সাফ অস্বীকার করেন।
হুমায়ুন আহমেদ আপনি কি
শুনতে পাচ্ছেন কথা?
খারাপ মানুষ শুধু নয়
আছেও খারাপ পিতা।