ঘুণপোকা নষ্ট করে ফেলছে টেবিলের পায়াগুলো
যেখানে বসে আমি লিখেছি কতো সহস্র নির্ঘুম কবিতা
সাথে ছিল কতগুলো ঝিঁ ঝিঁ পোকার বিরামহীন ডাক
আর ছিল ডুবে যাবার পূর্ব মুহুর্তের চাঁদের তিরস্কার!
যেখানে সেখানে দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে ফেলে দেয়া কাগজ
বহন করে চলেছে আমার কবিতা না লেখার যন্ত্রণাগুলো
কালির আঁচড় যেন হৃদয়টা এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে
তবুও লেখা হয় না পঙক্তিগুলো
এ যে কি অসহ্য অনুভূতি!
যখনইও কলম ছুঁইয়েছি কাগজে,
টেবিলে উঠেছে দুর্বোধ্য আলোড়ন
কাগজের উপরে খসখস শব্দ
অতি মৃদু! তবুও তো শব্দ
ঘুনপোকাগুলো শুনেছে মন দিয়ে
হয়ত বুঝতে চেয়েছে রাত জাগা ব্যর্থ কবিকে
বন্ধ করে দিয়েছে কাঠ কাটা, থেমে গেছে গুঞ্জন
চাঁদের ভ্রুকুটি, তারার আলাপন, আঁধারের সমীকরণ
সব একাকার হয়ে মিশে যায় কালি হয়ে কাগজের বুকে
হয় না, কিচ্ছু হয় না!
কোথায় যেন সুতো গেছে ছিঁড়ে
কবিতা, উপমা সবই যেন বিদায় নিয়েছে
সারা ঘরে পায়চারি করেছি অপ্রকাশিত ক্রোধে
কেউ নেই জেগে; কেউ রাখেনি হাত এ কাঁধে
শুধু ঘুনপোকাগুলোর শব্ধ-
নিশুতি নৈঃশব্দ্যকে করেছে চৌচির
প্রাণোদীপ্ত নিঃসঙ্গতাকে বিদ্রুপ করে বলেছে-
তুমি কতটা কিম্ভুত অবাস্তব!
জানালা দিয়ে দেখেছি নিঝুম রাতের কোলাহল
কে যেন ডেকে বলে, ওরে কবি!
কবে হবে তোর কবিতা প্রাণোচ্ছল?
কসে পড়া তারার মত আমার উত্তরগুলো ঝরে যায়
ইচ্ছেপূরণ হয় না, শুধু রয়ে যায় ধূসর বিবর্ণ যাতনা
ফিরে আসি! দেখি কি লিখেছি একটু আগে-
লেখা নেই! সব সাদা-
ছুঁড়ে ফেললাম নিজের অগোচরে
ক্লান্তিহীন শুনে যাচ্ছি কাঠ অর্বাচীন কাটার শব্দ!
এইটুকুই যা কমিয়ে দেয় বিকলাঙ্গ নিস্তব্ধতা
হয়ত ওরা চাইছে-
মৃত কবি আবার জেগে উঠুক!
লিখুক কোন প্রাণসঞ্জীবনী অজর কবিতা।