মাত্র দু’মাস হল সিঁথিতে সিঁদুর লেগেছে মেয়েটির-
চোখে তার কত হাজার স্বপ্ন,
সিঁদুরের আভা কিছু বুঝি লাগে গালে!
স্বামীর বুকে মাথা রেখে শুয়েছিল হতভাগী-
জানতো না ঘুণাক্ষরেও, কি ছিল তার শিবতুল্য স্বামীর মনে!
ঘুমানোর আগে লাজুক স্বরে কত কথা কয়েছিল তার সনে!
কখন যে চোখ জড়ালো ঘুমে মেয়েটির-
মনে হলে আজো অভিশাপ হানে,
ভুলতে পারে না কথা রাতটির!
ভোরের আগে মেয়েটির স্বামী চলে গেছে ঘর ছেড়ে।
যুদ্ধের দামামা বেজে চলেছে-
মুক্তিযুদ্ধ মেয়েটির স্বামীকে নিয়েছে তার থেকে কেড়ে!
চোখের পানি শুকিয়ে গেছে-
ভুলে গেছে তুলসী তলায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালার কথা।
নাওয়া খাওয়া ভুলে দরজায় তাকায়; বুকে জমানো ব্যথা।
গ্রামে আসে বীভৎস হায়েনা আর নরপশুর দল-
রেহাই পায় নি মা-বোন, কোন যুবতী মেয়ের দল!
মেয়েটি হারালো সব-
হঠাৎ একদিন শুনতে পেল, বিজয়ধ্বনির রব।
মেয়েটির সিঁথিতে আর সিঁদুর নেই!
প্রতীক্ষায় থাকা মেয়েটি আজো, এদিক সেদিক তাকায়!
সিঁদুর সে লাগিয়ে দিয়েছে দেশ মাতার পতাকায়!
চার দশকের বেশী হয়ে গেল-
নিভু নিভু প্রদীপের মত জ্বলছে বুকের মাঝে আশা একটু খানি!
বিয়ের সময় পাওয়া সেই শাঁখাজোড়া;
মেয়েটি আগলে রেখেছে-
আজও ভাঙ্গেনি।