কলমের আঁচড়ে কবি যখন তাঁর আবেগ লেখেন কাগজে
আমিও তখন ধারালো এক অস্ত্র দিয়ে আঁচড় দেই চামড়ায়।
যুগের পর যুগ ধরে ভালবাসার ইতিহাস যখন লেখা হতে থাকে
নকশী কাঁথার পরতে পরতে, নিখুঁত সুতোর টানে-
আনন্দ আর অশ্রুর এক অভূতপূর্ব মিশ্রণ সুর তোলে ভগ্ন মনে;
মনের অজান্তেই মন ছুটে যেতে চায় না পাওয়া অতীতের পানে!
আমিও তখন রচনা করতে বসি এক নতুন বাঙময় ইতিহাস!
অথবা ধ্বংস করে ফেলি পুষে রাখা বংশানুক্রমিক সংস্কার।
অর্ধেক টুকু খুঁজে পেয়েছি, রেখে দিয়েছি শরীরের ভেতর!
বাকী অর্ধেকের সন্ধানে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি আদিম জিঘাংসায়।
আমি বসে নেই- লতানো গাছের মত বেয়ে চলেছি
কখনও উর্ধ্বপানে আর কখনও শ্বাসরুদ্ধকর রক্তের স্রোতে!
কল্পনা যেখানে লজ্জিত হয়ে মুখ লুকায় সেখানে আমি দৃপ্তপায়ে
এগিয়ে যাই, সকল প্রতিযোগীর আদিমতা চিরতরে লুপ্ত করে!
অকৃত্রিম সাফল্যের সন্ধান করে চলে, আমার সেই বাকী অর্ধেক,
ক্লান্তিহীন ভাবে কলঙ্কের পথে আমি চলি, এখনও পথ বাকী অনেক।
দ্বিধাদ্বন্দ্ব আর বিবেকের টানাপোড়েনের সুতো ছিঁড়ে গেছে,
অসম্পূর্ণ কবিতার মত ইতিহাসের একটি পাতা, জমে আছে হিমঘরে-
বেওয়ারিশ লাশের মত, অথবা বেজন্মা শিশুর মত ভেসে গেছে নর্দমায়!
কলজে হিম করা অট্টহাসি দিয়ে, আমি মাথা নুইয়ে তাকাই
ফেলে আসা আমার সাফল্যের বীরত্বগাঁথার তীর্যক সমূদ্রতটে!
গভীর সান্ত্বনা নিয়ে চোখ বন্ধ করি! আমি পেয়েছি-
আমি বুঝতে পেরেছি আমি এক অদম্য নির্ভীক পুরুষ!
আমি অতুলনীয়, দুর্দমনীয়, অনমনীয়, অলঙ্ঘনীয় বটে-
যার অর্ধেকে ছিলাম মানুষ, আর বাকী অর্ধেকে দ্বিগুণ অমানুষ।