উমামী গাস্ত

উমামী গাস্ত


দীনের দাওয়াত নিয়ে, সপ্তাহে একদিন, কোন একটি নির্দিষ্ট সময়, মহল্লায় সব শ্রেণীর মানুষের কাছে যে গাস্ত করা হয় সেটাই উমামী গাস্ত। اللهতা’য়ালা সূরা মুদ্দাসসির এর ৩ নং আয়াতে মানুষের নিকট তাঁর ’আজমতের দাওয়াত দেবার জন্য নির্দেশ দান করেন। পুরা জামাত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে মেহনত করে। মাসজিদের ভিতরে যে ’আমলগুলো চলে তার সাধারণ তারতীব নিম্নরুপ-

 

গাস্তের বয়ানঃ

জামাত মহল্লায় মেহনত করার আগে যে সংক্ষিপ্ত তারগীবী বয়ান করা হয় সেটাই গাস্তের বয়ান। সংক্ষেপে ১২-১৫ মিনিটের মধ্যে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এর কয়েকটি সাধারণ অংশ আছে। যথা-

  • اللهপাকের ’আজমত – দাওয়াতের মেহনতের যে কোন কথা বা বয়ান শুরু হতে হবে اللهতায়ালা  হামদ, সানা, ’আজমতের কথা দিয়ে।

 

  • দীনের আহামিয়াত – তথা দীনের গুরুত্ব। দীন মানা আমাদের জন্য কেন জরুরী, দীন মানলে কি লাভ; না মানলে কি ক্ষতি সেটা সংক্ষেপে বলা।

 

  • দাওয়াতের জরুরত – আমাদের কেন দাওয়াতের কাজ করতে হবে, আমাদের জিম্মাদারী কি, এই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত মুজাকারা

 

  • ফজিলত – দাওয়াতের কাজের আর গাস্তের ফজিলত কুরআন-হাদীস থেকে সহী ভাবে জেনে নিয়ে অবিকৃত ভাবে বলা। কোন অপ্রাসঙ্গিক বা সন্দেহজনক কথা সম্পূর্ণ ভাবে অবাঞ্ছিত।

 

  • জামাত তাশকিল – গাস্তের বয়ান যিনি করবেন অথবা জামাতের আমির সাহেব জামাত গঠন করবেন। রাহাবারের ফজিলত কুরআন/হাদীস থেকে বর্ণনা করে মহল্লা থেকে রাহাবার তৈরি করা। এরপর মুতাকাল্লিম, মা’মুর, গাস্তের জামাতের আমির তাশকিল করা।

 

  • গাস্তের আদব – মজমা ছোট হলে বা চিল্লার জামাত হলে, গাস্তের জামাত তাশকিল করার পরে গাস্তের সাধারণ আদবগুলো বলা। মজমা অনেক বড় হলে আদব মাসজিদে বলা জরুরী নয়। সেক্ষেত্রে যিনি গাস্তের বয়ান করবেন তিনি গাস্তের জামাত নিয়ে মাসজিদের বাইরে গিয়ে আদব বলে দু’আ করে জামাত কে মহল্লায় পাঠিয়ে দিবেন। উনি বাইরে যাওয়ার সাথে সাথে মাসজিদের মজমায় ইমানী মুজাকারা শুরু হয়ে যাবে।

 

ইমানী মুজাকারাঃ

গাস্তের বয়ান হবার পর ইমানী কথা শুরু হবে এবং পরবর্তী নামাজ শুরুর আগে এমনভাবে শেষ করা যেন সাথীরা এতমেনান এর সাথে জরুরত পুরা করে নামাজের জামাতে শামিল হতে পারে। গাস্তের জামাত আসার আগে ইমানী কথা শেষ না করা। ইমানী মুজাকারাতে সাধারণ ভাবে যে অংশগুলো থাকবে তা নিম্নরুপ-

 

·        

الله পাকের ’আজমত – দাওয়াতের মেহনতের যে কোন কথা বা বয়ান শুরু হতে হবে اللهতায়ালা  হামদ, সানা, ’আজমতের কথা দিয়ে। এর সাথে কুরআন-হাদিসের আলোকে মউতের পরের জিন্দেগি মুজাকারা করা। ব্যক্তিগত কোন কারগুজারী যে কোন আ’ম মজমায় বিলকুল না বলা।

 

·        

আম্বিয়া (عليهم الصلاة والسلام) দের ওয়াক্বিয়ানবী (عليهم الصلاة والسلام) গন الله পাকের কাছ থেকে জাহিরের খিলাফ যে সাহায্য লাভ করেছেন সেগুলো কুরআন-হাদীস থেকে সহীভাবে জেনে নিয়ে অবিকৃত ভাবে মুজাকারা করা। ওজিফার মত করে আম্বিয়া (عليهم الصلاة والسلام) দের ওয়াক্বিয়া মুজাকারা করা।

 

·        

সাহাবা ( رضي الله عنهم) দের ওয়াক্বিয়ারসূলুল্লহ (صلي الله عليه وسلم) এর সাহাবা ( رضي الله عنهم) দের মেহনতের কারগুজারী, তাঁদের কুরবানী, ইমানী মুজাহাদা, আর তাঁরা الله পাকের কাছ থেকে যে সাহায্য লাভ করেছেন সেগুলো হাদীস থেকে অবিকৃত ভাবে মুজাকারা করা। সাহাবা ( رضي الله عنهم) দের পরবর্তী জামানার কারো ঘটনা না বলা।

 

·        

ইমান ও উহার ’আলামাতের বয়ান – ইমানকে ‘ইমানের ’আলামাত’ সহকারে মুজাকারা করা। কুর‍আন-হাদীসে ইমান ও ইমানের ’আলামাত সংক্রান্ত যে আয়াত বা হাদীস আছে সেগুলো মুজাকারা করা।

 

আ’ম বয়ানঃ

গাস্তের জামাত ফেরত আসার পরে সবধরণের মানুষের সামনে আখিরি যে বয়ান তাশকিল সহ করা হয় সেটাই আ’ম বয়ান। সাথীদের হালত বুঝে তাশকিল সহ আধা ঘন্টার মত সময় নিয়ে এই ’আমল হতে পারে। اللهতায়ালা হামদ, সানা, ’আজমতের কথা বলার পর, ৬ সিফতের সীমারেখার মধ্যে, খাস করে ইমান ও এর মেহনতের গুরুত্ব, উম্মতের জিম্মাদারির উপরে আলোকপাত করে কুরআন-হাদীস থেকে সহীভাবে জেনে নিয়ে, অবিকৃত ভাবে, হেকমতের সাথে, প্রাঞ্জল ভাষায় বয়ান করা। প্রয়োজনবোধে প্রাসঙ্গিকভাবে আম্বিয়া (عليهم الصلاة والسلام) ও সাহাবা ( رضي الله عنهم) দের জিন্দেগীর কারগুজারী পেশ করা। বয়ানের শেষে অবশ্যই পুরা মজমার সামনে দীনের তাকাজাগুলাকে পেশ করা আর اللهতায়ালা রাস্তার মেহনতের ফাজায়েল বর্ণনা করে اللهতায়ালা  রাস্তায় বের হবার জন্য সবাইকে নগদ তাশকিল করা। সাথীদের নিয়্যতকে তাশকিলের সাথীরা লিখে নিবেন।

Author's Notes/Comments: 

october 2011

View shawon1982's Full Portfolio