জীবনের একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এইচ. এস. সি. পাশ করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স-এ ভর্তি হবার চিন্তা শুরু হলো। আমরা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম সবকটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফর্ম কিনব। পরীক্ষা ভাল আর খারাপ যাইহোক, কমপক্ষে নতুন কিছু জায়গা দেখা হবে।
আমি, পাপ্পু, রাজীব এবং ইসমাইল একসাথে ফর্ম কিনলাম। সবার প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সবাই বেশ উত্তেজিত এবং রোমাঞ্চিত অনুভব করলাম। সন্তান বাবার কাছ থেকে জীবনের প্রথম মটরসাইকেল উপহার পেলে যেমন পুলকিত অনুভব করে, সত্যি কথা বলতে কি আমার উত্তেজনাও তেমন ছিল বললে ভুল হবে না। কারণ আমি কখনও বাসা থেকে এভাবে একা কোথাও যাইনি। যখনি কোথাও যাওয়ার দরকার পড়েছিল, বাবা অথবা মা সাথে ছিলেন। বন্ধুরা মিলে একসাথে যাবার মজাই যেন আলাদা! পরীক্ষার ভয়ে ঘুম না আসাটা স্বাভাবিক কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সেটা ঘটেনি। বরং একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার ঘটছিল। আমার ঘুম আসছিল না অন্য কারণে- জীবনে প্রথম ঢাকা যাবার সুযোগ, তার চেয়েও বড় কথা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেটা আমি এতদিন শুধু টিভিতে দেখেছি সেটা নিজের চোখে দেখতে পারব! নিজের অবস্থা দেখে মনেমনে হাসি পেল। মনে হল যেন প্রথমবার প্রেমিকাকে চুমু খেতে যাচ্ছিলাম!
আমাদের পরিকল্পনা ছিল পরীক্ষা শুরু হবার দুদিন আগেই ঢাকায় যাব। একটু এদিক ওদিক ঘুরাঘুরি করার আশায়। সময় তার নিজস্ব গতিতে চললো। নির্ধারিত দিন এসে উপস্থিত হলো। সবাই যার যার পরিবার থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দিলাম। বাস সময়মতই ছাড়লো। ঢাকায় পৌঁছে রাজীব আমাদেরকে ভার্সিটির পাশেই একটা সস্তা আবাসিক হোটেলে নিয়ে গেলো। সে এর আগেও অনেকবার ঢাকায় এসেছিল। তার বেশখানিকটা চেনা ছিল এলাকাটা। যাইহোক, ঐদিন আর পড়াশুনার কথা মাথায় আসেনি কারণ সবাই খুব ক্লান্ত ছিলাম। রাতের খাওয়া দাওয়া সেরে সবাই রাজীবের রুমে একত্রিত হলাম। কি করা যায় তাই চিন্তা করছিলাম। হঠাৎ ইসমাইল তার ব্যাগ থেকে তাসের একটা সুদৃশ্য প্যাকেট বের করলো। পাপ্পুতো সেটা দেখে খুশীতে আটখানা। তাস খেলা শুরু হলো। কিন্তু কেন জানি খেলা খুব একটা জমছিল না। ইসমাইল একটা প্রস্তাব রাখল সবার সামনে। সে বললো,
- যারা হারবে তারা শুধু আন্ডারওয়্যার পরে পাঁচ মিনিট রুমের ভিতরে হাঁটবে।
এ কথা শুনে রাজীব অট্টহাসি দিলো। আমি বললাম,
- পাগল নাকি! কি বলছিস আবোলতাবোল?
ইসমাইল বললো,
- কেন, সমস্যা কি? এতে খেলা জমবে ভাল দেখিস। একটা উত্তেজনা কাজ করবে।
আমি উঠে দাঁড়িয়ে বললাম,
- আমার ঘুম পাচ্ছে। আমি এসবে নাই।
পাপ্পু আমার হাত ধরে নীচে নামিয়ে বললো,
- আরে বস, কিছুই হবে না। আমরাই জিতবো দেখিস।
পাপ্পুর এই কথায় আশ্বস্ত হয়ে খেলা শুরু করলাম। কিন্তু আমি একটা শর্ত দিয়ে দিলাম। আমি বললাম,
- যদি আমরা হারি তাহলে আমি আন্ডারওয়্যার পরে হাঁটতে পারবো না। আমার পরিবর্তে পাপ্পু হাঁটবে। প্রয়োজনে সে দশ মিনিট হাঁটবে।
পাপ্পু রাজি হলো। আমি মনেমনে ভাবলাম পাপ্পু এত আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছে! যদি হেরে যাই তখন আত্মবিশ্বাস কোন দরজা দিয়ে পালাবে সেটা দেখার মত বিষয় হবে। খুব সিরিয়াস সবাই। খেলা চলছে সমানে সমানে। সবার চাল মাপা। কেউ ভুল করতে নারাজ। কারণ অর্ধনগ্ন হতে কে চায়? খেলার মাঝখানে পাপ্পু একটা ভুল চাল দিল কিন্তু কেউ সেটা ধরতে পারলো না। সে ইচ্ছে করে দিয়েছিল নাকি ভুলবশত সেই জানে। পরবর্তী ধাপ শুরু হবার আগে ইসমাইল পাপ্পুর চালাকিটা ধরিয়ে দিলো। পাপ্পু বললো এটা একটা ভুল ছিল। কিন্তু ইসমাইল নাছোড়বান্দা। সে তাকে ‘চিটার’ বলে ডাকল। পাপ্পুও রেগে গিয়ে উঠে দাঁড়ালো এবং বললো, “তুই চিটার”। রাজীব এবং আমি দুইজনকে দুইদিকে সরিয়ে দিলাম। পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হলো। আমার এটা ভেবে ভাল লাগলো যে কাউকেই আন্ডারওয়্যার পরে হাঁটতে হলো না!
সকালে নাস্তা সেরে চার বন্ধু মিলে বাইরে বের হলাম। দুই রিক্সায় চড়ে বসলাম। গন্তব্য অজানা। যেদিকে মন চায় সেদিকে গেলাম। ঢাকা আমাকে যতটা মুগ্ধ করবে ভেবেছিলাম ততটা করেনি। যেদিকে তাকাই শুধু মানুষ আর মানুষ। গাড়ীর ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস নেয়াই দায় ছিল। একটা সময় রিক্সা ছেড়ে দিয়ে রাস্তার ধারে চটপটি আর ফুচকা খেলাম পেট ভরে। হোটেলের সামনে যখন আসলাম তখন হাত ঘড়ির দিকে তাকালাম। ঠিক সাতটা বাজে। আর একদিন পরেই পরীক্ষা অথচ আমাদের কারো কোন প্রকার দুশ্চিন্তা ছিলনা। হোটেলে প্রবেশ করার আগ মুহূর্তে রাজীবের চোখ পড়লো রাস্তার পাশে বসা প্যাপার, ম্যাগাজিন ইত্যাদি বিক্রেতার উপর। সে আমাদেরকে সেখানে নিয়ে গেলো। আমি বুঝতে পেরেছিলাম তার আসল মতলব। আমি একটা ম্যাগাজিন হাতে নিলাম। সেটার কাভার পৃষ্ঠায় শাহরুখ খানের ছবি শোভা পাচ্ছিলো। আমি লোকটাকে জিজ্ঞেস করলাম,
- দাম কত?
- একশ টাকা।
আমি আর কথা বাড়ালাম না। ম্যাগাজিনটা জায়গামত রেখে দিলাম। এই ফাঁকে রাজীবকে লক্ষ্য করলাম। সে পাগলের মত কি যেন খুঁজছে ঐ ম্যাগাজিনগুলো উল্টেপাল্টে। পাপ্পু আর ইসমাইল সংবাদপত্রের হেডলাইনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আছে। একপর্যায়ে রাজীব বিক্রেতাকে মৃদু কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
- ঐসব ছবিওয়ালা ম্যাগাজিন নাই?
বুঝতে পারলো রাজীব এতক্ষন ধরে কি খোঁজার চেষ্টায় মগ্ন ছিল। সে যে মনোযোগের সাথে খুঁজেছে, এভাবে খুঁজলে সে হয়তোবা খড়ের গাঁদা থেকে সুঁই খুঁজে বের করতে পারত অনায়াসে! যাইহোক, লোকটা হায়েনার মত হাসি দিয়ে তার সামনে রাখা বাক্স থেকে দুই তিনটা ম্যাগাজিন বের করে রাজীবের হাতে দিলো। রাজীব সেগুলো হাতে নেবার পর তার চেহারার রঙ পাল্টে গেলো। তাকে এত আনন্দিত দেখাচ্ছিল যেন সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় নিজের নাম দেখছে! বিক্রেতার মুখের হাসি এখন স্পষ্ট। সে বললো,
- এইগুলাতো হক্কল জায়গায় রাখন যায় না। বুজেন না। অসুবিদা আচে।
লোকটি শুদ্ধ বাংলায় কথা বলার অনেক চেষ্টা করলো। তবে আমাদের বুঝতে বিন্দুমাত্র সমস্যা হয়নি। ঠিক সেই মুহূর্তে আমি রাজিবকে বললাম, “দোস্ত, এসব কেনা বাদ দে। চল যাই। রুমে গিয়ে একটু পড়াশুনা করি”। পাপ্পুও আমার কথায় একমত হলো। কিন্তু ইসমাইল এবং রাজীবকে কোনভাবেই রাজি করানো গেলো না। শেষপর্যন্ত ওরা দুইটা ম্যাগাজিন কিনে আনলো। তাদের অনুভূতি এতই সুখকর ছিল যেন এভারেস্ট জয় করা হলো! ম্যাগাজিনের প্রতিটা পাতা রগরগে যৌন দৃশ্যে ঠাসা ছিল। ইসমাইল এবং রাজীব খাটের উপর পায়ের উপর পা তুলে একসাথে সেই ছবিগুলো চোখ দিয়ে যেন গিলে খাচ্ছে। আমি ঠিক করলাম আমি ভুলেও ঐ ছবিগুলোর দিকে তাকাবো না। রাজীব আমাকে বললো,
- দেখবি?
- না।
- তুইতো একটা কচি খোকা। এখনও মায়ের দুধ খাস!
- দেখ রাজীব! ট্যাঁরা কথা বলবি না।
- যা সত্যি তাই বললাম। তোর নাক টিপলে এখনও দুধ পড়বে! হা, হা, হা।
ইসমাইল এবং পাপ্পুও সেই অট্টহাসিতে অংশগ্রহণ করলো। আমি অবাক হইনি যখন দেখলাম পাপ্পুও তাদের সাথে যোগ দিয়ে একসাথে ছবিগুলো থেকে কি যেন আবিষ্কার করার চেষ্টা করছে। মন মেজাজ খারাপ ছিল বলে ঐ রাতে আর কার্ড খেলা হয়নি। একটু যে পড়ব তারও উপায় ছিল না। ওরা সব আমার রুমে, আমার খাটের উপর এসব করছে। অনেকবার মানা করার পর কোন কাজ না হওয়াতে আমি একদম চুপ হয়ে গেলাম। নিজেকে গভীর রাতে ঘেউ ঘেউ করা কুকুরের মত মনে হচ্ছিলো যে কিনা অনেক্ষন ধরে কোন এক অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্লান্ত বোধ করে এবং তার বিদ্রোহ থামিয়ে দেয়।
পরদিন সকালে ওরা এসে আমাকে বলল ঘুরতে যাবে। আমি ‘না’ বলতেই রাজীবের মেজাজ খারাপ হলো-
- চল যাই। কালতো পরীক্ষা দিয়েই চলে যাব বাসায়। আজকের দিনটা আমরা একসাথে কাটাই।
- তোরা যা। মাইন্ড করিস না। আমার ইচ্ছে করছে না।
পাপ্পু রাজীবকে উদ্দেশ্য করে বললো,
- আচ্ছা বাদ দে। সে মনেহয় পড়বে।
ইসমাইল একটু খোঁচা দিয়ে বললো,
- বেটা আইনস্টাইনের নাতি!
তারা আর কথা বাড়ালো না। চলে গেলো। আমি রুমে এসে দরজা বন্ধ করে একটু পড়ার চেষ্টা করলাম। পারলাম না। মাথাটা বেশ ব্যথা করছিল। নীচে গিয়ে ঔষধ কিনে আনার ইচ্ছেও হচ্ছিলো না। খাটে গিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলাম। হঠাৎ দরজায় প্রচণ্ড শব্দ শুনে লাফিয়ে উঠলাম। ঘড়িতে ছয়টা বত্রিশ বাজে। কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম টেরই পাইনি। দরজা খুলতেই ওরা তিনজন লাফিয়ে খাটে এসে পড়লো। পাপ্পু বললো, “কিরে কি করলি? পড়ে পড়েতো চোখ ফুলিয়ে ফেলছিস!
-আরে ফাজলামো রাখ। পড়ি নাই।
রাজীব বললো,
- তাহলে কি ডিম পেড়েছিস?
আমার এত রাগ উঠলো যে তা বলে বোঝানো যাবে না,
- হ্যাঁ পেড়েছি। ভেঁজে খা।
ইসমাইল রাজীবকে ইশারায় থামতে বললো। সে আমাকে বললো,
- দোস্ত, খুব মিস করলি আজ। অনেক মজা করেছি।
পাপ্পু বললো,
- সুন্দর সুন্দর মেয়ে দেখছি ওইটা বল।
ইসমাইল বললো,
- রাজীব পার্কে এক অপরিচিত মেয়ের সাথে কথা বলেছে। মেয়েটা জটিল! ভয়ঙ্কর স্মার্ট।
আমি বললাম,
- কোনদিন যে মানুষের মাইর খাবি। তখন বুঝবি।
রাজীব বললো,
- আরে রাখ! আমাকে মারবে? এত সহজ না।
রাতে নাস্তার জন্য বের হলাম একসাথে। রাস্তার ওপারেই একটা ভাল স্ন্যাক্সের দোকান। সেটাতে গিয়ে হাজির হলাম সবাই। যে যার ইচ্ছেমত অর্ডার করে খাওয়া শুরু করলাম। হঠাৎ ইসমাইল বলে উঠলো, “চল আজ পতিতালয়ে যাই”। তার কথা শুনে জেইমস জয়েসের বিখ্যাত উপন্যাস “অ্যা পোট্রেট অব দি আর্টিস্ট এজ অ্যা ইয়াং মান”-এর প্রধান চরিত্র স্টিফেন ডিডেলাসের কথা মনে পড়লো যে কিনা অল্প বয়সে অনেক কুকর্ম করেছিল। এমনকি পতিতার সাথেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। আমি যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
- পাগল নাকি?
- চল যাই।
- কাল পরীক্ষা আর আজ যাব পতিতালয়ে! তোর মাথা ঠিক আছেতো?
- আরে ভাই, চল না।
- ওখানে গিয়ে কি হবে?
- মজার উপর মজা! গেলেই বুঝবি!
- আমার বুঝার দরকার নাই। তোর ইচ্ছা হলে তুই বুঝ গিয়ে।
রাজীবকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে একমত। পাপ্পুকেও সকালের মত বুঝিয়ে ফেলবে দুজনে মিলে। আমি আর কথা না বাড়িয়ে নাস্তার বিল দিয়ে সোজা রুমে এসে ঢুকলাম। পাঁচ মিনিট পর তারা সবাই আমার রুমে এসে হাজির। যা হবার তাই হলো। আমাকে বুঝানোর পালা শুরু। তাদের অবস্থা দেখে আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছিলাম না।
- ওখানে গিয়ে কি করবো?
রাজীব বলল,
- তোর কিছু করা লাগবে না। যা করার আমরা করবো।
- মানে?
পাপ্পু বললো,
- এমন কিছু করবো না যাতে কারো কোন সমস্যা হয়।
ইসমাইলও তার কথায় সায় দিল।
রাজীব বলল,
- চল দোস্ত। সময় খুব কম। প্লিজ চল।
আমি তাকে বললাম,
- ঠিক আছে। যাব তবে এক শর্তে।
- তোর আবার কি শর্ত?
- ওখানে বেশিক্ষণ থাকব না। বেশী হলে আধা ঘণ্টা।
ইসমাইল আর পাপ্পু রাজীবকে চোখ টিপ দিয়ে বুঝিয়ে দিলো যে এতে কারো কোন অসুবিধা নেই।
- ঠিক আছে বাপ! তাড়াতাড়ি কর। দেরী হচ্ছে।
রিক্সা নিতে হয়নি। জায়গাটায় দশ মিনিটেই যাওয়া যায়। হেঁটেই পৌঁছে গেলাম সবাই। তিনতলা বিল্ডিং। দোতলায় প্রবেশ করতেই এমন বিশ্রী একটা গন্ধ নাকে এসে লাগলো যে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। বমি আসার উপক্রম হলো। আমি দেখলাম ছোট ছোট দশ বারটা রুমের সামনে খুব সেজেগুজে বিভিন্ন বয়সের মেয়েরা দাঁড়ানো। কারো গায়ে কামিজ, কারো শাড়ি। মুখে রঙ্গের ছড়াছড়ি। আমাদের দেখে মুচকি মুচকি হাসছে। এক দালাল আমাদের দেখে বললো,
- মাল লাগবো?
রাজীব উত্তর দিলো,
- আমরা মাল ব্যবহার করবো না তবে নগ্ন শরীর দেখবো। কত দিতে হবে?
লোকটি এমন ভাব করলো যেন অন্য গ্রহের কোন প্রাণীর সাথে কথা বলছে।
- কি কন এইগুলা? এইরম অয় নাকি ভাইজান?
- কেন?
- জীবনে এই পরথম হুনলাম কেউ কাম করতে চায় না খালি দেখতে চায়! খে, খে, খে, হি, লোকটির দাঁতের অবস্থা খুব খারাপ। দেখার মত না। পান খেতে খেতে সব লাল হয়ে গেছে। হাসার সময় পানের রস উপচে বের হবার মত অবস্থা। একবার বের হয়ে আমার দিকে উড়ে আসছিল তার আগেই অবশ্য লোকটি অতি দক্ষতার সাথে তা মুঠোবদ্ধ করলো। যাক বাবা, আমার শার্টের বারটা বাজেনি!
লোকটি বললো,
- চরি ভাইজান। এইডা অইবো না।
ইস! রাজীবের করুণ চেহারাটা যদি ফ্রেমবন্দি করা যেত! বেচারা!
আমার খুব খুশি লাগছিল তখন। একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে হোটেলের দিকে রওনা দিলাম। যাবার সময় কেউ কোন কথা বলিনি। আমি আকাশের দিকে তাকালাম। রাজীবের বেআক্কেলগিরি দেখে মেঘের কোণে মুখ লুকিয়ে চাঁদও যেন না হেসে পারছে না!