ক্লাসের সবচেয়ে বদ ছেলেটার নাম বদর। এককথায় বদের হাড্ডি! কলেজে এমন কোনও মেয়ে নেই যাকে সে টিজ বা উত্যক্ত করে না। যেহেতু সে একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী কর্মী, তাই কেউ তাকে খুব একটা কিছু বলার সাহস পায় না।
কখনও যদি কোনও মেয়ে বা মেয়ের প্রেমিক প্রতিবাদ করে, তখন সবার সামনেই সেই প্রতিবাদের খেসারত দিতে হয়। বস্তির ছেলের মত বদর যাচ্ছেতাই গালাগালি করে; তার চক্ষুলজ্জা বলতে কিছুই নেই।
কলেজের অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে সবাই যেন রুমালের মতই তার পকেটের ভেতরে থাকে। একদিন কলেজে ঐশী রহমান নামে একজন নতুন ম্যাডাম আসেন। তিনি বেশ করা মেজাজের। অনিয়ম তার দুচোখের বিষ! আর বেয়াদবি তো কোনোভাবেই সহ্য করেন না।
যাইহোক, একদিন ঐশী ক্লাসে পড়ানো অবস্থায় হঠাৎ তার ফোন বেজে উঠে। তিনি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখেন যে অপরিচিত নাম্বার। যেহেতু ক্লাস নেয়া এখনও শেষ হয়নি তাই ক্লাসের ভেতর ফোনটা রিসিভ করাটা যৌক্তিক মনে হয়নি। তিনি ফোনটা কেটে দিয়ে সাইলেন্ট করে রাখেন।
ক্লাস শেষে ঐশী অফিসে গিয়ে দেখেন যে সেই একই নাম্বার থেকে ৫টি ম্যাসেজ এসেছে। ম্যাসেজগুলো এতো অশ্লীল যে তিনি সেইদিন আর বাকি ক্লাসগুলো নেবার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। তার মাথা কেমন জানি গুলিয়ে আসে! এমন অশ্লীল ম্যাসেজ তিনি আর কখনও পাননি। পরে শর্ট লিভ নিয়ে তিনি বাসায় চলে যান।
ঐশীর স্বামী রুদ্র রহমান অফিস শেষে বাসায় ফিরলে তার সাথে সকালে ফোনে আসা ম্যাসেজের কথা বলেন। রুদ্র সেগুলো দেখতে চাইলে প্রথমে ইতস্তত বোধ করলেও পরে সেগুলো দেখান। রুদ্র খুব খুশী এবং গর্বিত এই ভেবে যে তার স্ত্রী তার কাছে কিছুই লুকায়নি। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক এমনই হওয়া উচিত। দাম্পত্য জীবনে যত বেশী স্বচ্ছতা থাকে, সম্পর্কের দৃঢ়তাও তত বেশী হয়।
রুদ্র ঐশীকে পরম ভালোবাসায় বুকে জড়িয়ে ধরে নিশ্চিন্ত থাকতে বলে। পরদিন দুজন মিলে থানায় যায় এবং মামলা করে। রুদ্র সাহসী বলেই এই সিদ্ধান্ত নেয়, তাছাড়া সে রবি ঠাকুরের কথায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে- অন্যায় যে করে এবং যে সহে দুজনই সমান অপরাধী। তাছাড়া পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার কাছ থেকেও অনেক সহযোগিতা পাওয়া যাবে।
পুলিশ ঐ অচেনা নাম্বার ট্রেস করে আসামিকে ধরে ফেলে। সেই আসামি এখন জেলে। থানার ওসি রুদ্র এবং ঐশীকে একবার থানায় আসতে বলে। তারা আসার পর কারাগারে আসামিকে দেখতে যায়। ঐশীর চোখ কপালে উঠে যায় যখন সে দেখে এ যে তারই ছাত্র ‘বদর’!