১। “দ্যা ফোর উইন্ডস” – ক্রিস্টিন হ্যানা
লেখক ক্রিস্টিন হ্যানার “দ্যা ফোর উইন্ডস” নারীদের শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতা এবং মা ও মেয়ের মধ্যে বন্ধন সম্পর্কে একটি গভীরভাবে চলমান ও শক্তিশালী গল্প। ১৯৩৪ সালের টেক্সাসে এলসা মার্টিনেলি অবশেষে সেই জীবন খুঁজে পেয়েছিল যা সে চেয়েছিল। গ্রেট প্লেইনস-এর একটি খামার মানে সেখানে একটি পরিবার, একটি বাড়ি এবং জীবিকার উৎস। কিন্তু এলসার পৃথিবী ধ্বংস হয় যখন খরা তাকে এবং তার সম্প্রদায়কে ঘিরে রাখে। যখন এলসা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জেগে উঠে দেখে যে তার স্বামী পলায়ন করেছে তখন সে তার জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। একটি দ্বন্দ্ব তাকে পেয়ে বসে- সে পছন্দের জমির জন্য লড়াই করবে নাকি তার প্রিয় সন্তান লোরেডা এবং এ্যান্টকে একটি উন্নত জীবনের সন্ধানে পশ্চিমে ক্যালিফোর্নিয়ায় নিয়ে যাবে। সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সন্তানের জন্য একজন মায়ের অত্যধিক ভালোবাসা, নারী বন্ধুত্বের মূল্য এবং আবার ভালোবাসার সামর্থ্য- বইটিতে এলসার অবিশ্বাস্য বেঁচে থাকার যাত্রা, আশা এবং আমরা যাদেরকে ভালোবাসি তাদের জন্য আমরা কী করি- এসবই বেশ দারুণভাবে চিত্রায়িত হয়েছে।
২। “দ্যা মিডনাইট লাইব্রেরী” – ম্যাট হেইগ
ম্যাট হেইগ –এর “দ্যা মিডনাইট লাইব্রেরী” বইটিতে অনুশোচনা এবং জীবনের প্রকৃত অর্থ প্রতিফলিত হয়েছে। বইটি এই ধারণা দেয় যে জীবন এবং মৃত্যুর মধ্যে একটি গ্রন্থাগার রয়েছে, যেখানে বইগুলোতে একাধিক বাস্তবতার গল্প বিদ্যমান। গ্রন্থাগারিকের সহায়তায় প্রধান চরিত্র নোরা তার জীবনের অনেক সংস্করণের মধ্য দিয়ে যায়। সে ভাবে যে সে তার জীবনে আটকে আছে এবং জীবনকে ঘিরে তার প্রচুর অনুশোচনা এবং প্রশ্ন রয়েছে। লাইব্রেরীতে সে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখে- বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিলে তার জীবন কেমন হতো। সে ভাবে কোন জিনিসটা জীবনকে সত্যিই অর্থবহ করে তুলতে সাহায্য করে। বইটিতে চিন্তার গভীরতা এবং চিন্তাপ্রবণতা আছে যা পাঠকের বিবেককে জাগ্রত করবে।
৩। “উইন” – হারলেন কোবেন
“উইন” একটি ভয়ানক গল্প। ১৯৯০-এর দশকে উইনের চাচাতো বোন প্যাট্রিসিয়াসহ বেশ কয়েকজন নারীকে কয়েক মাস ধরে আটকে রাখা হয় এবং তাদের উপর যৌন নির্যাতন করা হয়। বলাই বাহুল্য যে এটি একটি সাহসী লেখা। চরিত্রগুলোর মধ্যে আত্মমগ্নতা, বিপথগামীতা এবং প্রতারণার উপস্থিতি রয়েছে। এটি একটি তীব্র, রহস্যময় গল্প যেখানে বিপদ, উত্থান-পতন, সহিংসতা, গোপনীয়তা, নাটকীয়তা, বলপ্রয়োগ, হট্টগোল, আকর্ষণ এবং হত্যা বিদ্যমান। সামগ্রিকভাবে, হারলেন কোবেন-এর উপন্যাসে একজন পাঠক যা আশা করতে পারেন, “উইন” এ সেসব উপাদান আছে। তাছাড়া একটি অ্যান্টিহিরো বা খলনায়ক রয়েছে যাকে পাঠক ঘৃণা না করে পারবেন না। বইটি বেশ আসক্তিপূর্ণ এবং একটু অন্য রকম।
৪। “ইটারনাল” – লিসা স্কটোলিনি
লিসা স্কটোলিনি নারী-কেন্দ্রিক আইনী থ্রিলার লিখতে বেশি পছন্দ করেন। তার উপন্যাসগুলোতে বিষয়বস্তু হিসেবে থাকে- ন্যায়বিচার, পরিবার এবং সম্মান। তার নতুন বই “ইটারনাল”-এ এই বিষয়গুলো একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। উপন্যাসটির ঘটনাগুলো আবর্তিত হয় ইতালিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এবং চলাকালীন সময়ে। বইটিকে একটি সফল ঐতিহাসিক উপন্যাস বললে ভুল হবে না। এটিতে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য এবং সম্পর্কিত চরিত্র রয়েছে। বইটি দৈনন্দিন মানুষ, বিশেষ করে মহিলাদের সম্পর্কে [ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাসের ক্রমবর্ধমান তালিকায় একটি স্বাগত সংযোজন] যারা তৃতীয় রাইখকে পরাজিত করার জন্য যতোটুকু পেরেছিল ততোটুকুই চেষ্টা করেছিল। এককথায় বলা যায় যে সাসপেন্স বাড়াতে স্কটোলিনির তুলনা নেই। “ইটারনাল”-এ পাঠকগণ ঘৃণা এবং সহিংসতার মিশ্রণ দেখতে পান যেখানে ইহুদিদেরকে অশউইটসে পাঠানোর আগে ক্যাম্পে আটক করে রাখা হচ্ছে।
৫। “লাইফ আফটার ডেথ” – সিস্টার সাউলজা
“লাইফ আফটার ডেথ” উইন্টার-এর গ্রেফতারের দিকে দৃষ্টিপাত করে এবং সে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে কী ঘটে তা উন্মোচিত করে। ব্রুকলিনের বিশিষ্ট ড্রাগ-ডিলিং পরিবারের বড় মেয়ে “স্পটলাইটে ফিরে আসতে এবং তার সিংহাসন পুনরুদ্ধার করতে প্রস্তুত”, কিন্তু উইন্টার যেভাবে পরিকল্পনা করে, ঘটনাগুলো সেভাবে ঘটে না কারণ তার বন্ধুরুপী শত্রু সিমোন প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। “লাইফ আফটার ডেথ” বইটিতে উপস্থিত বিষয়বস্তুগুলো হচ্ছে- অতিরিক্ততা, ড্রাগ সংস্কৃতি, এবং সহিংসতার কীর্তন। একজন পাঠককে বইটি ধীরে সুস্থে পড়া উচিত যদি তিনি কিছু বিষয় স্বচ্ছভাবে জানতে চান- উইন্টার সত্যিই মারা গেছে কিনা, সে পরিত্রাণের পথে এগুচ্ছে কিনা, অথবা সে কিছুটা প্রতিশোধ নেবে বা নিতে পারবে কিনা।
৬। “দ্যা কনসিকুয়েন্সেস অব ফিয়ার” – জ্যাকলিন উইনস্পিয়ার
“দ্যা কনসিকুয়েন্সেস অব ফিয়ার” ১৯৪১ সালের পটভূমিতে রচিত। মেইসি ব্রিটিশ সরকারের জন্য কাজ করে। কোন স্বেচ্ছাসেবকরা গুপ্তচরবৃত্তির জন্য উপযুক্ত, তা নির্ধারণে সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তার পেশাগত জীবনের উভয় অংশ একটি বিন্দুতে আসে যখন ফ্রেডি নামে একটি ছেলে তার কাছে আসে। ব্লিটজের ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলোর একটির নিকটে একটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল এবং ফ্রেডি এটার সাক্ষী। এই ছেলেটি ও মেইসি হত্যার বিষয়ে হতবুদ্ধি হলেও সে ছেলেটি এবং তার প্রিয়জনদের জন্য একটি নিরাপদ স্থান নিশ্চিত করতে চায় যাতে হত্যাকারী এবং ফ্রেডির হিংস্র বাবার হাত থেকে তাদেরকে নিরাপদে রাখা যায়। পরিশেষে বলা যায় যে “দ্যা কনসিকুয়েন্সেস অব ফিয়ার” একটি পরিবর্তনশীল গল্পের মতো।
৭। “দি ইনভিজিবল লাইফ অব এডি লারু” – ভি ই শোয়াব
জাদুকরী বাস্তববাদের এই কাহিনীতে অনেক বিষয়বস্তুর উপস্থিতি লক্ষণীয়— ভূত, অভিশাপ, অমরত্ব ও পৌরাণিক দেবতা। বইটির প্রধান চরিত্র হিসেবে আছে সপ্তদশ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণকারী একজন ফরাসি মেয়ে; তার বয়স ২৩ বছর। নিঃসন্দেহে এটি এডির গল্প; একজন অমর সত্তা হিসেবে ৩০০ বছর ধরে তার অভিজ্ঞতা প্রতিফলিত হয়েছে। বইটি ২০১৪ সালের নিউ ইয়র্ক, গত ৩০০ বছর ধরে এডির যাত্রা এবং যে পরিস্থিতি তাকে “রাতের দেবতা”র সাথে চুক্তি করতে পরিচালিত করেছিল সেসব সম্বন্ধে জানতে ও বুঝতে সহায়তা করে। পাঠকগণ এডি এবং তার সংগ্রাম সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে পারেন যেখানে সে কারও কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরে অন্যরা তাকে তৎক্ষণাৎ ভুলে যায়— সে বুদ্ধিমান, অগোছালো এবং কিছুটা অনৈতিক মানুষে পরিণত হয়। শোয়াবের গদ্যটি সৌন্দর্যে ও গীতিময়তায় পরিপূর্ণ। এটি শিল্প, প্রেম এবং আমরা যে গল্পগুলো বলি তার উপর একটি সুন্দর রোমন্থন হিসেবে কাজ করে।
৮। “দ্যা বাউণ্টি” – জ্যানেট ইভানোভিচ এবং ষ্টিভ হ্যামিল্টন
“দ্যা বাউন্টি” অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার ও থ্রিলারধর্মী। এতে বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয় লক্ষণীয় এবং কাহিনী নিরবচ্ছিন্নভাবে এগিয়ে চলে। এছাড়াও খুঁজে বের করার জন্য প্রতীক এবং মানচিত্র রয়েছে; ক্রমান্বয়ে রহস্য উন্মোচনের সূত্র, সমাধানের জন্য ঐতিহাসিক অনুপাতের একটি ধাঁধা এবং লুকোনো গুপ্তধন খুঁজতে হবে। খারাপ লোকেরা মানবজাতির জন্য ক্ষতিকারক উদ্দেশ্যে সেই গুপ্তধনটি খুঁজে বের করার এবং ব্যবহার করার আগেই এসব উল্লেখযোগ্য কাজ শেষ করতে হবে।
৯। “ক্লেরা এন্ড দ্যা সান” – কাজুও ইশিগুরো
“ক্লেরা এন্ড দ্যা সান” উপন্যাসটি একজন কৃত্রিম বন্ধু ক্লেরার চোখ দিয়ে বন্ধুত্ব, প্রেম এবং অনুভূতি প্রতিফলিত হয়। ইশিগুরো তার এই অষ্টম উপন্যাসে আরেকটি বিকল্প বাস্তবতা উপস্থাপন করেছেনযা পাঠকগণের দৃষ্টি এড়ায় না। বইটিতে জলবায়ু সংকট এবং চরম প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। উপন্যাসটিতে একটি পরিচিত কিন্তু খুব আলাদা এ্যামেরিকা উপস্থাপিত হয়েছে। জোসি এবং তার মা 'স্টোর' থেকে আরও ব্যয়বহুল ও অত্যাধুনিক বি৩ মডেলের পরিবর্তে সৌরশক্তি চালিত ক্লেরা কেনেন। ক্লেরা তখন তাদের সাথে বাড়িতে ফিরে এসে তাদের জগৎ এবং পারিবারিক সম্পর্কের টুকরোগুলো একত্রিত করার কাজ শুরু করে।
১০। “ডার্ক স্কাই: এ জো পিকেট নভেল”– সি জে বক্স
“ডার্ক স্কাই”-এ বক্স একটি অসাধারণ এবং উৎকণ্ঠাময় গল্পের ভিত্তিস্থাপন করেছেন। বইটির চরিত্রগুলো বহুস্তরীয় এবং পরিচিত। ওয়াইওমিং নিজেই একটি বাস্তব চরিত্র। বক্স একসাথে বিভিন্ন বিষয়ের সমন্বয় ঘটান- শহুরে জীবন, পাহাড়ে জীবন ও মৃত্যুর সংগ্রাম এবং দুর্বৃত্ত বাজপাখি শিকারীদের সন্ধান। যথারীতি বক্স সর্বদা এমন একটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেন, এ্যামেরিকান গল্পের উপর যেটি প্রভাব বিস্তার করে। সামাজিক মাধ্যম এবং দৈনন্দিন জীবনে এর প্রভাবকে দক্ষতার সাথে তুলে ধরা হয়েছে। মানুষ অনলাইনে বেনামী, বাজে মন্তব্য করছে যা বাস্তব জীবনে অনেক দুঃখজনক ঘটনার জন্ম দিতে পারে।