নিজের জীবনের উপরে কিছুটা ঘিন্না ধরে গেছে। অনেক কিছুই করার ছিল কিন্তু কিছুই করতে পারছি না। ছোট ছোট জিনিস নিয়ে মাথা ঘামানো তো আমার কাজ না, কিন্তু এখন আমি ছোটলোকের মত তাই করছি। সামান্য একটা shower cream এর বোতল কেন অর্ধেক হয়ে গেল তাই নিয়ে আমার মেজাজ গরমের সীমা নাই। অযথা শেফা সহ বাসার সবার সাথে খারাপ ব্যবহার ক্রএ ফেললাম। মাত্র দুই দিন আগে আমার বাথরুম থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন দেখি তা অর্ধেক হয়ে গেছে। এটা সত্য যে মাত্র তিন চার দিনে এটা কিছুতেই ব্যবহার করে অর্ধেক শেষ করা যায় না। কিন্তু হয়ে গেছে। অযথাই আদুরীর উপরে মেজাজ গরম করে ফেললাম। ওকে charge করে বসলাম, হয় তুই শেষ করছিস আর নাহয় এটা দিয়ে বাথরুম ধুইছিস! সম্পূর্ণ অযৌক্তিক কথা। আমার হম্বিতম্বি দেখে আব্বুও ওকে জিজ্ঞাসা করলো। বেচারী কাঁদ কাঁদ হয়ে গিয়ে বলল, সে এমন কিছু করে নাই। আমি শেফা কে বললাম, জিনিসটা আমার বাথরুম থেকে না নিয়ে আসতে। কেন বললাম আমি এসব? শেফা তো আমার জন্য অত কিছু করে। অথচ আমি ছোটলোকের মত সামান্য জিনিস নিয়ে কি না করলাম। আমার উপরে হাজার হাজার ছিহ! সেই সাথে কিছু থুহ!
JUST এর ফর্ম সার্কুলার পড়ে দেখলাম সবগুলা কাগজের ১১ টা কপি জমা দিতে হবে। আবার সেই সব কাগজ attested করানো থাকতে হবে। এতগুলা কাগজ! আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো সেই দুপুর থেকেই। কতগুলা প্রিন্ট নেয়া লাগলো এরপর একগাদা টাকার দন্ডি দিয়ে সেগুলা ফটোকপু করানো! সামান্য ৬টাকার দুইটা স্ট্যম্প কিনতে আমার যাওয়া লাগছে সেই মিরপুর ২ নাম্বার এ। এক এর পরে এক কাজ জমে আছে। রাতে নেট এ বসলাম। সেটাও শেফা ম্যানেজ করে দিয়েছে। অথচ আমি কি নোংরা! ছিহ ছিহ! নেট এ বসে জানতে পারলাম যে পাকিস্তান এর NUST এর Human resource department আমাকে পছন্দ করে মেইল করেছে। ওদের ফাইনাল অফার পেতে আমাকে আরো একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমি মালেশিয়া’র ইন্টারভিউ এর অপেক্ষায় আছি। আল্লহ পাকের রহমত হলে সম্ভব। আমি মালেশিয়া যেতে চাই!
দুপুরে ইউসুফ ভাই ফোন করে দুঃসংবাদ টা দিলেন। আজ জোহরের ওয়াক্তে ইন্তেকাল করেছেন দিল্লি নিজামুদ্দিন মারকাজ এর শুরা মাওলানা জুবায়েরুল হাসান সাহেব (রঃ)। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন)। বিগত দুই দশক ধরে প্রায়, বিশ্ব ইস্তেমা'র দোয়ার আগে সংক্ষিপ্ত বয়ান এবং মুনাজাত পরিচালনার দায়িত্ব ছিল মাওলানা জুবায়রুল হাসান সাহেবের উপরে। বিশ্ব ইস্তেমা'র শুক্রবার এবং শনিবার বাদ আসর বয়ানের দায়িত্ব উনার উপরেই ন্যস্ত ছিল। একজন আলেমের মৃত্যু কোন কিছু দিয়েই পূরণীয় নয়। আমার সবসময় ইর্ষা হত এই জন্য যে, আমার কণ্ঠটা যদি উনার মত হত! আল্লহ পাক মাওলানা জুবায়ের সাহেব কে জান্নাতুল ফিরদাউসের উন্নত মর্তবা দান করুন। আমিন! আজকে সারাদিন আমার এই নিয়ে মন খারাপ। সিঙ্গাপুরে মাহবুব ভাই সহ যেখানেই ফোন দিসি, দেখি সবাই জানে। আমিই জানলাম পরে পরে। আমি কিছুতেই মন থেকে মুছে দিতে পারছিনা। আল্লহ পাক উনাকে অনেক অনেক সন্মানের আসনে অধিষ্টিত করুন। এইবার বিশ্ব ইস্তেমাতেও শুক্রবারে আমি আসরের পরে উনার বয়ান মিম্বর এর কাছে গিয়ে শুনেছি। মন থেকে উনাকে কখনও ভুলতে পারবোনা আমি।