সকালে ঘুম থেকেই উঠেই মন মেজাজ কেমন যেন খিচড়ে গেলো। কোন কারণ ছাড়াই। ভাল লাগছিল না কিছুই। বেকার মানুষের মন মানসিকতার কি কোন ঠিক ঠিকানা আছে? ফজরের নামাজের পরে মাশওয়ারাতে বসা হল। কিন্তু বুধবার ছিল বিধায় আমার হাল্কার মাশোয়ারাতেও যেতে হবে। বিয়ে শাদীর সুন্নাত নিয়ে কথা উঠলো। নানা ধরনের কথা হচ্ছিল। এর মধ্যে মাসজিদের উলটা দিবে বসা এক লোক আমাদের কথার কারণে নাকি জিকির ঠিক মত করতে পারছিল না তাই আমাদের আস্তে কথা বলার জন্য মাসজিদের খাদেম আনোয়ার ভাই কে দিয়ে বলালো। আনোয়ার ভাই যেহেতু মাসজিদের কর্মচারী কাজেই তাকে সবদিক দেখে শুনে চলতে হয়। উনি মাসজিদ্র মাঝখানে দাড়ায়ে জোরে জোরে আমাদের কে বলল, আমরা যেন আস্তে কথা বলি। অনেক কষ্টে নিজের রাগকে নিজের মধ্যে হজম করে নিলাম। এটা আমার স্বাভাব বিরুদ্ধ একটা কাজ। আমার মনে হচ্ছিল ঐ অভিযোগকারী লোকটাকে লবণ ছাড়াই কাঁচা খেয়ে ফেলি। এর মধ্যে ডাঃ আব্দুস সামাদ ভাই মন্তব্য করে বসলেন, সাহাবীরা তো গরীব ছিলেন। মনে মনে মেজাজ আরো বিগড়ায়ে গেলো। আমি উত্তর দিলাম কিন্তু আমার কন্ঠে রুক্ষতা টের পেলাম আমি নিজেই। আমি বলে বসলাম, আব্দুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) ৩০ হাজার গোলাম আযাদ করছিলেন কি বাতাস দিয়ে? ... অন্যরা কে কি মনে করেছিল জানি না কিন্তু আমার পরে খারাপ লেগেছে। আমি এমন কঠোর ভাবে উত্তরটা না দিলেও পারতাম। এরপরে আমি, কুদরত ই খুদা ভাই আর ডাঃ আলতাফ সাহেব গেলাম হাল্কার মাশোয়ারাতে। ৮টা পর্যন্ত ছিলাম। এরপরে গেলাম মেহেদীকে পড়াতে। পড়ানোর শেষভাগে মমে হল, কাল নাইমার সাথে কিছু বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ওকে একটু দেখে আসি না হয়। sms লিখে পাথালাম যে, আমার জন্য নাস্তা রেডী কর। আমি আসতেসি। পরে হাটতে হাটতে ওর সাথে আমার কথা হল। আমি চলে গেলাম শ্বশুরবাড়ী। ঘরে ঢুকেই মনে হল, আগুনে যেন পানি ঢালা হল। সবার মুখ দেখে মনে হল পারিবারিক উত্তপ্ত কথাবলার জন্য সবাই প্রস্তুত ছিল কিন্তু আমাকে দেখে সেটা সম্ভব হল না। আমার শ্বশুর কিছু হাল্কা কথা হলে পরিবেশ ঠান্ডা করতে চাইলেন। উনার কথার মূল বিষয় হল, উনার মেয়েরা সবাই তাদের স্বামীর উপরে খবরদারী করে আর অনেক তেজী আচরন করে। নাইমা আমাকে জোর করে ড্রইং রুমে নিয়ে গেলো। কারন আমার উপস্থিতিতে উত্তপ্ত কথা বলা সম্ভব না। নাইমা আমার সাথে একটু কথা বলে আবার একটু আলাপে অংশ নিতে যায়। ওদিবে নাস্তা বানাচ্ছে বলে দিল। আমি মোবাইলে এস্তেমার বয়ান শুনতে লাগলাম। এরপরে নাস্তা আসলো কিছুক্ষণ পরে। ভরপেট খেয়ে নিয়ে মনে হল একটু বিশ্রাম আর না করলেই নয়। সেই রাত ৪:৩০ থেকে একনাগাড়ে কাজ করে যাচ্ছি। দোতনা গেলা একটু শোবার জন। নাইমাও গেল। কিন্তু আমাদের দেখে সামি এসে উপস্থিত। আমার সাথে কিছুক্ষন থাকবে। খাটে উঠে যে জানালো, নাইমা ফুফুর কাছ থেকে ওর একটা ভাইয়া লাগবে। কারণ ওর একতা ভাইয়া হলে টিসুম টিসুম করে মারামারি করতে পারবে। কিছুক্ষণ পরে সামি চলে গেলে আমি একটু ঘুমালাম মনে হয়। অল্প সময়ের জন্যই হবে। আম্মু ফোন দিল ১২:৩৮ এর দিকে। আমাকে মনে করায়ে দিল আমার একট আবিয়ের দাওয়াত আছে। প্রতিবেশী আবুস সাত্তার কাকার ছেলে রিমনের বৌভাত। দাওয়াত কার্ডটা দিয়েছিল আমার নামে। আমি যেটা দেখ অবাক হয়েছিলাম। দুপুরের নামাজের পরে দাওয়াত ছিল। আমি তড়িঘটি করে নাইমাদের বাসা থেকে চলে আসলাম।
বিয়ে খেলাম কিন্তু বর কনে কারো দেখা পেলাম না। গিফট কি নেব না নেব চিন্তা করে মাসজিদের পাশের গিফট শপ 1-99 এ গেলাম। গিয়ে আমি মুগ্ধ। দেবার মত অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস আছে। আমি এক্তা আয়াতুল কুরসি আর একটা candy-pot কিনে নিলাম। আমার খুব পছন্দ হল। দুপুরে খেয়ে একটু ঘুমাতেই হল। ভীষণ ক্লান্ত লাগছিল। এরপরে বিকালে উঠে আবার গেলাম নাইমাদের বাসায়। ফুয়াদ তাকিয়াদের পড়াতে হবে। ওদের পড়ায়ে রাতে যখন আসতে যাব তখন শুনলাম আজকেই সাফিয়ার জন্মদিন। আমি চলে আসতে যাব তখন দেখি সামি তৈরী হচ্ছে সাফিয়াদের বাসায় যাওয়ার জন্য। ওর সাথে তাকিয়া যাবে। গেটের বাইরে শামসু দুলাভাইদের গাড়ি দাড়ায়ে আছে। নাইমা বলল, ওদের সাথে গিয়ে নেমে পড়। রিক্সায় যাওয়ার দরকার নেই। কিন্তু শামসু ভাই আমাকে দেখে ফেলেছেন। উনি আমাকে ছাড়বেন কেন? উনি আমাকে নিয়ে গেলেন এবং যথারীতি উনাদের বাসায় নিয়ে গেলেন। নাস্তা হলেও আমাকে কিছু খেতেই হবে। অথচ একটু আগেই আমি আমার শ্বশুরের সাথে ভাত খেয়েছি। উনি শুনবেন না। আমি আপাকে বললাম, আমাকে চিকেন ফ্রাই আর একটু ড্রিংস দেন। তাই খেয়ে চলে আসলাম। দুলাভাই এর ড্রাইভার আমাকে পৌছে দিল। বাসায় এসে কিছুক্ষনের মধ্যে ঘুমে তলিয়ে গেলাম।