নিষিদ্ধ উপাখ্যান-৯

সাবেক পর্ন তারকা জার্সি জাক্সিন তানিয়া নিজেই বললেন তার সাবেক অভিশপ্ত জীবনের কথা। শুনুন তার নিজের ভাষ্য-

পর্ন জগতে আমি ছিলাম সবচাইতে কনিষ্ঠদের মধ্যে একজন। আমি টিন-পর্ন মুভিতে অভিনয় করতাম। লোকেরা খুব পছন্দ করতো। আমি পর্ন জগত ছেড়ে দেই ২০০৭ সালে। এক কথায় যদি আমি আমার সেই জীবনকে আখ্যায়িত করতে চাই তাহলে বলা যেতে পারে- ‘নিগৃহীতা’! পর্ন ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞতা অনেক ভয়াবহ। আমার প্রথম দুইটা সিন ছিল খুব অসহনীয়। কি করতে হবে আমি কিছুই বুঝতাম না। অন্যরা যা করছিলো মুখ বুঝে সেটা অনুকরণ করা ছাড়া আমার কিছুই করার ছিল না। এরপরে আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া হল। প্রথম মাসেই আমাকে ২০ টার মত সিন করতে হল।

আমি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়তাম। ওরা আমার সাথে এমন ভাবে ব্যাবহার করতো যেন আমি একতাল মাংসের টুকরা ছাড়া কিছুই নই। যেন আমাদের হৃদয় বলতে কিছু নেই, আমাদের শরীর ওদের সবার জন্য আর আমরা রক্ত-মাংসের কোন মানুষ না। লোকেদের মন চাইলে মুখে ঘুসি মেরে দেয়। সারা চোখে মুখে অনেকগুলো মানুষের বীর্য মাখিয়ে বসে থাকতে হয়। পেটের ভেতরের নাড়ি ভুড়ি পর্যন্ত ঘৃনায় বের হয়ে আসতে চায়। কিন্তু এর যেন কোন শেষ নেই। এখানে আমাকে দেখা হত একটা আত্মাহীন জড়বস্তু হিসাবে। মানুষ হিসাবে আমার কোন মূল্য কারো কাছেই ছিল না। কেউ তোয়াক্কা করে না। এখানে লোকেরা ড্রাগ নিতে বাধ্য হয় কারণ এগুলো সহ্য করা সম্ভব নয়।

৭৫% পর্ন তারকা ড্রাগ ব্যাবহার করে কারন তারা নিজেদের অনুভুতিগুলোকে ভোঁতা করে নিতে চায়। এখানে যে সব ডাক্তাররা কর্মরত আছে, তারা পর্ন তারকাদের ইচ্ছা মত ড্রাগ সরবরাহ করে। এসবের মধ্যে আছে ভিকোডিন, ভায়াগ্রা বা অন্য কোন কিছু। এখানে টাকা ছাড়া কেউ কিছুই বোঝে না। এখানে আমাদের মত মানুষ শুধু একটা অবহেলিত সংখ্যার মত! তুচ্ছ নগন্য! ঘৃনায় যদি কারো পেট থেকে কিছু বের হয়েও আসতে চায়, তাতেও কারো কিছুই যায় আসে না। কে মরলো কে বাঁচলো কিছুর পরওয়া কেউ করে না। যেসব ড্রাগ এখন খুব চলে, সেগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে ক্রিস্টাল মেথ, কোকেন, আর হেরোইন। পর্ন এ অভিনয় করার আগে নিজেকে অবশ করে নেয়া আবশ্যক। যদি কেউ বেশী করে কাজ করতে চায় তাহলে তাকে অবশোই নিজেকে বেবোধ বানিয়ে ফেলতে হবে। পর্ন আর ড্রাগের উপরে যে জত বেশী আসক্ত হয়ে পড়বে, তার ব্যক্তি জীবন বলতে আর কিছুই বাকী থাকবে না। নিজের জীবনটাই একটা জলজ্যান্ত পর্ন মুভিতে পরিণত হয়ে যায়।

আমি নিজেও মদ্যাসক্ত ছিলাম। আমি নিয়মিত ভদকা খেতাল। এটা ছিল আমাকে অবশ করার ওষুধ। সেটের ভেতরে বাইরে সবাই এখানে ড্রাগের পর ড্রাগ নিতে থাকে। মাত্রও ৪৫ মিনিটের একটা মুভি করতে আমাদের ১৩ ঘন্টা সময় লেগে যেত প্রায়। ভীষণ ক্লান্ত, অবসন্ন, রক্তাক্ত, ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতাম আমরা। সারাটা দিন একগাদা লোকের বীর্‍্য আমাদের মুখে মেখে থাকতো! আমরা এইগুলা ধুতেও পারতাম না কারণ এগুলার বিভিন্ন স্টীল পিকচার নেয়া হবে! এই সব নোংরা সারা মুখে নিয়ে আমাদের শুনতে হত, ‘ভালো মত মেখে নাও’! সাধারণ মানুষের কোন যৌনাচারের মধ্যে এইসব থাকে না।

সেটে একটা মেয়ে মাত্রও চারটা শব্দ উচ্চারণ করতে পারে! স্টপ, হল্ট, পেইন আর ডোন্ট! আমরা যাই বলি না কেন, কার কিছুই যায় আসে না! তাদের যা করার সেতাটা তারা করেই যাবে। যখন অসহ্য হয়ে যেতাম তখন হয়ত পুরুষ অভিনেতার উরুতে এক্তু চাপ দিয়ে বুঝাতাম যে আর সহ্য করতে পারছি না! কিন্তু কেউ সেগুলা তোয়াক্কা করতো না! কারণ এর পরে তাদের আরেকটা অভিনয় করতে হবে। আমার কথা শোনার সময় কোথায়? কে ব্যথা পেল না পেল তাতে এসব মানুষের কিছুই যায় আসে না। পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে মানবতার কোন লেশমাত্র কোথাও নেই।

(সংগৃহীত এবং অনুবাদিত)

Author's Notes/Comments: 

11th December 2012

View shawon1982's Full Portfolio