পর্ন তারকা নিসা কিভাবে এই অভিসাপ থেকে মুক্ত হল সেটাই শুনুন ওর নিজের কথায়-
আমি ছোটবেলা থেকেই একটু বোকাসোকা ধরণের ছিলাম। মা আমাকে জীবনের মূল্যবোঢ শেখাতেন আর বাবা আমাকে দেখতে চাইতেন তার নিজের মত করে। আমার বড়ো দুই ভাই ছিল। যখন আমি ৪র্থ গ্রেডে পড়ি তখন আমার বাবা মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। আমার পুরা পৃথিবী মনে হল যেন সংকীর্ণ হয়ে গেল। আমার ভাই যে কিনা আমার চেয়ে মাত্র দুই বছরের বড় ছিল, আমাকে শারিরীক আর মানসিক দুই ভাবেই কষ্ট দিত। আমি ভাবতাম ভাইএর কাছ থেকে এই আচরণ মনে হয় স্বাভাবিক। আমি এটা মেনে নিয়েছিলাম। যদি আমার কোন বন্ধু আসতো বাসায় তাহলে আমার ভাই আমার সাথে চিৎকার করে তুলকালাম কান্ড শুরু করে দিত। এরপর থেকে আমাদের বাসায় আমার বন্ধুরা আসা বাদ দিয়ে দিল। পরে ওকে বাবার কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আমার বয়স তখন ১৬ বছর। মায়ের নিজেকে একা একা লাগতো আর এ থেকে সে মদ্যাসক্ত হয়ে পড়ে। আমাকে আমার বাসায় থাকতে হত আমার মাকে দেখে শুনে রাখার জন্য। চারিদিকে ভালো মন্দ কি হচ্ছে সেটা বিচার করার ক্ষমতা তখন তার ছিল না।
এই সব নাটকের মধ্যেও আমি ছিলাম একটা ‘ভালো মেয়ে’। বাসার আর স্কুলের সব নিয়ম আমি মেনে চলতাম। আমি কখনো উলটা পালটা কিছু করি নাই, আর ১৮ পর্যন্ত আমি নিজেকে কুমারী রাখতে পেরেছিলাম। আমি ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত কোন ছেলেকে চুমু দিতে পারি নাই। এই নিয়ে আমি মন খারাপ করতাম। ছেলেরা জানতো যে আমার পক্ষে চুমু’র সীমা ছাড়িয়ে অন্য কিছুতে যাওয়া সম্ভব নয়, তাই তারা আমার বান্ধবীদের নিয়ে বিছানায় যেতে বেশী আগ্রহী ছিল। ওরা কেই চাইতো না যে আমি ওদের সাথে থাকি। আমি ওদের কে একটু অপেক্ষা করতে বলতাম কিন্তু ওরা এক মাসের বেশী কেউ থাকতো না। তখন আমার মনে হত লাগলো, যৌনাচার ছাড়া মনেহয় কোন ছেলে বন্ধু আমার কপালে আর জুটবে না। আর এটাই একমাত্র উপায়।
আমি বিদ্রোহী হয়ে উঠলাম আর ‘গোথ’ (উগ্র বেশভুসা সম্পন্ন) দের সাথে ঘুরতে শুরু করলাম। আমি বেশ জনপ্রিয় একজন গোথ হয়ে গেলাম। এর মাস খানেক আগে থেকে আমি টেলিফোনে উত্তেজন যৌনালাপে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম। এটা ঠিক আমার ১৮ বছর বয়সে, আমার হাই স্কুল থেকে গ্রাজুয়েশনের আগের ঘটনা। এটাই আমার যৌনলিপ্সু মানসিকতার প্রথম পদক্ষেপ ছিল।
২০ বছর বয়সে আমি স্ট্রিপিং শুরু করি। আমি একটা ক্লাবে নাচতাম। ক্লাবের ফটোগ্রাফার আমার কাছে এসে এক ম্যাগাজিনের জন্য নগ্ন পোজ দেবার কথা প্রস্তাব দিলো। ওখানে গেলাম, পরে দেখলাম নগ্ন করে ওরা ভিডিও করছে। ছেলেদের সাথে, মেয়েদের সাথে, গ্রুপে বিভিন্ন ভাবে আমার অনেকগুলা ভিডিও করা হয়ে গেল ওদের সাথে। এটাই ছিল পর্নে আমার যাত্রার সূত্রপাত।
আমি কিছু বিরতি দিয়ে প্রায় ১০ বছর পর্ণে কাজ করেছি। ওখানে আমার নাম ছিল ‘নিসা’ আর আমি প্রায় ২৭ টা মুভি করেছি। ২০০৬ এর নভেম্বরে আমার শেষ শ্যুটিং ছিল। এটা খুবি জঘন্য, ভীতিকর আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ছিল আমার জন্য। ওরা বিভিন্ন যৌনত্তেজন খেলনা দ্রব্যাদি বার বার ব্যবহার করতো। বেশীর ভাগ সময় ওরা নতুন কিছু কিনতে চাইতো না। সস্তা যেগুলো ১০ ডলারের মধ্যে পাওয়া যায় শুধু সেগুলোই কিনতে চাইতো। আমি দেখতাম মেয়েগুলোর যোনীতে জ্বালাপোড়া দেখে দিয়েছে। কোন একটা বেদনাদায়ক সিন করার পরে আমাদের ঐ ধকল কাটাতে অনেক লম্বা সময়ের ছুটি নিতে হত। কিন্তু ডিরেক্টর, ক্যামেরামান আমাদের তাগাদা দিত যত দ্রুত আমরা আসতে পারি যেন চলে আসি। কোম্পানী মেয়েদের বাড়তি সময় দিতে চাইতো না একেবারেই। বেশীর ভাগ সময় এমনও দেখা গেছে একটা শ্যুটিঙের পরে গোসলের সময়টাও দিত না। কোন সোফায় বসে শ্যুট করার পরেও আমার মনে হয় ওরা সেটা পরিস্কার ও করতো না।
সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে যখন আমাকে ভীষণভাবে মানসিক আর শারীরিক ভাবে ধর্ষণের শিকার হতে হয় ম্যাক্স হার্ডকোরের সাথে একটা মুভি করার সময়। এটাই সবচাইতে জঘন্য আর ভয়াবহ ঘটনা ছিল আমার জন্য। আমি খুব কষ্ট আর ভয় পাই এই ঘটনায়। এই শ্যুটিঙের পরে আমি ক্লিনিতে টেষ্ট করাতে যাই। আমি জানতে পারে ভয় গেয়ে গেলাম যে আমার গালে ক্লামাইডিয়া বা গনোরিয়া কিছু একটা ধরা পড়েছে। আমি ওর সাথে মৈথুন বা পায়ুমৈথুন করি নাই, কারণ তখনও আমার HIV টেস্ট রেজাল্ট আসে নাই। সে আমাকে মুখ দিয়ে শিশ্ন লেহনের শ্যুটিং করে যেতে বললো। আর এই একটা শ্যুটিঙের পরেই আমার ঐ ভয়াবহ যৌনব্যাধি ধরা পড়ে। আমি ডঃ শ্যারন মিচেলের সাথে কথা বললাম। সে ম্যাক্স হার্ডকোরকে ডেকে টেষ্ট করিয়ে যেতে বললো। আমি নিশ্চিত শ্যারন তাকে এও বলে দিয়েছিল কোন মেয়ে আর কি সমস্যার জন্য তাকে ডাকা হয়েছে। আর ম্যাক্স তাই ওখানে যাবার আগে ‘জিথ্রোম্যাক্স’ ওষুধ খেয়ে নিয়েছে। কারণ শ্যারণ চাইবে না তার একজন বড় ক্লায়েন্ট হাতছাড়া হয়ে যাক। ওদের কাছে টাকাটাই সব। এরপর ম্যাক্স হার্ডকোরকে টেষ্ট করে কিছু ধরা যখন না পড়লো তখন শ্যারন আমাকে মিথ্যাবাদী বানালো। বলল, ম্যাক্স থেকে তোমার এই রোগ যায় নি, কারন ওর এটা নেই। খুব রুক্ষ আর অভদ্র ভাবে সে আমাকে কথাগুলো বলে গেল। এই সেই ক্লিনিক, সেখানে আমাদের কে নিরাপত্তা দেবার প্রহসন করা হয় মাত্র।
আমি সাড়ে তিন বছর আগে পর্ন ছেড়ে দেই। ওই ঘটনার পরে আমি আর পেরে উঠছিলাম না। আমি পিঙ্ক ক্রসের নাম শুনলাম একটা বিজ্ঞাপণের মাধ্যমে। আমি এটা নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা করলাম। ওরা আমাকে এমন তথ্য দিল যা আমি আগে জানতাম না এই পর্ণ ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে। ওরাই প্রথম আমার সাথে মানুষের মত ব্যবহার করলো। এরা অনেক ভালো। শেলী প্রায় আমাকে এটা ওটা পাঠায়। ওর মধ্যে তথ্য, নানা ধরণের বই আর উপহার সামগ্রী থাকে। এগুলো দেখলে আমার চোখে পানি আসে। মনে হয় কারো কাছ থেকে ভালোবাসা পেলাম যার জন্য আমি এতকাল কাঙ্গাল ছিলাম। অনেকদিন এমন ভালোবাসা আমি পাইনি কারো কাছ থেকে। ওরা আমার উপরে জোর করে কিছু চাপিয়ে দেয় নাই। ভালোবাসা দিয়ে আমার সন্মান দিয়ে আমার সাথে কথা বলেছে। আমি শেলী আর পিঙ্ক ক্রসের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।
(সূত্রঃ ইন্টারনেট)