সাবেক পর্ন তারকা রিয়ান (ট্রেন্ট রো) নিজের জীবনের কথা উল্লেখ করে যে কিভাবে সে এই জীবন থেকে বের হয়ে আসে। ১৯৯৩-১৯৯৫ সালের মধ্যে সে মোট ২৫ টি পর্নোগ্রাফি মুভিতে অংশ নেয়। তার এই সাক্ষাৎকার গ্রহন করে শেলী লুবেন।
শেলীঃ তুমি কিভাবে এই পথে এলে?
রিয়ানঃ ১৯৯২ সালের শেষের কথা। একজন পর্ণ তারকা ডিক্সি ব্রাউন তার BMW গাড়িতে করে আমাকে তার বাড়ীতে নিয়ে যায় নিমন্ত্রণ করে। ওখানে আমরা শারিরীক ভাবে মিলিত হই তার বাচ্চারা স্কুল থেকে ফেরত আসার আগে। আমার ধারণা হল আমার মনে হয় কোন খারাপ অসুখ হয়ে গেছে, যখন সে আমাকে জানালো যে সে পর্ণ মুভিতে কাজ করে। আমার মাথা খারাপ হয়ে গেল। সে আমার মুখে দুশ্চিন্তা দেখতে পেল। আমার মনে হল আমার যেন এইডস হয়ে গেছে।
শেলীঃ তুমি কেন পর্ণ মুভি করতে চাইলে?
রিয়ানঃ আমি যখন ডিক্সির বন্ধু ওয়ারেন স্কট এর সাথে দেখা করলাম, সে জানালো, এই রাস্তায় কোন ঝক্কি ঝামেলা নাই, আর সবাই খুব ভাল(!)। এরপর আমি ইলিওনিস থেকে চলে আসি। এক বন্ধুকে জানাই, আমি টাকা পাচ্ছি পর্ন করার জন্য। ৭ বছর লেগেছিল আমার এই রাস্তায় আসতে।
শেলীঃ ওখানে গিয়ে তুমি কি দেখলে?
রিয়ানঃ অনেক পাপাচার! অনেক টাকার খেলা যেগুলোতে পুরুষ অভিনেতাদের অংশ ছিল না। গড়ে এক একটা শ্যুটিং এর জন্য আমাদের কে একশ থেকে দেড়শ ডলার করে দেবার কথা হল। এর মাধ্যমে শরীরে রোগ আসার সব রাস্তা খুলে যায়। কারন মাত্র ৩০ দিন পরপর শরীর চেক করা হয়।
শেলীঃ তোমার কি মনে হয় মেয়েরা পর্ণ করে মজা পায়?
রিয়ানঃ না। কিন্তু তারা টাকা আর ড্রাগ পছন্দ করে। আমরা যা যা পছন্দ করতাম সবই পেতাম, যেমন, টাকা, ড্রাগ, স্পিড, উইড সব।
শেলীঃ তুমি কি মজা পেতে অভিনয় করে?
রিয়ানঃ না। সারাক্ষণ শিশ্ন কে উত্তলোন করে রাখা অসম্ভব একটা ব্যাপার। এক একসময় অনেক কিছুই হয়ে যেত। হয়ত একটা মেয়েকে আমার ভাল লাগছে, কিন্তু পরক্ষণেই তার উপরে বলাৎকার করা লাগছে। এটা আসলে একটা মিথ্যা, জান্তব, অমানুষিক অভিনয়।
শেলীঃ তোমার সবচাইতে বাজে অভিজ্ঞতার কথা বল।
রিয়ানঃ আমি ওয়ারেন কে কি বলেছিলাম আগে সেটা দিয়ে শুরু করি, ‘হা ইশ্বর! তুমি এটা কি বলছো? একটা বুড়ি মহিলার সাথে একগাদা ছেলের যৌনসঙ্গম? তুমি কি ঠাট্টা করছো আমার সাথে?’ তখন সে বললো, ‘যদি এটা করতে রাজি থাকো তাহলে তোমার চেক পাবা আর না হলে কিছুই মিলবে না। মনে কোরো না রাতারাতি তুমি বড় কিছু হয়ে যাবা। টাকার জন্য যা বলা হচ্ছে তাই করতে থাকো’।
আমি যে কিভাবে কি করলাম! আমার কাছে মনে হয়েছিল, হায়! এই মহিলাদের বয়স অনেক বেশী। এদের এখন পর্ণ করা কি করে সম্ভব?
শেলীঃ খুলে বল তোমার সাথে কেমন আচরণ করা হত?
রিয়ানঃ কেউ পাত্তা দিত না! আমি একটা শ্যুট করতে গেলাম, দেখলাম কেউ করে নিয়েছে। অবশ্য এই রাস্তায় ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে ভাল অবস্থায় থাকে। কারণ প্রযোজকরা সবসময়ই একজন পুরুষ থাকে। শুধু মেক আপ এর লোক আর পর্ন অভিনেত্রী ছাড়া সবাই থাকে পুরুষ। এই ইন্ডাস্ট্রি মুলত পুরুষ প্রধান।
শেলীঃ ড্রাগস আর মদ আসে কোথা থেকে?
রিয়ানঃ আমি নিজেই একটা দালাল ছিলাম। আমি বোতলের পর বোতল কোক দিতাম প্রডিউসার দের ৮০০ ডলালের বিনিময়ে। আমার আরো কিছু লোক জন ছিল ওরা সাপ্লাই দিতো। আমি আমার বাসা ভাড়া দিতাম ড্রাগ সাপ্লাই করে।
শেলীঃ তোমার দেখা কোন বর্বর দৃশ্যের কথা বল।
রিয়ানঃ আমি দেখলাম একটা মেয়েকে তার বয়ফ্রেন্ড এতো জোরে চড় মারতেছিল যে তার চোয়ালটাই ভেঙ্গে যাচ্ছে বলে মনে হল। এটা দেখে সহ্য করতে না পেরে আমি ওর মাথার বধ্যে বাড়ি দিলাম একটা। এরপর আর একটা কথা, একদিন এক শ্যুটিং এ গ্যাংব্যাং (যেখানে একটা মেয়ের সাথে বহুসংখ্যক পুরুষের একত্রে শারীরিক মিলন ঘটে) করার সময়, মেয়েটার মুখে, যোনীতে, পায়ুতে ইচ্ছামত সঙ্গম করছে সবাই। মেয়েটা সহ্য করতে না পেরে আমাদের গায়ের উপরে বমি করে দিল। আমার নজর ছিল আমার শিশ্নের উপরে মার মুখের উপরে ছিল মেয়েটার বমি। এমন সময়ও তারা জানালো, শ্যুটিং চালিয়ে যেতে! মেয়েটা ভেঙ্গে পড়ে অজ্ঞান হবার উপক্রম হয়ে গেল।
শেলীঃ এখন কোন বর্বরতার কথা বল যেটা তুমি শ্যুটিং এর বাইরে দেখেছো।
রিয়ানঃ পর্ণ তারকা মর্গান লিফে আমাকে জনাথন মর্গান এর বাসায় নিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরে সে ভীত হয়ে বের হয়ে আসে। পরে আমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে সে বন্দুক নিয়ে যায়। এক সপ্তাহ পরে গোয়েন্দা এসে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে কি ঘটেছিল। আমার কিছুই জানা ছিল না অথচ সে জনাথনকে খুন করে ফেলেছে।
শেলীঃ তোমার কি যৌনব্যাধি হয়েছে?
রিয়ানঃ ইশ্বরকে ধন্যবাদ। আমার তেমন কিছু হয় নাই।
শেলীঃ পর্ন সেট সম্পর্কে কিছু বল।
রিয়ানঃ আমি যখন ছিলাম, তখন শরীর নির্গত পদার্থ যেমন, রক্ত, বীর্য, লালা, পেশাব খুব ঘৃণা লাগতো। কিন্তু অনেকেই ওগুলোকে তেমন কিছু মনে করতো না। এখানে সেখানে এইসব পড়ে থাকতো। যে তোয়ালে দিয়ে গা মুছতাম দেখা যেত সেটিতে কেউ আগেই বীর্য মাখিয়ে রেখেছে। কোথাও কোন স্বাস্থ্যকর কিছু দেখতাম না। কোন নিরাপত্তাও ছিল না। জীবনুর কথা কারো মাথায় থাকতো না। যেখানে সেখানে নোংরা ফেলে রাখা হত। সেগুলা পরিস্কার করা হত না।
শেলীঃ তোমার কি এইডস এর ভয় লাগতো না?
রিয়ানঃ না। আমাকে বলা হত যে এগুলা থেকে নিরাপদ থাকা যাবে। আমি এটা অনেক পরে বুঝেছিলাম। আমাদের কনডম ব্যাবহার করা লাগতো না। এখনো যে আরো ২৯ দিন বাকী রয়ে গেছে আমার শরীরে জীবানু যাবার জন্য সেটা মাথায় আসে নাই কখনও। আমি নিনা চেরী এর সাথেও অভিনয় করেছি। নিনা ১৯৯৭ সালে এই পর্ন করা ছেড়ে দেয় HIV এর জন্য যদিও সে স্বীকার করে নাই। আমার ভয় লেগেছিল কারণ পর্ন করার আগেও আমি ওর সাথে মিশতাম। অনেক সময় কিছু মেয়ে ফ্রান্স থেকে আসতো আর তারা ইংরেজী জানতো না। পর্ন তারকা লিজা হার্পার আর ম্যানেজার ক্রিস্টোফার ঘনিষ্ট বন্ধু ছিল। আমিজান্তে চাইলাম ওরা কোন টেস্ট করিয়েছে কিনা? জানালো, না। এরপর আমি আর ওদের সাথে কাজ করি নাই।
শেলীঃ পর্ন তারকারা কি পতিতার কাজও করে?
রিয়ানঃ আমি নিশ্চিত করে। একবার সান্তা মনিকায় এক হোটেলে এক মহিলা আমাকে ডেকে পাঠায়। আমি কয়েকবার তার কাছে গিয়েছি। সে আমাকে তাকে শারীরিক সঙ্গ দেবার জন্য আমাকে শ্যুটিং করার চাইতেও বেশী টাকা দিত। আমি না করতে পারি নাই। তখন আমার বয়স মাত্র ২৭ ছিল। আমি আকণ্ঠ পাপের মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম। আমি মুক্তি থেকে অনেক দূরে ছিলাম ঐ জীবনে।
শেলীঃ তুমি এর থেকে বের হলে কি করে?
রিয়ানঃ আমি অসহ্য হয়ে গেছিলাম। বয়স ছিল ২৭। লস অ্যাঞ্জেলেসের জেলে ৯ দিন ছিলাম। জেল থেকে বের হলে আমার বাবা মা আমাকে নিতে আসে। আমি উনাদের সাথে বাসায় গেলাম। তখন বুঝলাম আমাকে এর থেকে বের হতে হবে। আমি ব্যবসা করার কথা ভাবলাম। এরপর আমি টেকনিক্যাল ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম এবং ব্যাচেলর পাস করে বের হলাম।
শেলীঃ এখন কেমন ব্যবহার পাও মানুষের কাছে?
রিয়ানঃ কারো মাথাব্যথা নাই। ওদের দেখাও নাই এখন আর। আমি যেই মেয়েদের সাথে মিশেছি, আমি সত্য কথাই বলেছি যে আমি পর্ন করি। ওরা সেই কথা বারবার আমার সামনে নিয়ে আসতো। আমার এটা ভালো লাগে না। আমি আসলে একটু ভালবাসার কাঙ্গাল ছিলাম আর সাধারণ একটা সম্পর্ক চাইতাম। কিন্তু সেটা আমার আর হল না কারণ আমি অনেক কম বয়সে পর্ন করতে চলে যাই। আমি ঘৃণা করি। এজন্য আমি পিঙ্ক ক্রসে এলাম। আমি নতুন একটা জীবন চাই!
শেলীঃ পর্ন ছেড়ে দেবার পরে কি হল?
রিয়ানঃ আমি মহিলাদের প্রতি সন্মান হারালাম। আমার পরিবারে অনেক মেয়ে ছিল। ৪ বোন আর ৩ ভাই আমার। সবাই আমাকে অনেক বোঝালো। পর্ন এর খারাপ দিকগুলা আমাকে জানালো। আমার নিজের মা আমাকে বললো পর্ন এর বিরুদ্ধে লড়ে যেতে। আমার ইশ্বরের সাহায্য দরকার।
শেলীঃ অন্য পুরুষ অভিনেতাদের উদ্দেশ্যে কিছু বল।
রিয়ানঃ তিনটা কথা-১। বের হও ২। শরীর চেক করাও ৩। পিঙ্ক ক্রসের সাহায্য নাও
শেলীঃ যারা পর্ন দেখে তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বল।
রিয়ানঃ বন্ধ কর! এই মেয়েরাও কারো আদরের কন্যা!
শেলীঃ এখন তোমার মিশন কি?
রিয়ানঃ আমি চাই ইন্টারনেট থেকে আমার ভিডিও গুলা মুছে দিতে। আমি আমার নোংরা অতীতকে মুছে দিতে চাই। ইশ্বরের আরাধনা করতে চাই আর পিঙ্ক ক্রসের হয়ে কজা করে যেতে চাই। আমি পিঙ্ক ক্রসের হয়ে কাজ করে যেতে চাই মরা পর্যন্ত। যদিও মরেও যাই তবুও যেন দুনিয়া জানে এই কথা, রিয়ান লী মিলে তার জীবনের শেষের দিনগুলো ইশ্বরের আরাধনা করে গেছে, সন্মান নিয়ে বাঁচতে চেয়েছে, আর কোন পাপ সে করেনি।
(সূত্রঃ ইন্টারনেট, কিঞ্চিত সংক্ষেপিত)