১৯৪৩ সাল। রতনপুর গ্রাম। বারাশিয়া নদীর উপকূলে ছায়া সুনিবিড় শান্ত একটা গ্রাম। গ্রামের মানুষ নিতান্তই সহজ সরল জীবন যাপনে অভ্যস্ত। আপামর সবাই কৃষিজীবী। ধানের পাশাপাশি পাটের ফলন এই গ্রামে অনেক বেশী হয়। জনবসতি তখনও খুব বেশী হয়ে ওঠেনি। এই গ্রামের মানুষের কাছে সবেচেয়ে আকর্ষণীয় হল তাদের জমিদার বাড়ি। অত্র এলাকার জমিদার শেখ নাজিম উদ্দিন সাহেবের দাদা শেখ কফিল উদ্দিন তৈরি করিয়েছিলেন এই প্রাসদতুল্য দর্শনীয় বাড়িটি। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
ছোট জমিদার হিসাবে শেখ নাজিম উদ্দিন সাহেবের অনেক সুনাম গ্রামের মানুষের কাছে। সুখে দুঃখে গ্রামবাসী তাদের জমিদার সাহেবকে সর্বদা কাছে পেয়েছে। জমিদার বাড়ির কাছারি ঘরে সব সময় লোকের ভিড় লেগেই থাকে। শুধু কাজেই নয়, জমিদার সাহেবের দর্শন পাওয়াটাকেও গ্রামবাসী সৌভাগ্য হিসাবে গন্য করে। আর দুই দশটা জমিদারের মত নয় তাদের ছোট জমিদার। কাছারি ঘরে গিয়েছে কেউ আর জমিদার বাড়ি থেকে তাকে আপ্যায়ন করা হয় নি; এমনটি কখনও হয় নি। জমিদার সাহেবের জন্য যে কোন মুহুর্তে তার গ্রামবাসী জীবন দিয়ে দিতেও কুন্ঠিত হবে না। জমিদার সাহেব নিজেই ঘরে ঘরে গিয়ে সবার খোঁজ খবর নেন। অনেক সম্পদের উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও মনে কোন অহঙ্কার ছিল না তাঁর।
আশ্বিন শেষ হয়ে তখন কার্তিক মাস শুরু হয়ে গিয়েছে। বারাশিয়া নদীর পাড় সহ বিভিন্ন মাঠ কাশফুলে ছেয়ে আছে। বাতাসের দোলায় কাশফুল গুলো যখন আন্দোলিত হতে থাকে তখন দেখার মত দৃশ্য হয়। কোমল বাতাসে নদীর পাড়ে বসে বিশ্রাম করতে কার না ভাল লাগে? জমিদার সাহেবের একটিই মাত্র ছেলে। কলকাতা থেকে লেখাপড়া করে এসেছে। দেখতে যেমন সুদর্শন, আচার ব্যবহারেও তেমনি। নাম শেখ রায়হান উদ্দিন। কত হবে বয়স? ২৮ কি ২৯। লেখাপড়া শেষ করে দেশে চলে এসেছে। বাবার সাথে জমিদারী দেখাশোনা করে। এমনিতেই অনেক হাসিখুসি থাকে ছেলেটা কিন্তু চোখের গভীরে তাকালে বোঝা যায় কি এক অজানা যন্ত্রণা যেন কুরে কুরে খাচ্ছে তাকে। কাউকে বুঝতে দেয় না মনের কষ্টগুলো। এমনই চাপা স্বভাবের। জমিদার সাহেব ছেলের মায়ের সাথে আলাপ করে।
-ছেলের মন এমন উদাস কেন?
-ছেলে বড় হইছে না? পোলারে বিয়া দেন। ঘরে বৌ আইলে সব ঠিক হইয়া যাইবো। একটা মাত্র পোলা আমাগো। ওরে বিয়া দিবেন না? মা সুফিয়া বেগম উত্তর দেয়।
-হ বিয়া তো দিতেই হইব। ঘরডা কেমুন জানি খালি খালি লাগে। কলিম জোয়ার্দার সাহেবের মেয়ের লগে কথা পাকাপাকি কইরা ফালাই? তুমিও তো দেখছ মাইয়াডারে। পরীর মত সুন্দর মাইয়া। আমাগো রায়হান এর লগে ওরে মানাইব ভাল। তুমি কি কউ?
-আপনি তো আমার মনের কথাডাই কইলেন। আর দেরী কইরেন না। পাকা কথা দিয়া ফালান। পুরা গাঁওয়ের মানুষ দাওয়াত করুম পোলার বিয়াতে।
-সে কথা কি তোমার কইতে হইব? শুধু আমাগো গাঁও না। পাশের সব গাঁওয়ের মানুষেরে দাওয়াত করুম। একটা মাত্র পোলা আমাগো।
-হ ঠিকি কইছেন। একটাই তো পোলা। বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে সুফিয়া বেগম।
এরপর মাত্র দুই সপ্তাহের মাথায় বিয়ের আয়োজন শুরু হয়ে যায়। সারা গ্রামে সাজ সাজ রব পড়ে যায়। গ্রামের মানুষের আনন্দ আর ধরে না। জমিদার বাড়িতে বিয়ে। তাও আবার জমিদার সাহেবের একমাত্র ছেলের বিয়ে। গাঁয়ের মানুষের ঘুম নেই। পুরা গ্রামের মানুষ বিয়ের আয়োজনে লেগে গেছে। রাস্তা ঘাট সাজানো, খাবার দাবারের জোগাড়, বজরা সাজানো, পালকি, বেহারা তৈরি করা। কত কাজ! জমিদার সাহেব একদিন ছেলেকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, বাজান আমি তোর বিয়া দিতে চাই জোয়ার্দার সাহেবের বড় মাইয়ার লগে? তুই কি কস?
মুখে কিছু না বলে শান্ত চোখে বাবার মুখের দিয়ে তাকিয়ে রইল রায়হান। কিছুক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার পরে মাথা নীচু করে ফেলল। ছেলের মুখের এই অভিব্যক্তিকে জমিদার সাহেব ইতিবাচক ধরে নিলেন। কিন্তু ছেলের মনের গভীরে যেতে পারলেন না। রায়হান কি যেন বলতে গিয়ে বাবাকে বলতে পারল না। ছেলে বিয়েতে সম্মত আছে মনে করে জমিদার সাহেব খুশি হয়ে মহা ধুমধামের সাথে বিয়ের আয়োজনে লেগে গেলেন। অন্দরমহলেও কত কাজ!
বিয়ের দিন এসে গেল। কার্তিক মাসের ১৯ তারিখ। সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। বরযাত্রী সহ পুরা গ্রামবাসী সবাই তৈরি হয়ে আছে। জমিদার বাড়িতে নতুন বৌ আসছে। জমিদার সাহেবের একমাত্র বৌমা! তাকে বরণ করে নেয়ার জন্য সবাই তৈরি হয়ে আছে। শুধু আনন্দ নেই রায়হানের। কেমন জেন নিজেকে নিজের মধ্যে গুটিয়ে নিয়েছে। কেউ বুঝতে পারছে না কি হয়েছে। সবার ধারণা বিয়ের দুশ্চিন্তায় বুঝি এমন করছে। ভোরবেলা শেরওয়ানী পাগড়ি এসে হাজির। ঘোড়ার গাড়ি, পালকি সব তৈরি হয়ে আছে। পুরা বাড়ি হৈ চৈ করে মাতিয়ে রেখেছে সবাই। রায়হানের কথা মনে নেই কারো। সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত। যাত্রা শুরুর আগে রায়হানের খোঁজ পড়ল। কিন্তু সারা বাড়িতে কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া গেল না। দুই ঘন্টা পার হয়ে গেল। গ্রামেও কেউ তাকে দেখে নাই। কেউ বলতে পারছে না কই গেল বিয়ের পাত্র। সুফিয়া বেগম কান্নাকাটি শুরু করে দিলেন। জমিদার সাহেব জোয়ার্দার সাহেবের বাড়িতে খবর পাঁঠিয়ে দিলেন যে তাদের আসতে একটু দেরী হবে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠল উনার। অজানা আশঙ্কায় বুকের ভেতর কেমন যেন লাগছে। না জানি কোন কেলেঙ্কারিতে পড়তে হয় শেষে!
শেষে দুশ্চিন্তায় টিকতে না পেরে জমিদার সাহেব গ্রামের বিভিন্ন দিকে লোক পাঁঠিয়ে দিলেন। যে যেদিকে পারল ছুটে গেল। রায়হান কে যে খুঁজে বের করতেই হবে। আরো একঘন্টা পার হয়ে গেল। কেউ কোন খবর আনতে পারলো না। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে যায় যায় প্রায়। দুশ্চিন্তায় জমিদার সাহেব অস্থির হয়ে গেলেন। না জানি জোয়ার্দার সাহেবের কাছে মাথা কাটা যায় কিনা। কাছারি ঘরে সবাই মন খারাপ করে বসে ফিস ফাস করে আলাপ করছে। জমিদার সাহেবকে আসতে দেখে সবাই চুপ করে গেল। জমিদার সাহেব চেয়ারে বসা মাত্রই হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে এল বুলু মিয়া। রায়হানের চেয়ে কয়েক বছরের ছোটই হবে। রায়হানের সাথে বুলু’র ছোট বেলার বন্ধুত্ব। কান্নার চোটে কিছুই বলতে পারল না বুলু। খালি হাত দিয়ে ইশারা করে কি যেন দেখাল বাইরের দিকে।
-তুই দেখছস রায়হান রে বুলু? জমিদার সাহেব জানতে চাইলেন?
মাথা নেড়ে বুলু জানায় সে দেখেছে।
-কই দেখছস? কিছু কইসে তোরে?
এবারো মাথা নেড়ে জানায় কিছুই জানায় নি তাকে। তার কান্না দেখে কাছারি ঘরের সবাই অস্থির হয়ে গেল। বলল, হুজুর চলেন দেখে আসি ঘটনা কি।
কপালে দুশ্চিন্তা নিয়ে জমিদার সাহেব বললেন, চল যাই।
বুলু রইল সবার আগে। নিয়ে চলল উত্তর দিকের রাস্তা ধরে সবাইকে। রাস্তার মাথা শেষ হয়ে গেছে জমিদার বাড়ির আম বাগানের মধ্যে গিয়ে। বুলু হাত দিয়ে ইশারা করে দেখাল বাগানের শেষ মাথার দিকে। সবাই ছুটে গেল ঐদিকে। শেষ মাথায় যারা আগে গেল তারা সবাই চিৎকার করে কেঁদে উঠলো। কেউ কেউ মুখে হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়ল। জমিদার সাহেব ও গেলেন। কিন্তু এমন দৃশ্য দেখলেন যা দেখার চেয়ে উনি নিজের মরে যাওয়াও অনেক শ্রেয় মনে করলেন। আম গাছের ডাল থেকে ঝোলানো রশিতে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে জমিদার বাড়ির একমাত্র উত্তরাধিকারী রায়হান; আজ যার বিয়ে। মাথা এক দিকে কাত হয়ে আছে। চোখে দুইটা সামান্য খোলা। সারা শরীর নীল হয়ে শক্ত হয়ে আছে। বোঝাই যায় মারা গেছে অনেক আগেই। জমিদার সাহেব বুকে হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়লেন। পুরা গ্রামের মানুষ এর মধ্যেই সবাই জমা হয়ে গেছে আমবাগানে। শুধু জমিদার বাড়িতে কেউ এখনও খবর দেয় নি। সারা গ্রামবাসীর আনন্দ মুহুর্তে শোকে ছেয়ে গেল। এমন কেই নেই যে এই দৃশ্য দেখে চোখের পানি ফেলেনি। মানুশের সশব্দ কান্নায় গ্রামের বাতাস ভারী হয়ে গেল। এই দৃশ্য লিখে বর্ণনা করা যায় না।
রায়হানের পকেট থেকে একটা চিঠি বের হল। বাবাকে উদ্দেশ্য করে লেখা শেষ চিঠি।
আব্বাজান,
আমার শতকোটি সালাম জানবেন। আমি জানি যখন এই চিঠি আপনি পাবেন তখন আমি আপনাদের কাছ থেকে অনেক দূরে। আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন আমার এই অপরাধের জন্য। আমি আপনাদের যোগ্য ছেলে হতে পারি নাই। দিতে পারি নাই আপনাদের প্রাপ্য কোন কিছুই। অক্ষম কাপুরুষের মত চলে গেলাম আপনাদের সবার কাছ থেকে। আমার যে আর কিছু করার ছিল না।
আমি অনেকবার আপনাকে বলতে চেয়েছি কিন্তু বলতে পারি নাই। লজ্জায় আমার মাথা কাটা গেছে। আমি জানি আপনাদের বলা উচিত ছিল কিন্তু তারপরেও আমি মুখফুটে বলতে পারি নাই। আপনার আর আম্মা’র কাছে আমি ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য না; কিন্তু পারলে আমাকে ক্ষমা দয়ে দিয়েন। আমার বিয়ের উৎসবে আপনি সহ সবাই অনেক বেশী আনন্দিত ছিলেন। আমি চাই নি আপনাদের আনন্দে আমার কারণে ক্ষতি হয়ে যায়। আমি কোন উপায় না দেখে নিজেকেই শেষ করে দিলাম।
একটু বড় হবার পর থেকেই আমার কাছে আমার শারীরিক অক্ষমতা ধরা পড়ে। প্রথমে বুঝতে পারি নাই কিন্তু পরে জিনিষটা আমার কাছে ধরা পড়ে। কলকাতা তে পড়ার সময় বন্ধুদের কাছ থেকে শোনার পরে আমি বুঝতে পারি যে আমার মধ্যে শারীরিক পুরুষত্ব নেই। অনেক ভাবে চেষ্টা করা সত্ত্বেও আমি নিজের মধ্যে তা আবিস্কার করতে পারি নাই। মনের দুঃখে নিজের মধ্যে নিজেকে গুটায়ে নিলাম। কাউকে বলতে পারলাম না আমার এই কষ্টের কথা। পরে আপনি যখন আমার বিয়ের কথা তুললেন আমি কষ্টে নিজের মনের ভিতর নিজেই পুড়ে শেষ হয়ে গেলাম। আমার নিজের অক্ষমতার জন্য আমি একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে চাই নি। আমি জানি আমি কথা গুলা হয়ত আপনাকে বলতে পারতাম। কিন্তু তাতেও আপনাকে লজ্জায় ফেলা হত। না আপনি আমাকে বিয়ে দিতে পারতেন, আর না কাউকে বলতে পারতেন আমার কথা। আমি আপনাকে আর আম্মাকে কষ্ট দিতে চাই নি। আমি চিরতরে আপনাদের কষ্ট আর লজ্জা থেকে মুক্তি দিলাম বাবা। আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।
ইতি
আপনার হতভাগ্য ছেলে
রায়হান
চিঠি শেষ করা মাত্র বিলাপ করে চিৎকার উঠলেন রতনপুর গ্রামের জমিদার সাহেব। একটা ঘোরের মধ্যে ডুকরে ডুকরে বলতে লাগলেন, ‘বাজান রে! আমারে কেন কইলি না রে বাজান... হা রে বাজান তুই কেন চইলা গেলি রে...আমি তো তোর উপর জোর করতাম না রে বাজান... রায়হান রে...তুই ফিরা যায় বাজান...তোরে ছাড়া আমি বাচুম না...ওরে বাজান...’
যেখানে ঘোড়ার গাড়িতে করে বরযাত্রা করে রায়হান কে নেয়ার কথা ছিল সেখানে বিয়ের দিনই খাটিয়ায় করে আমবাগান থেকে রায়হানের লাশ নিয়ে গেল সবাই। বারাশিয়া নদীর পাড়ে রায়হানের প্রিয় কাশফুল বাগানে তাকে দাফন করা হয়েছিল। জোয়ার্দার সাহেবের বাড়ির সবাই ঘটনার কথা শুনে ছুটে আসে। এমনকি রায়হানের হবু বধু মিতাও এসেছিল লাল বেনারসী শাড়ি পরে। চোখের পানিতে পরমা সুন্দরী মেয়েটার দুই গাল কাজলে মাখামাখি হয়ে গেল। খাটিয়ার পাশে গিয়ে রায়হানের লাশ দেখে মেয়েটা যখন চোখের পানি ফেলছিল সেই দৃশ্য দেখে গ্রামের এমন কেউ ছিল না যে শব্দ করে কাঁদে নি।
পুনশ্চঃ রতনপুর গ্রামের আমের বাগান এখন আর নেই। এখন এই বিংশ শতাব্দীতে অবশ্য এই বাড়িটিও আর বাসযোগ্য নেই। কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে এই বাড়ীর শ্রী। এই বাড়ির বাসিন্দাদের উত্তরসূরীরা আজ কোথায় চলে গিয়েছে দেশ বিভাগের পরে সেই খবর কেউ জানে না। এরপরে বাংলাদেশ স্বাধীন হল। কত কিছুই না হয়ে গেল। ইতিহাস কেউ মনে রাখে না। বর্তমানে এই জমিদার বাড়ি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে থানা নির্বাহী অফিস হিসাবে। যেই জমিদার বাড়ির নদীর ঘাটে সবসময় বজরা বাঁধা থাকত আজ সেই নদীর পানি শুকিয়ে এমন অবস্থা হয়ে গেছে যে নদী বলে আর চেনার কোন উপায় নেই। নদীর গর্ভে অনেক আগেই হারিয়ে গেছে রায়হানের ক্ববরটা। রায়হানকে এখন কেউ আর চেনে না। শুধু দেখা যায় গ্রামের এক আধ পাগল বুড়ো বুলু মিয়া নদীর পাড়ে বসে বসে কাঁদছে। কেউ জানতেও চায় না কি তার দুঃখ। কালের আবর্তে খরস্রোতা বারাশিয়া নদীটাও মরে গেছে কিংবা কালের সাক্ষী হয়ে ধুকে ধুকে মরার অপেক্ষায় আছে।