আমার একটা বন্ধু আছে
নাম তার রেজা,
খেতে সে ভালবাসে
চিকেন রোল আর পিজা।
বড় ভাল ছেলে সে যে,
সুন্দর একটা মুখ,
ওকে স্পর্শ করবেনা কভু
কষ্ট কিংবা দুখ।
দুষ্টামি এর ফাজলামিতে
সবার শিরোমণি,
বন্ধু মহলে সে ছিল
সবার নয়নমণি!
আমরা কেউ পারতাম না
কথায় ওর সাথে,
সমস্যাগুলো উড়ায়ে দিত
মুচকি একটু হেসে।
ওর প্রিয় নায়িকা যে
বোম্বের জুহি চাওলা,
ওর কাছে নয়ত সে
পদ্মপাতায় শেওলা।
রেজা একটা আজব ছেলে
কিভাবে জানি হায়,
আমার মনের কথা গুলা
ঠিকই টের পায়!
এখন সে আমেরিকার
ভার্জিনিয়ায় থাকে,
কেমনে গেল দূরদেশে
আমায় একা রেখে?
ওর প্রিয় নাট্যশিল্পী
নাম অপি করিম,
আমি ভাবি কবে হবেন,
মিসেস রেজাউল করিম।
রেজা হল দারুন মজার
সৌখিন একটা মানুষ,
নতুন কোন সিনেমা এলে
থাকে না যার হুঁশ!
হাসতে ভীষণ পারতো ও
হাসাতেও পারতো,
ওর কথা শুনলে মোদের
হাসির রোল উঠতো।
মনটা অর খুবি ভাল,
সুন্দর আর সরল,
অর মনে নেই কোন
প্যাঁচ কিংবা গরল।
মমতাজ কিংবা ঊষা কে পেলে
কাঁচা চিবিয়ে খায়,
ওদের গান শুনলে তো
ভীষণ রেগে যায়।
খুবই ভাল ছাত্র সে
দারুণ মেধাবী,
চারিত্রিক গুণেও সে
প্রখর তেজস্বী।
শুনতে খুব ভালবাসে
হিন্দি বাংলা গান,
থাকলে তো কথাই নাই
লতা মঙ্গেশকরের টান।
রেজা তুমি ভাল থেক
ভীষণ সুখী হও,
মন থেকে কভু তুমি
একটুও দূরে নও।
তুই যে আমার খুব কাছের
একেবারেই আপন,
পরবাসে গেলেও মোদের
ছিঁড়বেনা এ বাঁধন।
একটা কথা কখনও কি
ভেবেছিস তুই মনে?
তোর প্রতীক্ষায় সময় কাটে
দিবস-প্রহর গুনে।
স্মৃতিগুলো সম্বল করে
বুকে জড়িয়ে রাখি,
তোকে ছাড়া একা একা
কেমন করে বাঁচি?
তোকে তো প্রায় আমি
স্বপ্নের মধ্যে দেখি,
দেখে যেন মনে হয়
স্বপ্ন নয় সত্যি।
সারাক্ষণ তোরই কথা
মনের মাঝে ঘোরে,
তোর ছবি গাঁথা আছে,
পুরা মনটা জুড়ে।
তোকে নিয়ে আড্ডা দিতাম
প্রায়ই গাছের তলে,
তোর কথা মনে হলেই
চোখ ভেসে যায় জলে।
মনে কি পড়ে তোর সাথে
করতাম হাসাহাসি?
তুই কি জানিস তোকে আমি
কত ভালবাসি?
আমার মনে কি যে হয়
যদি তুই দেখতি,
আমার মনের ব্যথাগুলো
শুধু তুইই বুঝতি।
জগৎঘুরে পেয়েছি আমি
তোর মত বন্ধু,
আর কাউকে পাবো নাকো
পার হলেও সিন্ধু।
যদি আমি পাখির মত
দু’টি ডানা পেতাম,
ইচ্ছে হলেই তোর কাছে
উড়াল দিয়ে যেতাম!
মনের আকাশে সূর্য্য যদি
ছড়ায় কভু জ্যোতি,
তখন কি তোর পড়বে মনে
ফেলে আসা স্মৃতি?
মনের অজান্তে তোকে হয়ত
দিয়েছি অনেক কষ্ট,
সত্যি করে বলতো, তুই কি
আমার উপর রুষ্ট?
তোকে ছাড়া কোন কিছু
ভাবতে পারি না হায়,
তোর চিন্তায় দিন-রাত
কখন যে কেটে যায়!
তুই যে আমার কত আপন
আমার দেহের আত্মা,
জন্ম-জন্মান্তরের বন্ধন যে
অভিন্ন মোদের সত্ত্বা।
যুগ-যুগান্তরের বন্ধু মোরা
হবে না কভু ভাঙ্গন,
আসুক যতই ঝড় বাদল
আসুক না সে মরণ!
বন্ধু হয়ে একবার যখন
ধরেছি তোর হাত,
ধরে রাখবো শক্ত করে,
বেদনা যতই থাক।
হাসি আনন্দের দিনগুলো
গিয়েছে কবে কেটে,
শত আনুনয় করলেও কি
আসবে আবার ফিরে?
তুই যে আমার হৃৎকম্পন
মোর আকাশের তারা,
তুই থাকলে হৃদয়ে মোর
রক্ত ঝরাবে কারা?
মোর অন্তরে এনে দিয়েছিস
দুর্বার এক গতি,
তুই না থাকলে হত যে
অপূরণীয় ক্ষতি।
যখন কাছে কেই ছিল না
হৃদয় ছিল শূন্য,
তুই তখন করে দিয়েছিস
আমার হৃদয় পূর্ণ।
তুই হাসলে অন্তরে মোর
ঝরে বারিষ ধারা,
তোর অভাবে হয় না তা
তপ্ত রোদের খরা।
কষ্ট যদি কখনো তোকে
স্পর্শ করতে হয়,
সেদিন দেখার আগেই যেন
মরণ আমার হয়।
স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি
সকাল-সন্ধ্যা-রাতে,
তোকে দেখার আগেই যেন
আমার মরণ না আসে।
তোর বিহনে অন্তরে মোর
রয়েছে কত পিয়াস,
তোকে দেখলেই পূর্ণ হবে
মোর নয়নের তিয়াস।
প্রত্যুষে যখন উঠে শুনি
পাখির কাকলি কূজন,
ভাবি বসে নেইত আমার
তোর মত সুজন।
যেথায় থাকিস ভাল থাকিস
কভু ভুলিস না আমায়,
জীবন দিয়ে হলেও চাই
বন্ধু শুধু তোমায়।