আজকের দিনটা বৃষ্টিময়। আমার প্রিয় একটা দিন। অনেকদিন ধরেই মনে হয় এমন বৃষ্টিময় দিনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ঢাউস এক মগ ধুমায়িত কফি হাতে নিয়ে বৃষ্টি দেখা আমার জন্য একটা আনন্দময় বিলাসিতা। বৃষ্টি হলেই অনেকের যেমন খিচুড়ি খেতে মন চায় তেমনি আমার মন চায় কফি হাতে নিয়ে উপন্যাস পড়তে। আর লিখতে ইচ্ছা করে। বিশেষ করে যদি সেটা চিঠি হয় তাহলে তো কথাই নেই। আজকে কাউকে লেখার মত চিঠি জমে নেই। তাই আজ নিজেকেই নিজে লিখছি। আমার এই লেখাগুলোই একান্ত আমার নিজেকে নিজে লেখা চিঠি। ইউটিউবে বেজে চলেছে রবীন্দ্রনাঠ ঠাকুরের লেখা “শেষের কবিতা” অবলম্বনে বেতার নাটক। আমি শুনছি আর নিজের মত লিখছি। আমি একা একা থাকতে পারি না। চুপচাপ থাকলেও আমার কোন না কোন শব্দের দরকার হয়। শব্দ ছাড়া আমি একা। নৈঃশব্দ্যের মাঝেও আমি শব্দ খুঁজে নেই। তখন আমার নির্বাক বইগুলো আমার সাথে কথা বলে। ওরা আমাকে নিয়ে যায় এক নতুন জগতে। আমি বারবার ওদের সেই জগতে হারাতে চাই। আমি নতুন করে নিজেকে খুঁজে পেতে চাই ওদের মাঝে।
সময় পরিবর্তনের সাথে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে যায়। যেমন পরিবর্তন হয় আমাদের মন মানসিকতার। আমি নিজের মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। যা আগে আমাকে ভারাক্রান্ত করে রাখতো, এখন নিজেকে প্রশ্ন করে দেখেছি, ওগুলোতে আমার এখন কিছুই আর যায় আসে না। এটা আমার মনের এক বড় শান্তি। আমি এখন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হবার অনেক উপকরণ খুঁজে পেয়েছি। এখন আর অন্যের মধ্যে নিজের ভাললাগা খুঁজতে যাই না। যা নেই, তা কখনো পাবার নয়। যা ছিল, তা হারিয়ে গেলে খোঁজার মানে থাকে। হয়ত পেতে পারি সেই আশা থাকে। কিন্তু যার অস্তিত্ত্বই নেই, তাকে কেন খুঁজতে গিয়ে বারবার নিজেকে হারাতে হয়? কি ভুলের মধ্যেই না ছিলাম। এখন প্রায়শ্চিত্য করার সময়। নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করার সময়। নিজেকে একটু সময় দিয়ে দেখতে হবে, আমি কেমন আমাকে খুঁজছিলাম। আজ এই বৃষ্টিময় দিনে কেন যেন এসব কথাই বারবার মনে পড়ছে। কোন হিসেবের অঙ্ক নয় বরং কতগুলো সহজ ছত্রে কথাগুলো লিখে নিলাম।