জানতে চাইঃ “জগতে আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ”

কবিগুরুর রচিত ‘গীতাঞ্জলি’ গ্রন্থের এই বিখ্যাত গান সম্পর্কে মোটামুটি সবাই জানি, অন্তত যারা রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্পর্কে ধারণা রাখেন তারা। আমিও শুনেছি অনেকবার। কবিতাও বলতে পারেন। কবিতার উপরে সুরাশ্রয়েই তো গান হয়। কিন্তু একটা প্রশ্নের জট আমার মাথায় ঘুরপাক খায় অনেকদিন থেকেই। আমি বুঝে উঠতে পারছি না। আমার অনুরোধ, যাদের ভাল ধারণা আছে, তারা যদি এ সম্পর্কে আমাকে একটু অবহিত করেন তাহলে উপকৃত হবো! অন্তত মনের জট খুলবে আর কি।

 

আমার প্রথম জিজ্ঞাসা হলো, এই গানের সাথে কোন ভাবের সম্পর্ক? আনন্দ না দুঃখ? কারণ শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘আনন্দযজ্ঞ’! যজ্ঞ বা যজ্ঞাহুতি তো জানি আমরা, যেখানে আগুনে বিসর্জন দেয়া হয়। তাহলে এখানে আনন্দযজ্ঞ বলতে কি এমন একটা যজ্ঞ বুঝানো হলো যেখানে নিজের আনন্দ কে যজ্ঞে সঁপে দেয়ার কথা বলা হলো? যেহেতু এটি ‘গীতাঞ্জলি’ গ্রন্থের একটি রচনা, তাহলে কি বলা চলে যে, স্রষ্টাকে পেতে বা পাওয়ার জন্য নিজের আনন্দকে যজ্ঞাহুতি দিতে বলা হচ্ছে? এই গানের পঙক্তিতে বলা হয়েছে-

 

 তোমার যজ্ঞে দিয়েছ ভার

              বাজাই আমি বাঁশি।

       গানে গানে গেঁথে বেড়াই

              প্রাণের কান্নাহাসি”

 

এখানে ‘তোমার’ বলতে ত ইশ্বর তথা স্রষ্টা ধরতে মানা নেই! আমি তো এই কবিতায় নিছক ‘প্রেম’ খুঁজে পাচ্ছি না, বরং এর ধারণা অনেক গভীরে চলে গিয়েছে যার খেই পাচ্ছি না আমি।

 

কবিতার সার্থকতা এখানেই। অল্প কিছু শব্দের মধ্যে অতল সমুদ্র লুকিয়ে রাখেন কবিরা! এক একটি লেখা আমার কাছে এক একটি সমুদ্রের মত মনে হয়। যে কবি এমন করে এক এক করে সমুদ্রের সন্ধান দিতে পারেন, তার মনের গভীরতা কতখানি? আমি চিন্তা ভাবনা করেও কোন কূল কিনারা করতে পারছি না।

Author's Notes/Comments: 

২৯ মে ২০২১ 

View shawon1982's Full Portfolio