‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ বইটা অনেকদিন থেকে পড়ার ইচ্ছা ছিল। আজকে সুমন ভাই ইমেইল করে দিলেন। পড়ে ফেললাম। এই বই কত কথা বলে দিল একসাথে। কথ কিছু মনে করিয়ে দিল। কত সুন্দর সুন্দর সাধারণ খাবারের কথা বলা আছে এখানে। পড়লেই খেতে ইচ্ছা করবে। সাধারণ ভাতের কথা এমন ভাবে বলা আছে, পড়লে মনে হবে এখনই একটু ভাত খাই!
ভাতের কথা যতবার পড়েছি ততবার আমার প্রবাস জীবনের শেষ ৫ মাসের কথা মনে পড়ে গেল। হ্যাঁ! তখনও ভাত খেতাম! অনেক তৃপ্তি করে ভাত খেতাম! সেই ভাত খাওয়ার কথা কোনদিন ভুলবো না! ওত তৃপ্তির ভাত তো আর জীবনে খাবো কিনা জানি না! মনে পড়ে সেই দিনগুলোর কথা। বইটা পড়ে আরো বেশী করে মনে পড়ে ফেল।
ইন্দুবালার যে আবেগ শেষ কয়েক পৃষ্ঠায় লছমীর জন্য দেখানো আছে, সেটা আবেগ তাড়িত না করে পারে না। লছমীর মৃত্যুতে ইন্দুবালা ‘কচুবাটা’ আর করবেন না ঘোষণা দিয়েছিলেন। পড়ে মন ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। আবার কেউ মারা গেলে মানুষ তাকে বেশিদিন মনে রাখে না, আস্তে আস্তে পরিচিত জনরাও ভুলে যায়, সেই কথটাও খুব সুন্দর করে বলে দেয়া আছে। পড়তে গিয়ে আমি নিজেই আবেগতাড়িত হয়ে গিয়েছি।
ভাতের কথা আসাতে মনে পড়ে গেল আনিসুল হকের লেখা বই ‘মা’ এ উল্লেখিত শহীদ আজাদের মা ‘সাফিয়্যা বেগম’ এর কথা। ভাত খেতে চেয়েও ছেলে ভাত খেতে পারেনি দেখে ছেলের মৃত্যুর পর থেকে বাকী সারাটা জীবন শহীদ আজাদের মা সাফিয়্যা বেগম আর ভাত খান নি। খাটে ঘুমান নি। ‘মা’ তো সমাজে অনেকেই আছেন। লবণ খাইয়ে মেরে ফেলা ‘মা’ যেমন আছেন, তেমনি সাফিয়্যা বেগমের মত ‘মা’ ও আছে!