২ অক্টোবর ২০২০

মাশরুম প্রসঙ্গ

= = = = =

 

আমার দুই প্রিয় ছাত্র জামিনুল এবং তপু সম্প্রতি মাশরুম উৎপাদনের ব্যাপারে আগ্রহী এবং কিছুদিন ধরে ওরা নানা রকম এক্সপেরিমেন্ট করে মাশরুম উৎপাদন করছে যা আমি ওদের ফেসবুকের পোষ্ট থেকে জানতে পেরেছি। ওদের ইচ্ছা এই প্রজেক্ট কে আরও বড় করার এবং যারা মাশরুম পছন্দ করেন তাদের কাছে সরাসরি ওদের উৎপাদিত তাজা মাশরুম পৌঁছে দেয়া। ওরা ফেসবুকে একটা পেজ ও খুলেছে Mycology Bd নামে (https://www.facebook.com/mycologybd)।  আমি অনেক আগে থেকেই মাশরুম খেতে পছন্দ করি। সবার প্রথমে পিজ্জা খেতে গিয়ে আমি মাশরুমের সাথে পরিচিত হই। কারণ আমরা যখন স্কুল কলেজে পড়তাম তখনও বাংলাদেশে এই মাশরুমের এত নামডাক শুনেছি বলে তেমন মনে পড়ে না। যাই হোক, প্রথম যখন খেয়েছিলাম তখন থেকেই এটি আমার পছন্দের তালিকায় চলে এসেছে। এরপরে সিঙ্গাপুরে প্রবাস জীবনে যতবার মোস্তফা শপিং কমপ্লেক্স কিংবা ফেয়ার প্রাইস চেইন শপে গিয়েছি, মোটামুটি মাশরুম প্রায় সময়ই কিনেছি। মাশরুম কুচি কুচি করে কেটে আরো সবজির সাথে ডিম সহযোগে মিশিয়ে তৈরী ফ্রায়েড রাইস আমার অনেক প্রিয় একটা খাবার ছিল। এখনও পছন্দ করি। খুব স্বভাবতই জামিনুল আর তপুর পোষ্ট দেখে আমি আকৃষ্ট হলাম এবং ওদের কে বললাম, আমাকে মাশরুম দিও। ওরা জানালো, স্যার উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেছি, ফসল উঠার সাথে সাথে আমরা সবার প্রথমে আপনাকেই দিবো। শুনে অনেক আনন্দিত হলাম।

 

গতরাতে, জামিনুল আমাকে নিজে এসে আধা কেজি ওয়েস্টার মাশরুম দিয়ে গেল। একদম তরতাজা তুষার শুভ্র মাশরুম গুলোকে দেখতেও ভীষণ ভাল লাগছিল। দাম আমার কাছে যথেষ্ট উপযোগী মনে হয়েছে। প্রতি কেজি মাশরুম ৫০০/= টাকা করে। সবচেয়ে বড় কথা, ওদের কাছে ওর্ডার করলে ওরা একদম ফ্রেশ মাশরুম ডেলিভারি করার ব্যবস্থা করবে। আমার মত মাশরুম প্রিয়দের জন্য এটা একটা সুসংবাদতো বটেই! ভাবছি ওদের এই মাশরুমকে সটে করবো, আর নুডলসের সাথে মিশিয়ে খাবো!

 

জামিনুল আর তপুকে আমি অনেক সাধুবাদ জানাই ওদের এই সুন্দর উদ্যোগটার জন্য এবং করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের এই সময়টাকে সুন্দর ভাবে কাজে লাগানোর জন্য। ওরা দুজনই ফিজিক্সে অনার্স করছে ৩য় বর্ষে। এখন যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নেই, কাজেই ওরা ওদেরকে এমন সুন্দর সময়োপযোগী একটা কাজে নিমগ্ন রাখায় ওদের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করছি। ওদের কাজের প্রসার অনেক বেড়ে যাক এবং ওরা যেন অনেক বড় পরিসরে মাশরুম উৎপাদনে অগ্রনী ভূমিকা রাখতে পারে সেই দোয়া করছি।

 

মাশরুমের পুষ্টিগুন সম্পর্কে আপনাদের নতুন করে কিছু বলার নেই। আপনারা সবাই এ সম্পর্কে অবগত আছেন। মাশরুম সম্পর্কে আমার অনেক বেশী ভাললাগা কাজ করেছে যখন আমি এ সম্পর্কে আমাদের নবীজীর হাদিস জানতে পেরেছি বুখারী শরীফ থেকে। বুখারী শরীফের হাদিসে মাশরুম সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) এর উক্তি উল্লেখ আছে যে, “মাশরুম (আরবিতে কামাত) ‘মান্না’ জাতীয় খাবার এবং এর পানি চোখের অসুখের জন্য আরোগ্য স্বরূপ”। মান্না হলো সেই দুটি খাবারের একটি যা কোরআন শরীফে উল্লেখ আছে। ‘মান্না’ এবং ‘সালওয়া’ এই দুটি খাবার নবী মুসা (আঃ) এর গোত্র বনী ঈসরাইলের জন্য বরাদ্দ করা ছিল। হাদীস থেকে প্রতিয়মান হয় যে, বনী ঈসরাইলের জন্য বরাদ্দ মান্না খুব সম্ভবত মাশরুম জাতীয় কোন খাবারই ছিল। হাদীস থেকে এটাও প্রতীয়মান হয় যে, মাশরুম খাওয়া একটি সুন্নাতও বটে। মাশরুমের উপকারিতার প্রসার হলে এবং জামিনুল ও তপুর মত ছাত্র যুবকরা যদি মাশরুম চাষে আগ্রহী হয় তাহলে অল্প পুঁজিতে এটি সুন্দর একটি সহায়ক কর্মসংস্থানের উপায় হতে পারে বলে আমি মনে করি। জামিনুল ও তপুর সাথে সরাসরি যোগাযোগের জন্য ওদের মোবাইল ফোন নাম্বার নিচে উল্লেখ করে দিলাম-


জামিনুল-০১৯২১৮০৯০৮৪

তপু-০১৯০২৯০৪৬৬১

 

View shawon1982's Full Portfolio