অভিযোগ নামা
জনাব,
আমি নাহিদা আক্তার জন্মসুত্রে বাংলাদেশী (জন্ম সনদ নংঃ ১৯৮৫২৬৯২৫০৪২৮৫৭৭৫ ) বর্তমানে আমেরিকার নাগরিক। আমার প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পরে আমি বিগত ২৫শে অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখে সৌদি আরবে কর্মরত ‘মোঃ সোলেমান’ জন্ম সনদ নংঃ ১৯৭৫১২১০৪৩৬১০৪১৬৪ ) এর সাথে নিজের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে দ্বিতীয়বার বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হই বাংলাদেশে এসে। সোলেমানের সাথে আমার পরিচয় ‘ফেসবুক’ এর মাধ্যমে এবং পরে টেলিফোনে যোগাযোগ হয়। সোলেমানের সাথে আমার যোগসূত্র তৈরী হয় আমারিকা নিবাসী জনাব আশরাফ ভুঁইয়া, তদীয় স্ত্রী নাজমা জামান এবং তাদের কন্যা সুরাইয়া ভুঁইয়ার মাধ্যমে। সোলেমান তাদেরই আত্মীয়।
উল্লেখ থাকে যে, ‘সোলেমান’ এর পাসপোর্ট এ উল্লেখিত নাম ‘মোঃ জাকির হোসেন’। আমি নামের ভিন্নতা জিজ্ঞাসা করায় সে আমাকে জানায় সে ‘গলাকাটা পাসপোর্ট’ বা জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যকারো পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদি আরবে গমন করে। উল্লেখ থাকে যে সোলেমান বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াতে নিজের নাম ‘সালমান রানা’ উল্লেখ করে। গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আমি ওমরা করার উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে গমন করে তার সাথে পুনরায় দেখা করি। তখন থেকে তার কিছু কিছু আচরণ আমার কাছে সন্দেহজনক মনে হতে থাকে। সম্প্রতি আমি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রমাণ সহ নিম্নোল্লেখিত তথ্যগুলো ‘সোলেমান’ সম্পর্কে জানতে পারি-
১। সোলেমানের এর ‘প্রাক্তন’ প্রথমা স্ত্রী ‘মির্জা মনিরা’ তালাকপ্রাপ্তা নন এবং তারা এখনও বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ আছে। গত ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে আমার বাবার বাড়িতে অবস্থান কালেও ‘সোলেমান’ নিয়মিত আমাদের কাছে মিথ্যা কথা বলে বলে তার প্রথমা স্ত্রীর সাথে দেখা করতে থাকে।
২। সোলেমান আমাদের কাছে তার নিজের বয়সের অসত্য তথ্য উত্থাপন করে। তার আগের স্ত্রীর গর্ভজাত কন্যার কথা আমাদের কাছে উল্লেখ করে ১২ বছর বয়স, তার খালার কাছে থাকে, প্রথমা স্ত্রী অন্যত্র বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ। উল্লেখ থাকে যে, সব তথ্যই অসত্য এবং আমরা জানতে পেরেছি তার প্রথমা স্ত্রীর সাথে বিয়ে হয় ১৯৯৬ সালে, মেয়ে বর্তমানে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরতা ভিকারুন্নিসা নুন কলেজে। সোলেমানের সাথে মির্জা মনিরার আগেই একটি সন্তান ছিল যে অপরিণত বয়সে মারা যায়।
৩। সোলেমানের স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন বিবাহিত এবং অবিবাহিত মেয়ের সাথে নিয়মিত সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক রাখে এবং ২০২০ জানুয়ারী মাসে দেশে এসে আমার সাথে অবস্থান করা সত্ত্বেও তাদের কারো কারো সাথে দেখা সাক্ষাত অব্যহত রাখে।
৪। মির্জা মনিরা’র পরেও সোলেমান আরো একটি বিয়ে করে গ্রামে। এবং সেটার বিচ্ছেদ মির্জা মনিরার হস্তক্ষেপে হয়।
৫। সোলেমানের একাধিক মেয়ের সাথে প্রণয়ের সম্পর্কের কথা জানাজানির পরে, সোলেমান একটি অববাহিত মেয়েকে ফেসবুকে হুমকি দেয় তার ব্যক্তিগত ছবি সোশাল মিডিয়াতে ভাইরাল করে দেবে।
৬। সোলেমান আমাদের বিয়ের কাবিন নামায় দেনমোহর ধার্য করে ১৫ লাখ টাকা যার মধ্যে আমাকে কিছু মাত্র না দিয়েও সে ৭লাখ টাকা নগদ উসুল করে। উপরন্তু তার নিজের বিলাবহুল জীবনের এবং ঋণের কথা বলে বলে আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা নিতে থাকে যারসার্বিক পরিমাণ প্রায় ৮লক্ষ টাকা।
৭। সোলেমান আমার কাছ থেকে টাকা নেয়া সত্ত্বেও সোশাল মিডিয়াতে মানুষের কাছ থেকে বলে বেড়াতে থাকে, আমিই নাকি তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছি তাকে আমেরিকা নিয়ে যাবার জন্য যা সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।
৮। আমি আমার পাওনা টাকার কথা যখন সোলেমানের কাছে চেয়েছি তখন সে সোশাল মিডিয়াতে আমার নামে নানা রকম অপবাদ আরোপ করতে থাকে এমনকি আমার প্রাক্তন স্বামীর আত্মীয়-স্বজনের কাছেও। এরপরেও সে ক্ষান্ত হয়নি বরং সোশাল মিডিয়াতে আমাকে হুমকি দিয়েছে, আমাদের ব্যক্তিগত ভিডিও ভাইরাল করে দেবে।
৯। সোলেমান আদম ব্যবসার সাথে জড়িত এবং ফেসবুকে তার নামে প্রমাণ আছে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে তাদেরকে বিদেশে নিয়ে যাবে বলে।
১০। খিলগাঁও থানায় সোলেমানের নামে আগে থেকেই কেস আছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
এহেন পরিস্থিতিতে আমি প্রচন্ড মানসিক দুশ্চিন্তায় আছি। জনাবের নিকট আমার সনির্বন্ধ আবেদন, আমার অভিযোগগুলো জেনারেল ডায়রী করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করে বাঁধিত করবেন।
বিনীত নিবেদক,
নাহিদা আক্তার