মনের সাথে সাথে এবার মনে হয় আবার শরীর খারাপ হতে শুরু করেছে। আজ সকাল থেকে দেখছি। কোন কিছুতে মন বসাতে পারছি না। মনে একটা কেমন যেন গুমোট ভাব। ঘরে থাকতে পছন্দ করতাম আমি সবসময় কিন্তু এইভাবে ঘরে থাকা কেমন যেন মনের উপরে একটা চাপ ফেলছে। মনে হচ্ছে আমি যেন কোথা থেকে কোথায় চলে যাচ্ছি। নেট এ মুভি দেখার চেষ্টা করছি, লাভ হচ্ছে না। কি দেখবো না দেখবো সেটাই ঠিক করে উঠতে পারছি না। মন বসাতে পারছি না কিছুতেই। বই পড়ার চেষ্টা করছি, সেখানেও একই অবস্থা। সবকিছু কেমন যেন অপরিচিত অপরিচিত লাগছে। এমন কেন হচ্ছে? আজকেই এমন বেশী বোধ করছি। বসতে ভাল লাগছে না, শুইতে ভাল লাগছে না। শারীরিক অসুস্থতার জন্য গত ৫-৬ দিন থেকে বাচ্চাগুলার কাছেও যাচ্ছি না। ওদের কে দূর থেকে দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। পুরা শহর কেমন যেন মরুভূমির মত লাগছে। শহরের নিস্তব্ধতা মনতেও ঘিরে নিয়েছে। আমি তো মোটামুটি ভালই খাদক শ্রেণীর একজন মানুষ, কিন্তু আজকে দুপুরে, খেতেও ইচ্ছে করছে না। সবকিছুতেই অবসাদ লাগছে। মনকে কিভাবে ব্যস্ত রাখবো বুঝতে পারছি না।
আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। কে না জানে? এমন নিষ্প্রাণ স্বাধীনতা দিবস বাংলাদেশে ইতিপূর্বে পালিত হয় নাই! আর সামনে হবে কি না জানি না, চাইও না এমন নিষ্প্রাণ অবস্থা। এমন অবস্থা বিশ্বে আর কখনই না আসুক। সবাই ভাল থাকুক, সবার ভেতর থেকেই এই অনিশ্চিত দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাক। কিচ্ছু ভাল লাগছে না, কিচ্ছু না! আমার মন ভাল নেই! আমি ভাল নেই। আমার শহর ভাল নেই। আমার দেশ ভাল নেই! সমস্ত যায়গা থেকে নিষ্ঠুরতা বন্ধ হোক!
আমরা এতকাল প্রকৃতির সাথে যে নিষ্ঠুর আচরণ করেছি, সেগুলো বন্ধ হোক। বন্ধ হোক প্রাণীকুলের উপরে সমস্ত নির্যাতন। কোন প্রাণীর প্রাণ সংহার করা মানেই তাকে নিষ্ঠুর ভাবে মারা নয়। মানুষের অদম্য লোভ আর লালসার বলি হতে হচ্ছে প্রাণীকূলকে। আমরা কেন ভুলে যাই, ওদেরও প্রাণ আছে। সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি ওরাও। ওদেরও কষ্ট হয়, ওদেরও ব্যথা লাগে। মানুষ হয়েও যদি আমাদের এই উপলব্ধি না থাকে, তাহলে আসলে আমাদেরও বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই। রাসূলের অনিন্দ্যসুন্দর বাণীতে উল্লেখ আছে, ‘সমস্ত সৃষ্টিই আল্লাহর পরিবার ভুক্ত’। অন্য এক হাদীসে উল্লেখ আছে, ‘তুমি যদি জমিনবাসীদের উপর দয়া কর, তাহলে আল্লাহও তোমাদের উপরে দয়া করবেন’। আর এক হাদীসে উল্লেখ আছে, ‘যে দয়া করে না, তার উপরও দয়া করা হয় না’। আমাদে সবার সুমতি হোক। আমরা সবাই মানুষ হয়ে উঠি।