আজ কোন দুঃখ আর দুশ্চিন্তার কথা লিখতে ইচ্ছা করছে না। আজ একটু হাসি তামাশা হোক। জীবনে বেঁচে থাকার অন্যতম উপকরণ একটু আনন্দ। আমার আজকের লেখাটা উৎসর্গ করছি, Pencil-heel কে। অতি ছোটবেলায় মেয়েদের এই জুতার প্রতি আমার এতটাই ভালবাসা কাজ করতো যে, আমাদের বাসায় কেউ পেন্সিল-হিল পায়ে দিয়ে আসলে সে পা থেকে জুতা খোলা মাত্রই আমি সেটাকে পায়ে দিয়ে সারা বাসা ঘুরে বেড়াতাম। পেন্সিল হিল পরা ছবিও মনে হয় আছে আমাদের অ্যালবাম এ। এটা নিয়ে বকাঝকা, হাসি ঠাট্টা করেও কোন লাভ হয় নাই। পরে শুধু বলতো, দেখো পড়ে যেও না আবার, পড়ে গেলে পা ভেঙ্গে যাবে। আমার ছোটখালার অনেকগুলো হিলজুতা-স্যান্ডেল ছিল। আর যেহেতু আমরা একসাথেই থাকতাম সেহেতু উনার হিল গুলা নিয়ে আমি পরে ঘরদিয়ে হাঁটাহাটি করতাম, ঠকাস ঠকাস শব্দ করে!
বড় হবার পরেও অনেকবার আফসোস হয়েছিল, আহা, ছেলেদের এমন হিল জুতা নেই কেন? থাকলে তার বহুবিধ কালেকশন আমার কাছে থাকতো সেটা নিশ্চিত। সিঙ্গাপুরে গিয়ে দেখলাম ওখানকার মেয়েরা মূলত হিলজুতাই বেশী পরে। আমার স্ত্রী যখন প্রথম গেল, ওর জন্য আমি আগেই একজোড়া কিনে রেখেছিলাম। কি আর করা! নিজে যখন পরতে পারছি না, তখন আর কি, ওকে দিয়ে পরাতাম! ও থাকাকালীন সময়েও ওকে আরো কয়েকজোড়া কিনে দিয়েছিলাম। মাঝে মাঝে ব্র্যান্ড এর দোকানগুলোতে ভাল ভাল ডিসকাউন্ট অফার থাকতো।
সৌদিআরবে যখন ছিলাম, তখন করেছিলাম এক ভয়ঙ্কর কাজ। একবার আব্বু আম্মুর সাথে এক মার্কেটে যাব ঘুরতে আর উনারা বাজার করবেন সেজন্য। উনারা খেয়াল করেননি, আমিও উনাদের নজর এড়ায়ে, আমার বড়ো খালার একজোড়া হিল জুতা পরে বের হয়ে আসলাম। কি ভয়ঙ্কর বেপার! কিছুক্ষণ পর দেখি আর পারি না! পা ব্যথা করছে! এত হাটার অভ্যাস তো নেই? আব্বু কে বলা মাত্র, উনি ভীষণ অবাক হয়ে দেখলেন আমার অবস্থা! অগত্যা, এভাবে তো হাঁটা যায় না। আমাকে গাড়ীতে রেখে আসলেন। বললেন, তুমি ঘুমাও, আমরা বাজার শেষ করে চলে আসছি। আমি পেছনের সীটে বসে অপেক্ষা করতে করতে ঘুমায়ে গেলাম। ওইদিনের পর থেকে আমার যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছিল। সেদিনের পর থেকে আমি আর কোনদিন কারো হিলজুতা পায়ে দেইনি, সেটা হলফ করে বলতে পারি।