নয়//
নতুন করে আর কোন কষ্ট জমা হয় না
পাথরের ভাঙন কি রোধ করা যায়? যায় না
ক্রমাগত বলিদান দিয়ে আমিও যে অভঙ্গুর পাথুরে সমতল
আঙ্গুলের চাপে ঝুরোঝুরো হয়ে যায় নিত্যদিনের অঞ্জলি
আমার বাগানের ফুলগুলো কোন দেবতাই নেয় না
আর আমার আকুতি গুলো তাদের পাদদেশে ঠাই পায় না
তবে কার জন্য এই আত্মত্যাগ?
তীব্র তিতিক্ষার বন্দনা?
আমার সম্বল স্বপ্ন গুলো পদদলিত করে যে সুখ পেয়েছিলে
যদি চাও আরো দেব-
স্বপ্ন বুনে বুনে দেব, ছিঁড়ে ফেলো
কবিতাগুলো পুড়িয়ে ফেলো আগুনে-
ছাইগুলো এমনিতেই বাতাসে উড়ে যাবে
না পাওয়ার কষ্ট ওদের তো আর পোহাতে হবে না
শুধু তুমি ভালো থেক আরাধ্য সুখটুকু গায়ে জড়িয়ে ।
ঝড় থেমে গিয়েছিলো আগেই জানালার ওপাশে
আমার মনে স্বপ্নেরা দিয়েছে আত্মাহুতি-
নদীর নাব্যতা বেড়ে গেছে সেই কবে থেকেই
থামেনি শুধু আমার দু’চোখের আনত আকুতি।
মৃদু ভীরু পায়ে সরে এসেছি পরিচিত চৌহদ্দি ছেড়ে
কায়মনোবাক্যে চেয়েছি সরে যেতে যবার আড়ালে নীরবে নিভৃতে
করতে চেয়েছি একান্ত একটু অপেক্ষা-
আর যে কিছু নেই- এক যাযাবরের প্রস্থান মাত্র
এইটুকুই চাই ইশ্বর এইটুকুই- শুধু এইটুকুই!
যখন কিছু করার থাকে না, একরাশ জল ঢেলে দেই আগুনে
আগুন নিভে যায়- তবু যেন শেষ হয় না দহন জ্বালা
একটা ছোট্ট কয়লা নিয়েছিলাম হাতের উপর
যদি আবার কখনো মনে ছন্দ আসে
সাথে সাথে লিখে নেব ওটা দিয়ে অদৃশ্য মনের দেয়ালে
নিজের জন্য একগোছা সান্ত্বনা বাণী!
ঘড়ির অবিরাম শব্দ কাঁপন ধরালো বুকে
থামিয়ে দিলাম ওটাকে চিরতরে
আমার তো ঘড়ি লাগে না, আমি যে ভবঘুরে-
অতৃপ্ত এক স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়া দিক হারানো নাবিক আমি
জাত পাত কুল সম্ভ্রম বিলীন করে দেয়া এক অচেনা কলেবর
সহস্র বছর নিজেকে আড়াল করে রাখা এক মূর্তিমান অভিমান
না বলা কথার পুষ্পাঞ্জলিতে ঢেকে যাওয়া এক প্রাচীন সমাধি
সব হারানোর শোকে বিমূঢ় হয়ে নিজেই পাথর হয়ে যাওয়া এক শব
নিজের হাতে লেখা কবিতা গুলো এক এক করে পুড়িয়ে ফেলা কবি
দেবতার চরণে ঠাই না পাওয়া এক হতভাগার আকুতির প্রতিধ্বনি
পাহাড় থেকে পাহাড়ে ব্যর্থ মনোরথে উড়তে থাকা এক বিহঙ্গের কাতরতা
সমূদ্রের পানিতে ভেসে আসা ছোট ছোট শামুকের পাথরে জমা ফসিল
একটি রুগ্ন ভিখারী শিশুর জীবনের উল্টো পথে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা
মৃত মায়ের পাশে বসে থাকা দুটি ভেড়া শাবকের অক্ষম অভিশাপ
রাস্তার পীচের মত কালো রঙের, পাথুরে সমতলের স্বপ্ন দেখার পাপ