প্রিয় নবনীতা,
আজ সকাল থেকেই আকাশটা ঘন অন্ধকারে ছেয়ে আছে। দিনের বেলাতেই মনে হচ্ছে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। ঘুম থেকে উঠে যে একটু আলসেমি করে শুয়ে থাকবো সেই সুযোগ নেই। আমাদের নাগরিক জীবনে কাজটাই মূখ্য। কালো মেঘ কিংবা ঝিরঝির বৃষ্টি নিয়ে রোমান্টিকতার সুযোগ নেই যে! তবুও মন তো মানে না। বৃষ্টি শুরু হলেই মনে হয় আয়োজন করে বৃষ্টি দেখি। আমার খুব ভালো লাগে বারান্দায় বসে ঝুম বৃষ্টি দেখা। এলোমেলো বাতাসের সাথে তাল দিয়ে পানির ছাঁট গায়ে এসে লাগবে। সেই সাথে যদি হাতে থাকে বড় এক মগ কফি! একটু চিন্তা করে দেখতো, কি দারুন মজাটাই না লাগে। মনে তখন মনে হয় যেন বৃষ্টির পানির সাথে আমার সব দুশ্চিন্তা গুলো ধুয়ে মুছে যাক। আর যেন কোন চিন্তা ভাবনা নেই। বৃষ্টি যখন পড়ে তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে ইচ্ছে করে না। তখন সব কিছুকেই অনেক বেশি বর্তমান বলে মনে হয়।
মাত্র কয়েক মিনিটের বৃষ্টিতেই আমাদের রাস্তাগুলোকে মনে হয় নদী। এতো পানি জমে যায় যে রাস্তা পুরোটাই ডুবে যায়। রীতিমত স্রোত বইতে থাকে। অনেক গাড়ি অকেজো হয়ে যায়। বাচ্চাদের কেউ কেউ এই পানিতেই নেমে দাপাদাপি করতে থাকে। জলাবদ্ধতা এখন আমাদের নিত্যকার দৃশ্য। কতবার এমন হয়েছ, ওই পানির ভেতর দিয়ে হাটতে হয়েছে। মাথায় অন্য কোন চিন্তা না থাকলে অবশ্য ব্যাপারটা মন্দ না।মাথার উপরে মুষলধারে বৃষ্টি আর পা ছুঁয়ে যাচ্ছে পানির স্রোত। আমার খুব ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে একদিন ঝুম বৃষ্টিতে ভিজি। শেষবার যে কবে ভিজেছি বৃষ্টিতে আমার মনে পড়ে না। বৃষ্টি হলেই তোমার কথা খুব বেশী করে মনে পড়ে। তোমার দুই হাতে আমার হাত, আর চোখের দৃষ্টি বার বার ঘোলাটে হয়ে যাওয়া বৃষ্টির পানিতে!
আজ জিজ্ঞাসা করা হয় নি, কেমন আছ তুমি? আশাকরি বৃষ্টিধারার মতই ভালো আছো। তুমি সবসময় আমার কাছে বৃষ্টি হয়েই থাকো। ঝরতে থাকো অঝোর ধারায় আমার তৃষিত মরুতপ্ত মনের উপরে। তুমি অনেক ভালো থেকো। আজ তুমি নবনীতা না; আজ তুমি শুধুই আমার বৃষ্টি।
ইতি,
তোমারই আমি